ওয়ালতার আলারকোন নামে এক ওঝা বলে রেখেছিলেন, ‘তন্ত্রের মাধ্যমে নেইমারের মনকে মেঘাচ্ছন্ন করাই আমাদের উদ্দেশ্য, যাতে সে যা চায়, সেটা করতে না পারে। ওর লক্ষ্য হলো গোল করা।’
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২০২৬ এর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পেরু-ব্রাজিল ম্যাচটা যদি আজ বাংলাদেশ সময় সকাল আটটায় দেখে থাকেন তাহলে ১০০% ভাগ নিশ্চিত হবেন যে পেরুর ওঝারা সফল। আর তার কারণটাও নিশ্চয়ই জানেন! সেটা হলো ওঝাদের তুকতাক কাজে লেগেছে অর্থাৎ নেইমার গোল করতে পারেনি, তার মাথাটা মেঘাচ্ছন্ন ছিল

ওঝারা শুধু নেইমারই নয় তুকতাক করে সব ফরোয়ার্ড এর পা ও বেধে রেখেছিল। শেষ পর্যন্ত ৯০ মিনিটে ডিফেন্ডার মারকিনিউইসের গোলে ব্রাজিল ১-০ গোলে জয় লাভ করে। এই ডিফেন্ডার যদি গোল করতে না পারতো তাহলে বোধ হয় ব্রাজিলের গোল কিপার এসে গোল করতো

তবে পেরুর ওঝারা যে কামেল ব্যাক্তি তা আমি অনেক আগে থেকেই জানি। আমি সব সময় নাটক সিনেমা সিরিয়াল দেখার চেয়ে খবর দেখতেই পছন্দ করতাম ও করি। বিশেষ করে বিবিসি সিএন এনের। যাই হোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪২ তম প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন যার আবেদন ছিল সর্বত্র। সেই ক্লিনটন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এক জুনিয়র ইন্টার্ন মনিকা লিউনিস্কির সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরেন। বিরোধীরা তক্কে তক্কে ছিল, কারণ তার এত জনপ্রিয়তা ছিল অসহ্য। বিচার বসলো সিনেটে ১৯৯৯ সালের ৭ই জানুয়ারি।
সিনেটে দুই পক্ষের নানা রকম তর্ক বিতর্ক চলছে, এর মাঝে সিএনএনের একটা নিউজ আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো প্রবলভাবে। সেটা ছিল সেই পেরুর ওঝা। আমি বিস্ময়ের সাথে দেখলাম অদ্ভুত পোশাক পরা চার পাচজন আদিবাসী এক ঝর্নার পাশে দাঁড়ানো। সেখানে একটি মাঝারি সাইজের পাথরের উপর ফুল মালা আর ধুপ ধুনো দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে ফ্রেমে বাধানো বিল ক্লিনটনের হাস্যোজ্জ্বল এক আবক্ষ ছবি। তারপর দেখলাম তারা কিছুক্ষণ পর পর সেই ছবিটাকে দুই তিন জন মিলে হাতে নিয়ে হুলু হুলু করে জোরে জোরে মন্ত্র পরছে আর ছবিটাকে ঝর্নার পানিতে চুবাচ্ছে আর উঠাচ্ছে। আবার পাথরের উপর রেখে মন্ত্র পড়ছে।
আপনারা হয়তো ভালো করেই জানেন সেই ইমপীচমেন্টে বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও উনি নি:শর্ত মুক্তি লাভ করেন। আর তার প্রধান কারনই ছিল সেই পেরুর আদিবাসী ওঝাদের তুকতাক, সিনেটে রিপাবলিকানদের তাবড় তাবড় উকিলরা থেকেও তারা প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের বিরুদ্ধে কিচ্ছুই করতে পারে নাই।

এই দুটো ঘটনার পর থেকেই পেরুর ওঝাদের ক্ষমতার উপর আমার ভীষণ ভক্তি

ছবি নেট আর তথ্য প্রথম আলো।