somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কলিমুদ্দি দফাদার
“কলিমদ্দিকে আবার দেখা যায় ষোলই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাজারের চা স্টলে। তার সঙ্গীরা সবাই মুক্তি, সে-ই শুধু তার পুরনো সরকারি পোশাকে সকলের পরিচিত কলিমদ্দি দফাদার।”

আওয়ামীলীগ ঠিক কোথায় জিতে যাচ্ছে?

১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




৫ই তারিখের পূর্বে জুলাই আন্দোলনের এক স্মরণীয় দিনের কথা বলি। ১৪-১৫ বছরের এক কিশোর সকাল থেকেই পুলিশ ও ছাত্রলীগের বিপক্ষে রাজপথে সক্রিয় ছিল। বাসায় খেতে এসে পরিবারের শত বাঁধা ও নিষেধ উপেক্ষা করে, পড়ন্ত দুপুরে সে আবারও বেরিয়ে গিয়েছিল রাজপথে। এটাই ছিল জুলাই আন্দোলনের চেতনা—যেখানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সকল পেশাজীবীর বিবেকবান মানুষ একটি কতৃত্ববাদী, লুটেরা ও জালিম শাসকের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনের সাথে সরাসরি যুক্ত বা মৌন সমর্থন দিয়েছিলেন।

যে দলটিকে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম অসম্মান ও নির্লজ্জের সাথে দেশ ছাড়তে হয়েছিল, আজ প্রায় দেড় বছর পর, তাদের ডাকা অবরোধ প্রতিহত করতে সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন উৎসাহ, আগ্রহ বা অংশগ্রহণ নেই! রাজপথে মাঠ পর্যায়ে কেবল অঙ্গসংগঠনগুলোই সক্রিয়। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে: আওয়ামী লীগ কীভাবে এত স্বল্প সময়ের মধ্যে আবারও রাজনৈতিক অঙ্গনে এতটা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল?

আন্দোলনকে নেতৃত্বদানকারী ও সমন্বয়কদের নবগঠিত দল এনসিপির দুর্নীতি, আর্থিক কেলেঙ্কারি, ট্রান্সফার ও নিয়োগবাণিজ্য; অথবা বিএনপির মতো বৃহৎ সংগঠনের সীমাহীন চাঁদাবাজি ও অন্তর্কোন্দলে নিহতের ঘটনা—সর্বোপরি, জামাতের মাধ্যমে মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থানও একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। এসব বিষয় হয়তো রাজনীতি-সচেতন মানুষের কাছে স্পষ্ট: ১৭ বছর ধরে টানা ক্ষমতায় থাকলে সক্রিয় দলই কম-বেশি আওয়ামী লীগের পথেই হাঁটবে।

এর বাইরে, ড. ইউনুস পরিচালিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিতর্কিত কার্যক্রম, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ, জবাবদিহিতার অভাব এবং ব্যক্তিগত উপদেষ্টার আর্থিক স্বচ্ছতার প্রমাণ না থাকা—এসব নানাবিধ কারণে এই সরকারকে কখনোই সুশাসক বা জনবান্ধব হিসেবে দেখা যায়নি।

যেই নাহিদ, সারজিস ও হাসনাত এক সময় দানবীয় একটি ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, জীবন-মৃত্যুকে তুচ্ছ করে পুলিশের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন—আজ সরকার ও প্রশাসন সবকিছু অনুকূলে থাকা সত্ত্বেও সেই হাসনাতদেরকে বিভিআর- কিংবা দুই-একটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে সাংবাদিকদের গাড়িতে করে পালাতে হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো নৈতিক স্খলন, ক্ষমতার মোহ এবং ভোগ-বিলাসের প্রতি আকর্ষণ। সত্যের পথে অগ্রসর নীতিবান বিপ্লবীরা কখনো মৃত্যুকে ভয় করে না—ঠিক যেমনটি আন্দোলনের সময় প্রমাণ করেছিলেন।

একটি জাতির সংকটময় মুহূর্তে প্রবীণ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গ দিকনির্দেশনা দেন, এবং তরুণরা সে অনুযায়ী কাজ করে। দুঃখের বিষয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ড. ইউনুস ঠিক তার উল্টো পথে হেঁটেছেন। জুলাই সনদ মঞ্চায়ন এবং আওয়ামী লীগকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে ঠেলে দেওয়ার তাদের অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত দেশকে একটি দীর্ঘমেয়াদি সংকট ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

যদি ধরে নেওয়াও যায় যে আওয়ামী লীগের মাত্র ২% সমর্থক কর্মী রয়েছে, ১৮ কোটি জনগণের হিসেবে এই সংখ্যাটি দাঁড়ায় প্রায় ৩৬ লাখ! অথচ সঠিক পথটি হওয়া উচিত ছিল; আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় ও তৃণমূল পর্যায়ের অপরাধে জড়িত নেতাদেরকে আইনের আওতায় আনা, এবং নতুন নেতৃত্ব ও নতুন অঙ্গীকার নিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া।

ছবি: অপ্রাসঙ্গিক।
মুন্নি বদনাম হুয়ি ডার্লিং তেরে লিয়ে।


সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১২
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×