somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিইসি আজিজ মিথ্যে বলছেন

১০ ই নভেম্বর, ২০০৬ সকাল ৭:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) যদি মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে কী হতে পারে? বিশেষ করে লে. জেনারেল (অব.) হাসান মশহুদ চৌধুরীর একটি বক্তব্য সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পর বুধবার দিনভর অনেকেই এ প্রশ্নের জবাব খুঁজেছেন। সিইসি মিথ্যা কথা বললে তাকে সংবিধান সম্মত উপায়েই অপসারণ করা যায়। তবে তার জন্য রাষ্ট্রপতিকে সংবিধানের 96(5)(খ) অনুযায়ী ব্যবস্থ্থা নিতে হবে। কেউ উদ্যোগ নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ তুলে আবেদন করলে সেেেত্র তিনি ইচ্ছা করলে এব্যবস্থা নিতে পারেন। হাসান মশহুদ চৌধুরী মঙ্গলবার বিবিসিসহ এ দেশের সংবাদপত্র ও প্রচার মাধ্যমকে বলেন, তিনি নিজে সিইসির সঙ্গে সাাৎ করে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন। সিইসি বিচারপতি এমএ আজিজ পদত্যাগের ব্যাপারে উপদেষ্টাদের অনুরোধের কথা অস্ব্বীকার করে আগের রাতেই সাংবাদিকদের বলেন, তাদের সঙ্গে কোনো কথা হয়নি। তাদের প থেকে কোনো অনুরোধ আসেনি। এমনকি কেউ তাকে ফোন করেনি, কেউ দেখাও করেনি।
এর প্রোপট হচ্ছে, সিইসি পদত্যাগ না করলে তাকে অপসারণের কোনো উপায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিশেষ করে 14 দলসহ বিভিন্ন দল এবং নাগরিক সংগঠন অবাধ ও নিরপে নির্বাচনের স্ব্বার্থে নির্বাচন কমিশনের সংস্কারকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রোপটে। এ নিয়ে 14 দলের আলটিমেটাম একটি অনিশ্চিত পরিস্থি্থতির সম্মুখীন করায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই উপদেষ্টা গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার রাতে সিইসির বাসভবনে উপস্থি্থত হয়ে তার সঙ্গে সাাৎ করেন এবং তাকে পদত্যাগ করার অনুরোধ জানান বলে বিভিন্ন দৈনিকে খবর প্রকাশ পায়। পরে সিইসি বিচারপতি এমএ আজিজ সাংবাদিকদের বলেন, তাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কেউ এ ধরনের কোনো প্রস্তাব দেননি। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা হাসান মশহুদ চৌধহৃরী নিজেই সাংবাদিকদের প্রশেম্নর মুখে প্রচার মাধ্যমকে বলেন, তিনি সিইসির সঙ্গে সাাৎ করে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। স্ব্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সিইসি বিচারপতি এমএ আজিজ অথবা উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) হাসান মশহুদ চৌধুরীর মধ্যে যে কোনো একজন মিথ্যাচার করেছেন। মিথ্যাচারটি কে করেছেন, তা তদন্তসাপে। উপদেষ্টার েেত্র বিষয়টি তদন্তের সুযোগ ও গুরুত্ব্ব নেই বললেই চলে। তবে সিইসির েেত্র সাংবিধানিকভাবেই এর সুযোগ রয়েছে। রয়েছে এর জাতীয় গুরুত্ব্ব। বিচারপতি এমএ আজিজকে স্ব্বপদে বহাল রাখতে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলেরই প্রবল আপত্তি রয়েছে, যদিও সরকার থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া চারদলীয় জোট এর ঘোরতর বিপ।ে তারা সিইসি আজিজকে রাখার প্রশ্নে এতটাই মরিয়া যে, তার সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের বলেছেন, বিচারপতি আজিজের অধীনেই নির্বাচন হবে। কেউ যদি সেই নির্বাচনে না আসে, তাহলে কিছু করার নেই। এই প্রোপটে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে চান, সেেেত্র সিইসিসহ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সংস্কার অপরিহার্য। আর এজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি এমএ আজিজ নিজে পদত্যাগ না করলে এই সংস্কার করা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য অসম্ভ্ভব। এ পর্যায়ে বিচারপতি এমএ আজিজ যদি মিথ্যাচার করে থাকেন, তারগুরুত্ব অপরিসীম বলে অনেকেই মনে করছেন। এর গুরুত্ব্ব সম্পর্কে অনুসন্ধানকালে দেখা গেছে, সত্য গোপন করে এভাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মিথ্যার আশ্রয় নেওয়াকে যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তাহলে তার অধীনে নির্বাচন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ে। ভোটার তালিকা নিয়ে অনিয়মের যে কোনো ঘটনা, নির্বাচনে অনিয়ম, ভোট কারচুপি এমনকি আগামী নির্বাচনে দেশের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে যে কোনো মিথ্যাচার করা তার প েঅসম্ভ্ভব নয় বলে অনেকেই মনে করেন। তাদের আশঙ্কা, এ ধরনের পরিস্থি্থতিতে দেশে ভয়ানক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। আর এ থেকে পরিত্রাণের পথ হিসেবেই বিচারপতি এম এ আজিজকে অপসারণ করা অপরিহার্য। এই অপসারণের ত্রে বিচারপতি আজিজ নিজেই প্রস্তুত করেছেন বলে আইনজীবীদের অনেকে মনে করেন। সংবিধানের 118(5)-এর শর্তাংশ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারককে যেভাবে যে কারণে অপসারণ করা যায়, সেই একই পদ্ধতি ও কারণে নির্বাচন কমিশনারদেরও অপসারণ করা যায়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ করার সাংবিধানিক ব্যবস্থ্থা হচ্ছে শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে, দায়িত্ব পালনে অসামর্থ্য হলে কিংবা গুরুতর অসদাচরণের জন্য দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট বিচারপতিকে অপসারণ করা যায়। সংবিধানের এ সংক্রান্ত বিধান 96(5) অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে কোনো সুত্র থেকে তথ্য পেয়ে প্রথমে উপলব্ধি করতে হবে যে, সংশ্লিষ্ট বিচারপতি গুরুতর অসদাচরণের জন্য দোষী হতে পারেন কি-না। তিনি যদি এ ব্যাপারে সন্তুষ্ট হন, তাহলে তিনি 96(5)(খ) অনুযায়ী বিষয়টি তদন্ত করতে এবং তদন্তের ফলাফল জানানোর জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশ দিতে পারেন। এই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠিত হয় প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারপতির মধ্যে কর্মে প্রবীণ দুই বিচারপতিকে নিয়ে। আইনজীবীরা বলছেন, সিইসির বক্তব্য মিথ্যা হয়ে থাকলে এবং রাষ্ট্রপতি তা গুরুতর অসদাচরণ বলে বিবেচনা করলে অবশ্যই তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠাতে পারেন। তবে এর জন্য কাউকে না কাউকে রাষ্ট্রপতির কাছে অভিযোগ তুলতে হবে। এই অভিযোগ হতে হবে লিখিত আকারে। সেেেত্র মিথ্যাচার অসদাচরণের সংজ্ঞায় বিবেচনার দাবি রাখে কি-না তিনি বিবেচনা করতে পারেন।
এ পর্যায়ে মিথ্যাচারকে অসদাচরণ হিসেবে বিবেচনার সুযোগ আছে কি-না পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বাংলা একাডেমীর অভিধান অনুযায়ী মিথ্যাচার অন্যতম অসৎ আচরণ। আবার অঙ্ফোর্ড এবং ব্লাকস ল' ডিকশনারি অনুযায়ী মিথ্যা বিবৃতি বা বক্তব্য অসদাচরণ। কেউ যদি সততার সঙ্গে দায়িত্ব্ব পালনের শপথ নিয়ে মিথ্যাচার করেন, সেেেত্র তা গুরুতর অসদাচরণ বলেই বিবেচিত হয়। সিইসির েেত্র মিথ্যাচার প্রমাণিত হলে তা অসদাচরণ বলে বিবেচনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ একটি দৈনিককে বলেন, বর্তমান প্রোপটে এ ধরনের মিথ্যাচার অবশ্যই অসদাচরণ।
এই বিবেচনায় সিইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হলে তাকে অপসারণের পথ সৃষ্টি হতে পারে। সেেেত্র অবশ্যই অসদাচরণ তথা মিথ্যাচারটি প্রমাণিত হতে হবে। বিচার বিভাগীয় তদন্তে অভিজ্ঞ একজন বিচারপতি সমকালকে বলেন, এেেত্র রাষ্ট্রপতি বিষয়টি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে তদন্তের জন্য পাঠালে এবং তারা বিষয়টিকে জরুরি বিষয় হিসেবে গুরুত্ব্ব দিলে এক সপ্তাহের মধ্যেই তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভ্ভব। তিনি এই তদন্তের পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, বিচারপতি এমএ আজিজ যেসব সাংবাদিকের কাছে বিষয়টি অস্ব্বীকার করেছেন, তাদের কয়েকজনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা এবং তাকে বহনকারী গাড়ির চালক, তার নিরাপত্তার জন্য নিযুক্ত সরকারি কর্মচারী, বিচারপতি এমএ আজিজ ও তার বাড়িতে কর্তব্যরত প্রহরীদের সা্য গ্রহণের মাধ্যমে এই তদন্ত সম্পন্ন হতে পারে। তদন্তে বিচারপতি এমএ আজিজ মিথ্যা কথা বলেছেন বলে প্রমাণিত হলে তার পদ ও দায়িত্ব্বের পরিপ্রেেিত বিষয়টিকে গুরুতর অসদাচরণ বিবেচনা করে রাষ্ট্রপতি তাকে অপসারণ করে আদেশ জারি করতে পারবেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×