
আমার জীবনে পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা এই বই, জার্মান সাহিত্যিক ভন গেট্যের The Sorrows of Young Werther. “ফাউস্ত” এর পর নিঃসন্দেহে এটি তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ রচনা এবং পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ট্র্যাজিক গুলোর একটি।
বইটি পড়বার আগে শুনেছিলাম, এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হবার পর বইটি পড়ে সে সময়কার অসংখ্য জার্মান তরুন আত্মহত্যা করেছিলেন! যথার্থ শুনেছিলাম। উপন্যাসটি পড়ে আমাকেও একই অনুভূতি গ্রাস করেছিল। শুদ্ধ প্রেম করেও কেউ যদি তার ভালোবাসার সাক্ষাৎ না পান, তিনিও উপন্যাসের নায়ক, তরুন ভের্টরের সাথে নিজেকে একাত্ম করে ফেলবেন। এবং এ ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত।
কি অসাধারন একটি উপন্যাস! ভালোবাসা, বিশ্বাস, শ্রদ্ধ্যাবোধ, বিবেকের সাথে অন্তরের টানাপোড়ন আর সবশেষে মহৎ আদর্শের কাছে পরাজয় এবং আত্মত্যাগের এক অপূর্ব সংমিশ্রনে এ এক অসাধারন ত্রিভূজ প্রেমের ট্র্যাজিক উপ্যাখ্যান। ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি, আত্মদর্শন, উপন্যাসটির গঠন, বর্ননার ধারা, কাহিনী এবং পরিনতি- সবকিছুই সত্যি অসাধারন, অতুলনীয়। ট্র্যাজিক হলেও এই উপন্যাসটি শেকসপিয়ার নাটক, “রোমি-জুলিয়েট” এর থেকে একেবারেই ভিন্ন ধাঁচের, কোন কোন ক্ষেত্রে “রোমিও-জুলিয়েট”কেও ছাড়িয়ে যায়।
উপন্যাসটি যেই পড়ুন না কেন, ভের্টরকে অন্তরস্থল থেকে শ্রদ্ধ্যা করতেই হবে। উপন্যাসের পাতায় পাতায় পাঠককে ভের্টর শেখাবে পবিত্র ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ, ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস, শ্রদ্ধ্যাবোধ এবং পবিত্র প্রেমের জন্য মহৎ আত্মোৎসর্গ। উপন্যাসটি শেষ করবার পর এর রেশ দীর্ঘক্ষণ মনকে আচ্ছন্ন করে রাখবে, অতি আবেগপ্রবনেরা, অন্তত যাদের সাথে ভের্টরের শোকগাঁথা খানিকটা হলেও মিলে যাবে, তারা অশ্রসিক্ত না হয়ে পারবেনই না।
যারা উপন্যাসটি পড়েছেন তাঁরা আমার সাথে একমত হবেন। যারা এখনও পড়েন নি , যথাশীঘ্র পড়ে ফেলুন। নিঃসন্দেহে এটি আপনার জীবনে পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা হতে যাচ্ছে।
জার্মান জানলে জার্মান কপিটি সংগ্রহ করে পড়ুন, না হলে ইংরেজি সংস্করনটিই পড়া উত্তম। বাংলা অনুবাদও অনেক পাবেন, তবে ভালো অনুবাদ না হলে উপন্যাসের অনেকাংশের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হবেন।
লেখাটি পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



