somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কানাডা ডায়েরী ২

০৯ ই মে, ২০২০ রাত ২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উল্লেখ্য এই লেখাটা লেখা হয়েছিল, জানুয়ারী ২০১৯ এ। আজকে হঠাৎ দেখি কোন একটা কারনে পোস্ট করা হয়নি। এখন সমস্ত পৃথিবী কোভিড-১৯ এর জন্য বদলে গেছে। তাই লেখাটা পড়ার সময় একটু বিদঘুটে মনে হবে। তাও দিলাম পাবলিশ করে।

আগের বার অন্য একটা লেখায় গ্রেহাউন্ড বাস নিয়ে লিখেছিলাম। আজ খবরে দেখলাম, ব্যাটারা কানাডার এক প্রান্তে (ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স) গ্রেহাউন্ড বাসের সার্ভিস বন্ধ করে দিয়েছে। কারন??? বাসের প্যাসেন্জার নাকি পাওয়া যায় না। কি আজব!

এই একটা ব্যাপার এই দেশের! মানুষের বড্ড অভাব! একটা ছোট উদাহরন দেই।

ধরি,
বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি। আয়তন ১,৪৭,০০০ বর্গ কিমি। প্রতি ১ বর্গ কি:মি: তে প্রায় ১১০০ মানুষের বসবাস!
কানাডার জনসংখ্যা এই ৪ কোটি। আয়তন ১০০,০০,০০০ বর্গ কিমি। প্রতি ১ বর্গ কি:মি: তে মাত্র ৪ জন মানুষের বসবাস!
বুঝলাম না, আমার হিসেবে কি গরমিল হয়ে গেল নাকি!

আয়তনে কানাডা বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ৭০ গুন বড়। অথচ জনসংখ্যায় আমাদের চেয়ে ৪ গুন ছোট।

মানে ভেবে দেখেন এরা ৪ জন মানুষ যে এলাকা নিয়ে থাকে, সেই একই এলাকায় আমরা ১১০০ জন থাকি।
শুধু শুধু কি আমাদের দেশে এত টানা টানি, এত দূর্নীতি, এত হানাহানি! :(



কানাডার মানচিত্রে শুধুমাত্র এই দুই বৃত্তের মাঝেই থাকে ৭৫% মানুষ। মানে টোটাল জনসংখ্যা ৪ কোটি, তার ৩ কোটি মানুষই থাকে টরন্টো/ভ্যানকুভার এলাকায়। বাকি পুরো দেশ খালি পড়ে আছে। ব্যাটারা মানুষ নাই দেখে বাস সার্ভিস বন্ধ করে, আর আমরা বাসে বসার জায়গা পাই না।

আর এই কারনেই আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশের সব পাবলিক কানাডা আসলে টরন্টোতে ঘাটি গড়ে। যদিও টরন্টো এখন অনেকটা গুলিস্তান টাইপের হয়ে গেছে। ট্রাফিক জ্যাম তো ভালই একটা সমস্যা। ধরেন আপনি দুপুর ২ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে টরন্টো গেলেন। যেই রাস্তায় আপনার ৩০ মিনিট লাগার কথা, সেটা লাগবে হয়ত ১ ঘন্টা। হ্যা জানি ঢাকার জ্যামের তুলনায় এটা কিছুই না। তবে আমি শুধু মাত্র একটা ধারনা দিলাম।

এই সব ট্রাফিক ঠেলে প্রতিদিন অনেকেই আছে যারা ১ঘন্টা দূর থেকে গাড়ী/বাস করে টরন্টো আসে কাজে তাগিদায়। আবার বিকাল ৪টায় আবার বাড়ী ফেরে আরো ১ঘন্টা খরচ করে। জীবন অনেকটাই যান্ত্রিক হয়ে যায়। এতা ঝামেলার পরও যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশী ভালো লাগবে, তাহলো এখানে সবকিছু একটা নিয়মের মাঝে। সবকিছুর পেছনেই একটা সিস্টেম আছে। আর এই সিস্টেম-এর বাইরে যাওয়া সহজ কাজ নয়। অন্যান্য দেশের মতো এখানে দূর্নীতি আছে, ক্ষমতার প্রভাব আছে। তবে এগুলো খুব কম, এবং অনেকটাই হয় লুকিয়ে লুকিয়ে। কারন আইনের শাসনটাও শক্ত। একবার ধরা খেলে জান-মাল নিয়ে টানাটানি।

রেইসিজম-ও আছে। মনে করেন আপনি প্লেন থেকে নামলেন। একটু খেয়াল করলেই এমন সব বিষয় চোখে লাগবে, যেগুলো হয়ত আগে কখনও অনুভব করেননি। হয়ত কোথাও গিয়ে বসলেন, তারা উঠে চলে গেল। কোথাও গিয়ে কিছু বললেন, তারা এমন ভাবে উত্তর দিল যেন আপনি মানুষ না, জন্তু টাইপ কিছু! এগুলো দেখে প্রথমে মনে কষ্ট লাগতে পারে। কিন্তু একসময় বুঝতে পারবেন, আপনি যা, ওরাও তা। আপনি যদি শার্টের হাতাটা গুজে শক্ত ভাবে ওদের সামনে দাড়ান, তাহলে ওরাও বিড়ালের মতো চুপসে যাবে। আপনাকে তারা ছোট মনে করে, কারন আপনার গায়ের রং কালো - কিন্তু এই রংটাই আপনার শক্তি। এই কালো রংয়ের ভয়ে কেউ আপনাকে ঘাটাবে না।

তবে একটা জিনিসে আপনাকে ১০০% হতে হবে। সেটা হলো ভাষা! আপনাকে ইংরেজীতে প্রপার হতে হবে। "আই গো ইট ডিম" বা "ইয়ু ওয়ান্ট দশ টাকা? আই মিন দশ ডলার, আই মিন টেন ডলার"- এই ধরনের ইংরেজী চলবে না। আপনার কথায় এক্সেন্ট থাকতেই পারে, তবে ইংরেজিতে ফ্লুয়েন্ট হতে হবে। এতে ওরা কিছুটা হলেও আপনাকে আপন করে নেবে।

আমরা বাংলাদেশে যারা পড়াশোনা করেছি, তারা সবাই মোটামুটি ইংরেজি বলতে পারি। কিন্তু দেখা যায় যখন কোন বিদেশীর সাথে কথা বলতে যাই, তখন আর ইংরেজী ঠিক থাকে না। টেন্স, ভার্ব সব উল্টায় যায়। কারন - প্রাকটিসের অভাব। আমরা জানলেও, কথা বলার অভ্যাস তো নাই। তাও এখন ইংরেজী মুভি/চ্যানেল দেখে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এখন অনেকেই "ও.এম.জি" (ওহ মাই গড) বা "কাম অন ডুড" - এই ধরনের কথা বলে থাকি।

যাই হোক, যতই কাঠ পোড়ান না কেন, এরা (সাদা চামড়া) কখনও আপনাকে মন থেকে আপন করে নেবে না। জাতি/ধর্ম সারাজীবন আমাদের মাঝে একটা বাধা হিসেবেই থেকে যাবে। হয়ত বা কিছু কিছু এক্সেপশন আছে। তারা খুবই নগন্য।

যাই হোক অনেক বগর বগর করলাম।



কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কিছুদিন আগেই এক ভয়ংকর কেলেংকারীতে জড়িয়ে পড়েছিলেন। বিরোধী দল এই লোকরে পারলে জুতা-পেটা করত। সেটা করতে পারে নাই, বাকি সব কিছু করছে। তাও এই লোক নিজের স্থানে অটল ছিলেন যে, উনি যা করেছেন, তা মানুষের কথা ভেবেই করেছেন।

ব্যস্ততার কারনে তেমন একটা লেখা হয় না।
পুরানো লেখা পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০২০ রাত ২:৫৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×