ঈদের পরদিন নিউজ পড়ে খবর পাবার পর থেকে মন টা খারাপ হয়ে ছিলো, মোস্টলি বিকজ এই ছেলেটা লাইফের জন্য রুইনন্ড বলে মনে হচ্ছিল, হি অয়াজ নট বর্ণ আ ক্রিমিনাল বাট আ মেইড ওয়ান। গতবছর ১৭ অক্টোবর যখন নাফিস গ্রেফতার হয় তখন ২ ধরনের রিঅ্যাকশন দেখি, প্রবাসী বাঙালীদের আতঙ্ক থেকে নাফিসের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অথবা চাপা ক্ষোভ! এটা মুলত দেশের অথবা ব্যাক্তিগত ভাবমূর্তি তে আঘাত হানতে পারে বলেই বোধহয় এই ক্ষোভ ছিলো।
নাফিস তার ক্রাইমে জড়িয়ে পরার কারণ হিসেবে দায়ী করেছে দেশের সোসিয় কালচারাল সমস্যা আর ব্যাক্তিগত হতাশা কে। প্রথম সমস্যা টা বেশ ভাববার মত বিষয়, বোধ বুদ্ধি হবার পর থেকে আশে পাশের মানুষের কর্মকাণ্ডে বিরক্তি বা হতাশা আসে নাই এমন লোক মনে হয় পাওয়া যাবে না। আমাদের দেশের আরো বড় সমস্যা আছে বলেই হয়তো মানসিক গঠনের মত ছোট (!!) ব্যাপার গুলো হারিয়ে যায় বা উপেক্ষিত থাকে। আমার খুব কাছের এক বান্ধবী আর আমি প্রায়ই এই তর্ক করি যে মানসিক গঠন কিনবা আচারনগত শিক্ষা কেন এখনও আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় নাই, মোরালিটি একটা শিক্ষণীয় ব্যাপার, এটা সোসিয় কালচারের উপর নির্ভর করে ফ্লোরিশড হয়। কি ভুল কি ঠিক এইটা বাচ্চারা শিখবে না, না বলে দিলে। একটা শিশু যদি ছোট বেলা থেকে দেখে তার বাবা মাকে ধরে বেদম মারছে, কিংবা তার মা বাসার হেল্পিং হ্যান্ড কে ধরে ছ্যাকা দিচ্ছে তার সাথে সেটাই স্বাভাবিক হবে। এখন যেহেতু স্কুল কলেজে এটা শিখানো হয় না ধরে নেয়া হয় পরিবারের উপর সেই দায়িত্ব সমাজ অর্পণ করছে, কিন্তু দায়িত্ব টি পরিবার নামক সামাজিক অনুষঙ্গটি ঠিকভাবে পালন করছে কিনা তার তদারকি নেই কোন। শারীরিক শিক্ষা যেমন এখন পাঠ্যের অন্তর্ভুক্ত একটা বিষয়, এথিক্স বা মোরালিটি ও শেখানো উচিত বলে আমার ধারণা।
ফিরে আসি নাফিস প্রসঙ্গে কেন আমার এত মায়া লাগছে ছেলেটার জন্য, গতকাল ধোঁয়া উড়াতে উড়াতে এক বন্ধু বলতেছিলো আরে নাফিস একটা খুব খারাপ ছেলে ওকে "অমুকে" চিনে, জিজ্ঞেস করলাম কেমন খারাপ? জবাব দিলো বেশী ভদ্র, কোন খারাপ আড্ডায় ছিলো না, পাড়ার দোকানে বসে বড়জোর আড্ডা দিত, আমি নাফিসকে পারসোনালি চিনি না কিন্তু যদি সে আদতে ভদ্র হয়ে থাকে তাহলে সে কোন প্রেক্ষিতে স্টিং অপারেশনের ফাঁদে পা দিতে পারে? স্টিং অপারেশন দীর্ঘদিন থেকেই বিতর্কিত এই কারণে যে অপরাধের সহযোগি হতে গিয়ে অনেকসময় তারা অপরাধে প্রোরচনা করে ফেলে। ল এনফোরমেন্ট যদি প্রভোক করে কাউকে ক্রাইম করতে যে কিনা সেই প্রভোকশন ছাড়া সেই ক্রাইমে জড়াতো না তাহলে সেই অপারেশন কোশ্চেনেবল হয়ে যায়।
নাফিসে কারিয়ার ফ্রাসটেশন, ব্যাক্তিগত সমস্যার কারণ সে একটা মানসিক ভাবে ভালনারেবেল সিচুয়েশনে ছিলো যারা প্রবাসে থাকেন তারা এই সমস্যা ভালোভাবে ধরতে পারবেন পরিবারের এক্সপেটেশন তার সাথে নতুন সামাজিক ব্যাবস্থার সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা, সাধারণ এই ধরনের ছেলে গুলোই টেররিষ্ট গ্রুপের টার্গেট হয় ম্যানিপুলেশন ইজি বলে, এফ বি আই এই টেররিস্ট গ্রুপের জায়গা নেয়া চাইতে উত্তম কোন কাজ করে নাই, এমন যদি হত তার মানসিক ভালনারেবিলিটির জন্য তাকে রিহ্যাবে পাঠানো হয়েছে তাও বুঝতাম সাজা দেয়া হয়েছে ৩০ বছরের, আর আমরাও বিশ্বাস করে নিয়েছি সাদা প্রভুদের এই হুকুম, কি আফসোস! নাফিসের জন্য দোয়া করা আর এক নিঃশ্বাসে এই লিখাটুকু ছাড়া আমার আর কিছু করার নাই, ভালো থাকুক নাফিস।