somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(রাসূল(ছাঃ) এর মেরাজের ঘটনা (পর্ব-২)

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
দ্বিতীয় পর্ব থেকে শুরু।


মানবজাতিকে একটি জিনিস পরিষ্কার করে দেওয়া ভালো- কেউ হয়তো ভাবতে পারে- আদম (আঃ) কেনো নিচের আসমানে, মুসা (আঃ) কেনো তার উপরে, আবার ঈশা (আঃ) এর উপরে কেনে ইদ্রীস (আঃ) বা হারুন (আঃ) অথবা ইউসুফ (আঃ) আল্লাহ তায়ালা কিন্তু কখনো কাউকে উচু নিচু ভাবেন না। তিনি সকলকে একই রকম ভাবেন। তিনি শুধু মাত্র রাসূল(ছাঃ) এর কষ্টের দিনগুলো পার করা জন্য আল্লাহ তায়ালা তাকে এই বিষয় থেকে শিক্ষা দেন। তিনি এমন এমন নবীদের সাথে সাক্ষাত করান তাদের জীবনের কঠিন কঠিন পরিক্ষার দিয়েছিলেন আর সেই নবীদের জীবন থেকে তিনি অনুপ্রেরণা পেলেন।

আদম(আঃ) একদিন বেহেস্তে ছিলেন তারপর তার একটা ভুলের কারণে সেখান থেকে আল্লাহ তায়ালার হুকমে বেহেস্ত থেকে বের করে দেন। তারপর আবারও তিনি বেহেস্তে যাবেন। তার জীবনে এটাও একটা কষ্টের দিন ছিলো। এরপর ইউসুফ(আঃ) তার ভাইয়েরা মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। ইয়াহিয়া(আঃ) ঈশা(আঃ) এদের নিজেদের মানুষেরাই তাদের হত্যা করতে চেয়েছিলো। এর থেকে তিনি বুঝলেন মানুষের জীবনে যতই কষ্ট আসুক না কেনো আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় বান্দারকে এই ভাবেই শিক্ষা দিয়ে থাকেন। রাসূল(ছঃ) এর যখন মক্কা ছাড়তে হলো তখন তিনি মদিনায় থেকে ইসলাম প্রচার করলেন। তিনি যখন বিজয় হলেন তখন তার সাথে যারা বিরোধিতা করেছিলো তাদেরকে বললেন- যা আরো বহুযুগ আগে হযরত ইউসুফ(আঃ) তার ভাইদের বলেছিলো তখন তার ভাইয়েরা তার কাছে ক্ষমা চেয়ে; বলেছিলো আমরা ইসলাম পালন করবো তখন হযরত ইউসুফ(আঃ) তাদের বলেছিলো তোমাদের উপর আর কোন পাপ নাই। সেই একই কথা রাসূল(ছাঃ) ও মক্কাবাসীদের বললেন।

অতঃপর রাসূল(ছাঃ) সকল নবীদের সাথে সাক্ষাৎকারের শেষে এক পর্যায় হযরত মুসা(আঃ), হযরত ঈশা(আঃ) এবং হযরত ইব্রাহিম(আঃ) এদের সাথে কিয়ামত বিষয়ে আলাপ করেন এবং জানতে চান কিয়ামত দিবস কবে হবে। হযরত ইব্রাহিম(আঃ) বললেন কিয়াতম দিবস কবে হবে এই ব্যপারে কিছুই জানিনা। হযরত মুসা(আঃ) ও একই উত্তর দিলেন। কিন্তু ঈশা(আঃ) বললেন কিয়ামত দিবস কবে হবে সেটা আমি জানিনা; তবে কিয়ামত দিবসের একটি চিহৃ আমি দিতো পারবো সেটা হলো- আমি আবারও পৃথিবীতে ফিরে আসবে এবং দজ্জালও আসবে। আমি দজ্জালকে হত্যা করবো। এরপর ইয়াজুজ ও মাজুজ আসবে। আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করবো তারা যেনো ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর ওরা ধ্বংস হয়ে যাবে। এই ঘটনার পর খুব শিঘ্রই কিয়ামত আসবে।

এরপর রাসূল(ছাঃ) হযরত ইব্রাহিম(আঃ) এর সাথে অন্য প্রসঙ্গে কথা বললেন। হযরত ইব্রাহিম(আঃ) কথার এক পর্যায় রাসূল(ছাঃ) কে বললেন তুমি তোমার উম্মতদের কাছে আমার সালাম পৌছিয়ে দিও। জান্নাতের মাটি হলো উর্বর এখানে কোন গাছ-পালা নেই। তবে এতো বীজ রোপন করার একটা পদ্ধতি আছে। তা হলো, “ছুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার” অর্থাৎ যখন আল্লাহ তায়ালার বান্দারা এই দোয়া পড়ে জিকির করে তখনি জান্নাতের বাগানের তাদের জন্য একটি গাছ রোপন হয়ে যায়।


রাসূল(ছাঃ) এর সাথে দেখা করতে আসেন জাহান্নামের মূল দ্বার রক্ষি ফেরেস্তা মালিক। মালিক রাসূল(ছাঃ) কে সালাম দিলেন। তখন মালিক এর মুখ ও চেহেরা ছিলো গম্ভির। রাসূল(ছাঃ) জিবরাঈল(আঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন ওর মুখ এতো গম্ভির দেখাচ্ছে কেনো? জিবরাঈল(আঃ) বললেন- মালিক জন্মের পর থেকেই কখনো হাসেনি, কখনো খুশি ভাব দেখাইনি। কারণ তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে জাহান্নামের মূল দ্বার রক্ষি হিসেবে। যদিও মালিক হলো আল্লাহ তায়ালার পবিত্র ফেরেস্তা।

এরপর রাসূল(ছাঃ) কে নিয়ে গেলেন আল্লাহর এক আর্শ্চয্য সৃষ্টিকে নিকট, যার নাম সিদরাতুল মুনতাহা। ইমামে নববী বলেন সিদরাতুল মুনতাহার শিকর ষষ্ঠ আসমান থেকে শুরু করে আর তা সপ্তম আকাশের শেষ প্রন্তে ছড়িয়ে আছে। এই সিদরাতুল মুনতাহায় হলো সেই গাছ যার নিকট এর আগে কোন সৃষ্টি পাড়ি দেয়নি। রাসূল(ছাঃ) এই গাছটির বর্ণাণয় বললেন- এর রং এমন যা আগে আমি কখনো দেখিনি। অর্থাৎ আমরা পৃথিবীতে যত রং দেখি তা কিন্তু রং ধনুর সাত রং থেকে দেখিছি। কিন্তু সিদরাতুল মুনতাহার রং একেবারেই নতুন রঙ্গে রাঙ্গানো। এর রং এতো সুন্দর যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এর রং সারাক্ষণ পরিবর্তন হতে থাকে। এটি ঘিরে ছিলো নানা বস্তু যার মধ্যে ছিলো ছোট ছোট অগতিন সোনালী রংয়ের প্রজাপতি।

আব্দুল্লা ইবনে মাসুদ(রাঃ) থেকে বনির্ত হাদিসে এসেছে রাসূল(ছাঃ) বলেছেন- দুনিয়া থেকে যা কিছু আসমানে যায় তা সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে যায়। আর আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে যে গুলো দুনিয়াতে আসে সেগুলোও সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে আসে। এই সিদরাতুল মুনতাহার নিচ দিয়ে বয়ে গেছে চারটি নহর বা নদী। যা দুনিয়াতে আছে দু'টি আর আখিরাতে আছে দু’টি। দুনিয়াতে যে দু’টি নদী তা হলো- একটি নীল নদ অন্যটি ফুরাত নদ। এই দু’টি নদ সিদরাতুল মুনতাহা থেকে কি ভাবে সম্পর্কিত তা আমাদের জানা নাই। তবে মানব ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় যে- সব থেকে প্রাচীন জাতিগুলো এই দুটো নদী ঘিরেই গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। আর যে দুটি নদী আখিরাতে জান্নাতে রয়েছে সেই দুটো নদীর একটি হলো হাইজে কাওসার অন্যটি হলো ছালযাবির। এই হাইজে কাওসার থেকে আমাদের ইমানে নববী তার উম্মতদের পানি পান করাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:০৭
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×