সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-হামাস-হিজবুল্লাহ ত্রিমুখী যুদ্ধে প্রচুর লোক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।২০২২ সালে ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাস ইসরায়েলের উপর হামলা করলে এই যুদ্ধ শুরু হয়।এখন পর্যন্ত ইসরায়েল ফিলিস্তিনের প্রায় ৫০ হাজারের উপর মানুষ হত্যা করেছে। ফিলিস্তিনের প্রধান নেতা ইসমাইল হানিয়া ও সিনওয়ার কে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এতে হামাসের শক্তি বহুলাংশে কমে যায়। অন্যদিকে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী হিজবুল্লাহর উপর লেবাননে হামলা চালিয়ে তাদের প্রধান নেতা হাসান নসরুল্লাহ কে হত্যা করে ইসরায়েল সেনাবাহিনী আইডিএফ। এর প্রতিশোধ স্বরুপ মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী দেশ বলে পরিচিত ইরান ইসরায়েলে হামলা চালায়।ইসরায়েল বরাবর দাবী করে আসছিল ইরান বিভিন্ন মিলিশিয়া বাহিনীকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সহায়তা করে। ইসরায়েলে হামলার রিয়েকশন হিসাবে ইসরায়েলও ইরানের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে স্বল্প মাত্রায় হামলা চালায় । ইরান ইসরায়েল কে
এরজন্য কঠোর পরিণাম ভোগ করতে হবে বলে হুশিয়ারি জানালেও পাল্টা হামলা করে নাই। অন্যদিকে ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল কে পূর্ণ সাপোর্ট দেয়ার কথা ব্যক্ত করলেও ইরানে হামলার বিষয় নিয়ে ইসরায়েল কে সতর্ক করে। ইসরায়েল চেয়েছিল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সম্মতি দেয় না। ইসরায়েল হুমকি দিয়ে রেখেছে ইরান পাল্টা হামলা চালালে বৃহৎ পরিসরে ইরানে হামলা করবে ইসরায়েল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের কূটনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। সৌদি আরবে আরব লীগের সম্মেলনে সৌদি আরবের সাথে ইরানের প্রতিনিধির বৈঠক শেষে সৌদি আরবের বাদশাহ মিডিয়াতে বলেন ইসরায়েল ইরানে হামলা চালাতে পারবে না। ইসরায়েল কে গাজা ও লেবাননে যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানানো হয়। ইতিমধ্যে ইরাকের ভূখন্ড থেকে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায়। ইসরায়েল সরাসরি কোনো ব্যবস্থা না নিলেও ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া সীমান্তে এর প্রতিশোধ স্বরুপ ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীর উনিশ টি স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়। অন্যদিকে ইরানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে ইরাক সরকারের সাক্ষাৎ শেষে ইরাকের একজন মুখপাত্র জানান, ইসরায়েল কে অবশ্যই ইরানে হামলার পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে। ইরান ইরাকের ভূখন্ড ব্যবহার করে ইসরায়েলে হামলা করবে না বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
ইরান মুসলিম বিশ্বে মোড়ল হিসাবে নিজেকে জাহির করলেও তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ । যুক্তরাস্টের নিষেধাজ্ঞায় ইরানের ব্যবসা বাণিজ্য ধ্বংস প্রায়। এছাড়া ইরানের ভিতরে তাদের সাধারণ জনগণ সরকারের বিভিন্ন র্যাডিকাল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। ইরান তাই আপাতদৃষ্টিতে ইসরায়েলে হামলা করবে না। অন্যদিকে ইসরায়েল যাতে ইরানে হামলা না করে তার জন্য চাপ বাড়াতে থাকবে!