somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একি খেলা আপন সনে - ১৯

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পরদিন খুব ভোরে দাদুর বাসায় চলে এলাম আমি। হঠাৎ আমার এভাবে মরিয়া হয়ে দাদুর বাসায় আসতে চাওয়ার আবদার দেখে মা হয়তো অবাকই হয়েছিলেন। কিন্তু কিছু জানতে চাইলেন না। এই দাদুর বাসায় হঠাৎ আসার ব্যাপারটা নিয়ে আমি যখন আকুল হয়ে মায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, মা খুব অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এই জীবনে আমার উপরে উনি অজস্র বাক্যবাণ, তীর্যক কথার ছুরি চালিয়েছেন বারংবার, বহু বহুবার ফালাফালা করে কেটেছেন উনি আমাকে তার তীক্ষ কথার চাবুকে। তবুও আমি কোনোদিন মায়ের কোনো করুণা চাইনি। নীরবে মেনে নিয়েছি তার সকল উৎপীড়ন। তাই কাল যখন তাকে এইভাবে বললাম, উনি মানা তো করতেই পারলেন না বরং বিস্মিত নয়নে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। তারপর ড্রাইভার চাচুকে ডেকে বলে দিলেন ভোরবেলা যেন উনি আমাকে ও বাড়িতে রেখে আসেন।

আমি মোটামুটি আশস্ত হলাম কিন্তু এরপরও আমার ভয় যায় না। মনে হয় আজ রাতেই যদি দোলন হাজির হয় এই বাসায়। তাকে যে জ্যান্ত ফিরতে দেবেনা মা সে আমি মোটামুটি নিশ্চিৎ। দোলন কি করবে? কি তার পরিকল্পনা, কোন সাহসে, কার ভরসায় এসেছে সে এই পরিজনহীন বাংলাদেশে! কিচ্ছু জানিনা আমি। দোলনের জন্য আমার ভীষণ ভয় হয়। এই ভয়টা হয়তো আমাকে ধরিয়ে দিয়েই গিয়েছে আরবাজ। তার মত বোধ বুদ্ধি এবং বাস্তববাদী মানুষ তো আমি আর দেখিনি। সে যেদিন বললো, দোলন সেই মুহুর্তে বাংলাদেশে ছুটে না এসে সঠিক কাজটাই করেছে। এইভাবে আসাটা হত চরম বোকামী বা চরমতর কোনো করুণ পরিনতির নামান্তর। সেদিন হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম আমি আরবাজের দিকে। তার আগ পর্যন্ত দোলনের প্রতি চরম অভিমানে আমি তার কথা ভাবতেও চাইনি পর্যন্ত। সেই প্রথম আমার চোখের উপর থেকে কালো পর্দাটা সরতে শুরু করেছিলো।আমি বুঝতে শুরু করলাম আসলেই আমি ভুল বুঝেছি। আরবাজ যা বলছে সঠিকটাই বলছে সে। সেই মূহর্তে আমার মাথা কাজ করছিলো না । আমি ধরেই নিয়েছিলাম আমার সে দূরাবস্থা জানা মাত্র দোলন সবকিছু ফেলে কোনো ভাবনা চিন্তা ভুত-ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ছাড়াই আমার কাছে ছুটে আসবে। উদ্ধার করে নিয়ে যাবে আমাকে।

আজ ভাবলে হাসি পায়, ছোট থেকে রুপকথার গল্প বেশি পড়ার ফলই ছিলো হয়তো সেটা। আমার জীবনের প্রথম পড়া রুপকথার গল্প যা বাবা আমাকে কিনে দিয়েছিলেন। বইটার প্রচ্ছদে লাল বসন ভূষনে সজ্জিতা মুকুট পরা কঙ্কাবতী রাজকন্যার ছবি। যাকে দৈত্যপূরী থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় বীর সাহসী রাজপুত্র। সাত সমুদ্দুর তেরো নদী কোনো কিছুই পরোয়া করেনি সে। আর এতো শুধুই পাশাপাশি দুটি দেশের ব্যাবধান। আমার রাজপুত্রের যে সেইটুকু পথ পাড়ি দেওয়াটাও কতটা দুস্কর ছিলো আমার অবুঝ মন সেটা বোঝেনি, মানেনিও। কিন্তু আরবাজের কথাতেই আমি এক নিমিশে বড় হয়ে গেলাম। বড়দের মত ভাবতে শুরু করলাম। অন্য যে কোনো প্রেমিক হলেই হয়তো বলতো দোলন ভুল করেছে, যে কোনো মূল্যেই সে ছুটে আসলো না কেনো তোমার কাছে? কেনো সে সেই মুহুর্তে তোমার পাশে দাঁড়ালো না সে, এমন অনেক কিছুই সাত সতেরো। আসলে এই জীবনে যাদেরকেই আমি দোলনের কথা বলেছিলাম তারাও সেটাই বলেছিলো। এটাই স্বাভাবিক। প্রেম যেমন কোনো ধর্ম, বর্ণ জাঁত পাত মানেনা তেমনি প্রেমিক প্রেমিকারও একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা বা উদ্বেগও হয় অন্ধ। তাই এই ধরনের অসম ভালোবাসার পরিনতিও যদিও অন্ধকারেই মুখ থুবড়ে পড়ে তবুও সেই ক্ষেত্রেও সেটাই যেন করণীয়। তাই তো পৃথিবীতে এত বিফল প্রেমের সফল অমর গল্পগুলি সদা স্মরনীয় বা চির জাগরুক হয়ে থাকে আমাদের মনে।

সে যাইহোক আমি আমি জেনে গেছি সেদিনও দোলনের জন্য এই দূর্গম পথ ছিলো যেমনই বিপদসঙ্কুল, আজও তার ব্যাতিক্রম নয়। আমাকে দোলনকে বাঁচাতে হবে। যে কোনো মূল্যে দোলনকে রক্ষার সকল দায় দায়িত্ব এখন আমার। জোর করে ভুলতে চাওয়া ক্রমে ঝাঁপসা হয়ে আসা দোলনের মুখের আদলটা এতদিন পরে আমার মনে মায়াময় স্মৃতিমুখ হয়ে জ্বলজ্বল জ্বলতে থাকে। সেই গভীর কালো বড় বড় চোখের অক্ষিপল্লবের ছায়া। বাঁম দিকের গেজ দাঁতের বড় দূর্লভ হাসি। সবই আমার চোখের সামনে চলচিত্রের মত ভাসতে থাকে। আমার দুচোখে ঝরতে থাকে অঝর শ্রাবন। এই চরম সঙ্কটে আমার মাথা কাজ করে না। এই মুহুর্তেও আমার এই পৃথিবীতে একমাত্র শুভাকাঙ্খী হিসাবে আরবাজকেই মনে পড়ে। আমি জানি আরবাজ আমাকে যত পছন্দই করুক বা ভালোবাসুক সে কখনও নিজের স্বার্থের কথা ভেবে আমাকে ভুল পরামর্শ দেবে না বা দোলনের ক্ষতি হয় এমন কিছুই সে করবে না। পরামর্শ চাইতে ওকেই আমি বেঁছে নেই। কিন্তু আরবাজ আউট অব রিচ। বিদেশের ফেরার পর থেকেই ওর সাথে মেসেঞ্জারেই বেশি কথা হত আমার। আর আমার ফোন থেকে বিদেশে কল দেওয়াটাও সম্ভব না হওয়ায় মেসেঞ্জারেই আমাকে অপেক্ষা করতে হবে আরবাজের জন্য। কিন্তু আমার সময় বড় কম।

কি করবো এখন আমি? কোনো ডিসিশনই নিতে পারিনা আমি। অনেক ভেবে আমি শিউলিকে এই বিপদে সাহায্য চাইবার একমাত্র পথ বলে মনে করি। ওকে গোপনে ডেকে আনি আমার রুমে। দরজা বন্ধ করে খুব অনুনয় করে ওর দুটো হাত ধরে বলি,
- শিউলী তুমি আমার জন্য একটা কাজ করতে পারবে?
ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে সে। এমনভাবে ভেঙ্গে পড়তে আসলে এ বাড়িতে কেউ কখনও আমাকে দেখেনি। আমার দুচোখে তখন অঝর বর্ষন। আমাকে এমন উতলা হতেও সে দেখেনি কখনও। সে আমাকে আরও অবাক করে দিয়ে বলে,
- আপুমনি তুমি কাইন্দো না। কি করতে হবে বলো? আমি নিজের জানের বদলি হলেও তাই করবো।
আমার মুখ দিয়ে কথা সরে না। এইভাবে সে কখনও আমাকে কিছু বলেনি কিন্তু সদা ও সর্বদা শিউলিই একমাত্র মানুষ যে ছিলো এই বাড়িতে আমার সকল প্রতিকূলতায় খুব নীরবে ও গোপনে আমার পাশে পাশে। আমাকে ওর এই প্রছন্ন সঙ্গ দিয়ে চলার ব্যাপারটা কেউ না বুঝলেও আমি ঠিকই বুঝতাম। তাই এই বিপদে ওকে মনে পড়েছিলো আমার। শিউলী যেভাবে বললো, এইভাবে কেউ কখনও আশ্বস্ত করেনি আমাকে। খুব অবাক লাগে, এই পৃথিবীতে সকল আপনজন থাকতেও আমার কোথাও কেউ নেই যাকে যে কোনো মুহুর্তে যে কোনো পরিস্থিতে খুলে বলা যায় নিজের মনের সুখ কিংবা দুঃখটুকু। অথচ কোথাকার কোন শিউলী আজ সে নিজের জীবনও দিয়ে দিতে রাজী এই আমার জন্যে! আমি ওকে বলি-
-কেউ যদি আমাকে খোঁজ করে, মানে আমার কথা জানতে চায়, বলো আমি কোথায় চলে গেছি কেউ জানেনা....
শিউলী অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। বলে,
-কই যাইবেন?
আমি সে কথার উত্তর না দিয়ে বলি-
-শিউলী তুমি রমেশকাকু, ড্রাইভার, হাশেমচাচা সবাইকে বলে দিও। সবাইকে বলো তুমি ....যদি কেউ কখনও এই বাড়িতে এসে আমাকে খোঁজে তারা যেন বলে আমি কোথায় চলে গেছি তাদের জানা নেই...
কান্নায় আমার গলা ধরে আসে। আমি কিছু বলতে পারিনা আর কিন্তু শিউলি যা বুঝার বুঝে নেয়। ও আমার চোখের পানি মুছিয়ে দেয় পরম মমতায়। এক স্নেহশীলা বড় বোনের মত জড়িয়ে রাখে সে আমাকে।

আমি ওর কোলে মাথা রেখে কাঁদতে থাকি। ও আমাকে কাঁদতে দেয়। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। গভীর রাতের নিস্তবদ্ধতার বুক চিরে বদ্ধ ঘরের ভেতরে নিজের কানেই ভেসে আসে শুধু আমার নিজেরই ফুঁপিয়ে ওঠার শব্দ। আর শিউলীর নিশব্দ কান্নার বাণী বাতাসে ঘুরে বেড়ায়। সেই দীর্ঘ গভীর নিশীথে সম্পূর্ণ দুই প্রান্তের দুই বিপরীত মেরুর নারী আমরা দুজন ভেসে যাই একই বেদনায়। আমার মনে পড়ে এই বাড়িতে পা দেবার প্রথম দিনটি হতেই এই মেয়েটি আমার হাত ধরেছিলো। আমার ঘোরগ্রস্ত জ্বরের একাকী রাত্রীরে এই মেয়েটিই সারারাত আমার পাশে বসেছিলো। খুব ভোরে আমার জ্বর ছেড়ে যাবার পরে প্রচন্ড ক্ষিধের মুখে এই মেয়েটিই আমাকে আশ্চর্য্য স্বাদের মাখনে ভাঁজা পাউরুটি আর ডিম এনে দিয়েছিলো। নতুন বাবার মা যেদিন আমাকে নিয়ে অসহ্য কিছু কটু কথা বলছিলেন আমি আড়ালে থেকে শুনে ফেলেছিলাম। আমার দুচোখ ভরে উঠেছিলো সেদিন জলে। উনি আমাকে নিয়ে যে পরম তাচ্ছিল্যে উনার এক আত্মীয়ের সাথে আলাপ করছিলেন সেই আলাপটা আমার চোখে পানি এনে দিয়েছিলো সেই ছেলেবেলাতেও। সে সময়টাতেও শিউলী আমার পাশে ছিলো ছায়ার মত । সকল সুখে নয় তবে সকল দুখেই এই রক্তের সম্পর্কহীন মানুষটি আমার পাশে পাশেই ছিলো। পৃথিবীতে নেই নেই করেও কত মায়া...... কত মায়াজাল........ আজও সারারাত শিউলী আমার পাশে বসে থাকে।

খুব ভোরে শিউলী আমার ব্যাগ গুছিয়ে দেয়। আমার খুঁটিনাটি জিনিসপত্র পরম যতনে ব্যাগে ভরে সে। আমি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছি এ বাড়িতে আমি আর ফিরবো না। কথাটা ভাবতেই আমার এক অজানা আতংক বা কষ্টের বোধ ঠিক বুকের মধ্যখানে বয়ে যায়। হয়তো শিউলীর সাথে আর কখনই দেখা হবে না আমার। শিউলীর এই মায়ার বাঁধন কেটে অনেক দূরে চলে যেতে হবে আমাকে। হঠাৎ কি মনে করে আমার গলার সেই ছোট্ট থেকেই পরে থাকা সরু সোনার চেইনটা খুলে আমি শিউলীর হাতে দেই। বলি,
- শিউলী আমি যখন থাকবো না । আমার কথা মনে হলে তুমি এই চেইনটার দিকে তাকিও....
শিউলী কোনো কথা বলে না। ওর চোখ দিয়ে নিশব্দে জল ঝরে অবিরল।

সেই অন্ধকারাছন্ন ভোর বেলাতেই আমি ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। বিশাল ভয়ংকর নতুন এলসেশিয়ানটা ঝিমুচ্ছিলো তখন সিড়ির উপরে বসে বসে। আমার পায়ের আওয়াজে সে পরম আলস্যে এক চোখ খুলে তাকায়। চেনা মুখ দেখে আবার অবলীলায় নিশ্চিন্তে চোখ বন্ধ করে ফেলে । সিড়ির মুখে কচকচে সবুজ পাতাবাহারের বড় বড় পাতাগুলি সেই অন্ধকারাছন্ন ভোরের আলোতে কালো কালো চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকে নিশ্চুপ। বাগানের পাথরের বেঞ্চগুলো সেই আঁধো আলো ছায়াতে মুখ বধির দৃষ্টিতে ভুতুড়ে চেহারা নিয়ে বুঝি তাকিয়ে থাকে আমারই দিকে। ঝলমলে সতেজ ফুলগুলো যা কিছুক্ষণ পরেই রৌদ্রের আলোয় ঝলমল করে হেসে উঠবে তারাই শিশিরসিক্ত শীতলতায় জড়তায় কুঁকড়ে থাকে এই হিম হিম ভোরের হাওয়ায়। কত আনন্দ, বেদনা অশ্রুজলের ইতিহাস বয়ে চলে এই স্থবির প্রানহীন পাষান কিংবা এই মুক প্রানী বা জীবগুলি এই পৃথিবীতে। নির্বাক ভাষায় হয়তো বর্ণনাও করে চলে তারা সেসব বিশ্ব বিধাতার কাছে। শুধু আমাদের তা জানা হয় না কখনও। এক সন্ধ্যায় এ বাড়িতে পা দিয়েছিলাম আমি সকলের অগোচরে আর এক ভোরে বিদায় নিয়ে যাচ্ছি সকলের অলক্ষ্যে। তাতে এই পৃথিবীর কোনো ক্ষতি বৃদ্ধি নেই। কোথাও কারো কিছুই যায় আসে না হয়তো।


গাড়িটা যখন মেইন গেট পার হচ্ছিলো পেছনে ফিরে আরও একবার তাকালাম। বাগান আর গেটের লাইট তখনও জ্বলছে। পুরো বাড়ি ঘুমিয়ে আছে এক আশ্চর্য্য নীরবতায়। এরই মাঝে আমি চুপিচুপি যেন পালিয়েই যাচ্ছি। কিন্তু কার থেকে পালাচ্ছি? কিসের এত ভয় আমার? মায়ের সাথে কাল রাতেই শেষ দেখা হয়েছিলো। জানিনা মার সাথে আর কখনও আমার কোনোদিন দেখা হবে কিনা। তার এত এত অবহেলার পরেও এ কথাটা ভেবেই বুকের মাঝে অনুভব করি এক চিনচিনে সুক্ষ কষ্টের স্রোত। মনে মনে বলি, মা আমি জানি তোমার কিছু কষ্টের তীব্রতা আছে। যেসব কষ্টগুলো বা তার কারণগুলো আজও আমার অজানা। বুদ্ধি হবার পর থেকেই তোমার বুকের মাঝের জলন্ত হুতাশনের দেখা আমি পেয়েছি। যদি পারতাম নিজের জীবনের বিনিময়েও নিভিয়ে দিতাম তোমার সেই হুতাশনের যন্ত্রনা।
জানিনা কেউ তা পেরেছিলো বা পারবে কিনা। আমি জানি তোমার শত সহস্র অশান্তির মাঝে আমিও একটি অশান্তির কারণ ছিলাম। জানিনা কি তার কারণ তবে সেই অশান্তি থেকে আমি তোমাকে আজ মুক্তি দিয়ে যাচ্ছি। আমি আর কোনোদিন ফিরবোনা। এটাই আমার প্রতীজ্ঞা। যেভাবেই হোক, যে কোনো মূল্যেই হোক আমি এই শপথ বা প্রতীজ্ঞা রক্ষা করবোই। আমি চাই বাকী জীবনটা তুমি অনেক অনেক ভালো থাকো। যেমনটা চাও বা যেমনটি তুমি চেয়েছিলে ঠিক তেমনি করে ভালো থাকো তুমি। আমি তোমাকে মুক্তি দিয়ে গেলাম ....ভালো থেকো মা.....


তীতলীটার জন্য বুকের মধ্যে এক চাপা কষ্ট.......আকাশ পরিষ্কার হয়ে আসছে। ভোরের ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি ছুটে চলেছে শনশন। জানালার গ্লাসটা খুলে দেই আমি। ভোরের নির্মল বাতাসের ঝাঁপটা এসে লাগে মুখে। শীতল হাওয়ায় প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। তীতলীর ছোট্ট মিষ্টি মুখটা সকল কিছু ছাঁপিয়ে আবারও মনে পড়ে আমার.....তীতলী হয়তো আমাকে ভুলেই যাবে। কিন্তু তীতলী আমার সকল শুভকামনা আর ভালোবাসা থাকবে তোমার জন্য। জীবনের যে কোনো প্রান্তেও এসে যদি তোমার কোনোদিন আমাকে প্রয়োজন পড়ে আমি থাকবো তোমার পাশে.... উফফ .....আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে...
এই পৃথিবীতে এত কষ্ট কেনো মানুষের? অনেক দিন আগে এক বাউলের মুখে একটা গান শুনেছিলাম। একতারা বাঁজিয়ে সে গাইছিলো-

মানব জনম দিয়ে বিঁধি পাঠাইওনা পৃথিবীতে....
এত কষ্ট পেলাম আমি মাপার মত নেইকো ফিতে..

তবে কি মানব জনমেই সকল কষ্ট!
পূর্নজন্ম বলে যদি কিছু থাকে তবে কি আমি ঐ বাউলের মত অন্য কোনো জীবের জীবন চাইবো?
কত শত প্রশ্নই খেলা করে আমার মাথায়......
যার উত্তর জানা নেই......

একি খেলা আপন সনে - ১৭
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১০
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×