somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কলিমুদ্দি দফাদার
“কলিমদ্দিকে আবার দেখা যায় ষোলই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাজারের চা স্টলে। তার সঙ্গীরা সবাই মুক্তি, সে-ই শুধু তার পুরনো সরকারি পোশাকে সকলের পরিচিত কলিমদ্দি দফাদার।”

“রুলেটের ঘূর্ণি আর ভাগ্যের খেলা”

২০ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জুয়া বা বেটিং মানব সভ্যতার অন্যতম প্রাচীন বিনোদনের একটি। এর ইতিহাস প্রায় হাজার বছর পেছনে মোটামোটি খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল পুরানো। প্রথম দিকের প্রমাণ মেলে চীন, মিশর, ভারত ও মেসোপটেমিয়া সভ্যতায়। প্রত্নতাত্ত্বিকরা হাড় বা পাথর দিয়ে তৈরি পাশা (dice) খেলার। ভারতীয় মহাকাব্য “মহাভারত”এ পাশা খেলার উল্লেখ আছে। শকুনী মামার কাছে পান্ডব ভাইরা পাশা খেলায় হেরে দ্রৌপদীর বস্ত্র হরন উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা।

গ্রিস ও রোমে, সৈন্য ও নাগরিকরা পাশা বা বোর্ডগেম ও প্রাণী দৌড়ে বেট করতো। আরবরা বিভিন্ন "দেব-দেবীর" নামে বাজি ধরতো।‌ক্রুসেডাররা মধ্যপ্রাচ্যে বেটিং ও পাশা খেলা আরও জনপ্রিয় করে তোলে। মধ্যযুগের শেষদিকে কার্ড গেমস (Playing cards) চীনের মাধ্যমে ইউরোপে আসে। ১৯৬০–৭০ দশকে ক্যাসিনো ইন্ডাস্ট্রি লাস ভেগাস ও মোনাকোতে উত্থান ঘটায়। এশিয়ার ম্যাকাও, হংকং লাইভ ক্যাসিনোর জন্যে বিখ্যাত। রোলেট,‌ স্লট মেশিন, ব্লাক জ্যাক জনপ্রিয় সব ক্যাসিনো গেম। ১৯৯০ দশকে ইন্টারনেট বেটিং শুরু হয়। এখন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইন ক্যাসিনো, স্পোর্টস বেটিং, ই-স্পোর্টস বেটিং, ক্রিপ্টো গ্যাম্বলিং চলছে। ২০২০-এর দশকে, বিশ্বব্যাপী অনলাইন বেটিং বাজারের মূল্য $70–100 বিলিয়ন ডলারের বেশি।

সুইডেনে বেটিং বা জুয়া রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধ এবং সুইডিশ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের একটি অংশ। আয়ের একটি অংশ দিয়ে তারা বেটিং ধরে, লটারি কিনে এর মধ্যে পেনশনে থাকা বৃদ্ধ মানুষ আছে। রথের ঘোড় দৌড় তার মধ্যে জনপ্রিয় একটি খেলা।



১-ইউনিভার্সিটি পড়া অবস্থায় গেমসের দোকানে টাকা লোড করে বসে থাকতাম। জাপানিজ রামেন, ফ্রাইড রাইস, ড্রিংক অনেক কিছু খাইতে দিতো; খেয়ে আবার টাকা বের করে চলে আসতাম। মালয়েশিয়া "গেন্টিং হাইল্যান্ড" সহ আরো কিছু লাইভ ক্যাসিনো যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। লাইভ খেলার অভিজ্ঞতা ও বেশ রোমাঞ্চকর! তবে সর্বোপরি বেটিং এর হিসাব করলে লাভ থেকে এখনো লোকসানের পাল্লা বেশ ভারী।

২- এক বড় ভাই (ভয়ংকর জুয়াড়ি) ভার্সিটির টিউশন ফ্রি দিয়ে গেমসে যায়। "রুলেট" স্পিন করে (লাখ দেড় এক টাকা) সম্ভবত বাংলা টাকায় কনভার্টে ২২ লাখ টাকায় জিতে। সেই রাতে রুমে মোটামোটি টাকায় বৃষ্টি হইছে, দুনিয়ার যাবতীয় সুখ  ছিল পায়ের নিচে। এর ঠিক তিন দিন পরে সম্পন্ন অর্থ টাই  আবার "রুলেট" খেলে হারায়।

৩-ইংলিশ ফুটবল ক্লাব টটেনহ্যাম আর শেফিল্ড ইউনাইটেডের ম্যাচ ২০২২-২৩ ইপিএল সিজনে। হোম গ্রাউন্ডে টটেনহ্যাম ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে পিছিয়ে। টটেনহাম জিতবে এই "অডসের" পরিমান ছিল ১০১;  মানে এক টাকায় ১০১ টাকা। কি বুঝে যেন ১৫ ডলার বেট প্লেস করলাম। ৯৫ মিনিট পর্যন্ত ০-১ স্কোর এরপর আশা ছেড়ে দিয়ে আর দেখলাম না...পরবর্তীতে যথাক্রমে ৯৮ এবং ১১১ মিনিটের গোলে ২-১ টটেনহ্যাম ম্যাচ জিতে যায়!!!!!! আর একাউন্টে জমা হয় ১৫১৫ ডলার; এটাই আমার সবচেয়ে বড় বেটিং প্রাপ্তি।

আমি যেহেতু ফুটবল ফ্যান, লাইভ ম্যাচ উত্তেজনার জন্যে খুবই সামান্য পরিমান বেট প্লেস করি মাঝেমাঝে। ইহা হারলে আমার আর্থিক অবস্থার তেমন কোন পরিবর্তন হয় না। তবে কখনো নিয়মিত বা আয়ের বড় অংশ দিয়ে বেট খেলা উচিত নয়। এতে ধ্বংস সুনিশ্চিত আর আর্থিক দৈন্যতা আছেই। বুদ্ধিমান স্মার্ট লোকেরা কখনো বেটিং করে না তারা বিনিয়োগ করে।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:৩৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×