
যেহেতু উক্ত পোস্টের লেখক ভিন্নমত সহ্য করতে পারেন না এবং সত্যের মুখোমুখি হবার সাহস তার নেই আর তাই আমাকে ব্যান করে রেখেছেন, তাই তার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ধান্দাবাজিমূলক এবং চালাকিপুর্ন পোস্টের জবাব এখানে দিতে বাধ্য হচ্ছি।
সকল প্রশংসা আল্লাহর নামে শুরু করিলাম।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একদিকে জাতির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই, অন্যদিকে ছিল একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। সে সময় দেশের একটি রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামি স্বধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিল। একজন গর্বিত বাংলাদেশী হিসেবে এই প্রশ্ন রাজনৈতিক জামায়াত করা কি পাপ না দেশবিরোধী? আমার কাছে শুধুই রাজনৈতিক নয়, এটা জাতিগত চেতনা ও নৈতিকতার প্রশ্ন।

ইতিহাসকে স্মরণ করা জরুরি
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেওয়া জামায়াত বাংলাদেশে ধর্মের নামে রাজনীতি করে আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। আল-বদর, আল-শামস, রাজাকার বাহিনীর প্রধান উপদেষ্টা ছিল এই জামায়াত। আমাদের মায়ের কোল খালি হয়েছে, বোনেরা ধর্ষিত হয়েছে, হাজারো শহীদের রক্তে মাটির রঙ লাল হয়েছে এই সংগঠনের প্রত্যক্ষ সহায়তায়।
রাজনীতি ও বিশ্বাসের জায়গা থেকে বিচার
জামায়াত দাবি করে, তারা ইসলামি রাজনীতি করে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কোন ইসলাম? যে ইসলাম ন্যায়, মানবতা ও সত্যের পক্ষে, সেই ইসলাম কি নিরস্ত্র মানুষের ওপর গুলি চালাতে বলে? যারা দেশবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছে, তারা কি সত্যিকারের ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করতে পারে?

একজন মুসলমান হিসেবে আমি জানি, পাপ হচ্ছে এমন কাজ, যা আল্লাহর নীতিমালার পরিপন্থী। আর একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে আমি বলি দেশদ্রোহ হচ্ছে এমন কাজ, যা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়। জামায়াতের অতীত কাজকর্ম এই দুইয়ের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক।
জামায়াত করা কি পাপ?
ধর্মকে বিকৃতি করে রাজনীতি করা, মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন ও গৌরবগাথা প্রচার করা এগুলো ইসলামের দৃষ্টিতেও গর্হিত। যারা ইসলামকে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে, তারা ইসলাম নয়, নিজের স্বার্থরক্ষা করে।
তাই একজন বাংলাদেশীর হৃদয় থেকে বলা যায়, জামায়াতে ইসলামির মতো সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া শুধু রাজনৈতিকভাবে ভুল নয়, এটা নৈতিকভাবে পাপ।
জামায়াত কি দেশবিরোধী?
আমাদের ইতিহাসের পাতায় তাদের দেশবিরোধিতার প্রমাণ মেলে বারবার। তারা শুধু ১৯৭১ সালে নয়, পরবর্তীতেও মৌলবাদী শক্তি উসকে দিয়ে দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। তারা কখনো পাকিস্তানের প্রতি মোহ ছাড়তে পারেনি। তাদের আদর্শ, নীতি ও অবস্থান বরাবরই দেশের মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তাই বলা যায় জামায়াত করা নিঃসন্দেহে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড।
একজন বাংলাদেশী হিসেবে আমার বিশ্বাস, দেশের স্বাধীনতা মানে শুধু ভূখণ্ড নয়, মানে একটি চিন্তাধারা যা মুক্তি, মানবতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে। যারা সেই চিন্তাধারার বিরুদ্ধে গিয়ে স্বাধীনতা বিরোধিতার ধারক বাহক সংগঠনের রাজনীতি করে, তারা জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে।
সুতরাং, জামায়াতে ইসলামির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়া শুধু পাপ নয়, এটা দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা, লক্ষ শহীদ ও ধ্বর্ষিত মা বোনদের আত্মত্যাগের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, একটি ঘৃণিত দেশবিরোধী কাজ।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০২৫ সকাল ৮:২১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




