
রিজওয়ানা হাসান একজন পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের কর্মী; একটি এনজিওর দায়িত্বে আছেন। ৫ই আগস্ট পট পরিবর্তনের পর তিনি বর্তমান সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছেন। রিজওয়ানার পিতা কি ছিলেন বা তিনি কোন মতের অনুসারী তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা ও গুজব লীগ শুরু করে দিয়েছে। এসব কিছু সাইডে রেখে রিজওয়ানা হাসান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর কি কি কাজ করতে চেয়েছেন অথবা করেছেন তা দেখা যাক।
রিজওয়ানা হাসান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পলিথিন ব্যাগ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ। ইহা পঁচে না এবং বিভিন্ন ড্রেন নালাতে ফেলা হলে বর্জ্য নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করে। রিজওয়ানার নির্দেশ অনুযায়ী পহেলা নভেম্বর থেকে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একদল মানুষ উনার এই নির্দেশনার বিপক্ষে গিয়ে পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার করছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট কে তোপের মুখে পড়ে ফিরে আসতে হয়। বিভিন্ন পলিথিন তৈরির কারখানার শ্রমিক, মালিক ও অংশীজনেরা উচ্ছেদ টিমের সাথে হাতাহাতি ও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়ে। তাদের দাবী পলিথিন কারখানা বন্ধ করে তাদের পেটে লাথি দিচ্ছে সরকার। পরিবেশ উপদেষ্টা যখন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন তখন আমলারা কর্মসংস্থানের বিষটি নিয়ে আলোচনা করলে সমস্যা সমাধান করা যেত। কিন্তু আমলারা নিজের পারসোনাল এজেন্ডা বাস্তবায়ন ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে ভাবেন না। এর ফলে উচ্ছেদ অভিযান সঠিক ভাবে পরিচালনা সম্ভব হয়নি।
রিজওয়ানা হাসান সেন্টমার্টিনের জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটক ভ্রমণ নিষিদ্ধ করেছেন। ধাপে ধাপে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যেতে পারবে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের কারণে আবার তিনি সেন্টমার্টিনে বসবাসরত স্থানীয় অধিবাসী ও জাহাজ-হোটেল মালিক দের রোষানলে পড়েছেন। তাদের দাবী সেন্টমার্টিন নিয়ে বিশাল ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অন্যদিক্ব পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলছে এসব গুজব কান না দিতে। রিজওয়ানা হাসান কে আবার উনার মন্ত্রণালয়ের আমলারা স্থানীয় দের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে তেমন কোন পরামর্শ দেন নাই। অখ্যাত কিছু সংগঠন থেকে সেন্টমার্টিনে যেতে না দেওয়ার নির্দেশনা কে দেশ বিরোধী চক্তান্ত বলা হচ্ছে।
রিজওয়ানা হাসান বিমানবন্দর এলাকায় হর্ণ বাজানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এছাড়া ডিসেম্বর মাস থেকে স্কুল ও কলেজে মোবাইল নিয়ে আসা বন্ধ করার জন্য ক্যাম্পেইন চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কেউ কেউ হয়তো দাঁড়িয়ে যাবেন।
রিজওয়ানা হাসান সরকারি নির্মাণে পোড়া ইটের ব্যবহার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, যে সব এলাকায় ইট ভাটার কারণে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তা বন্ধ করে দেয়া ও পরিবেশ জন্য ক্ষতিকর নয় ব্রিক ফিল্ড নির্মাণে প্রণোদনা দেয়া হবে। ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে শ্রমিকদের অন্য কোথাও কাজের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য সরকার থেকে কোন পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলা হয়নি। উপদেষ্টার সাথে বৈঠকে আমলারা এসব বিষয়ে বরাবরের মতো নিরব ছিলেন।
রিজওয়ানা হাসান উপদেষ্টা হওয়ার পর সকল জেলার ডিসি দের নির্দেশনা দিয়েছেন দুই মাসের মধ্যে অন্তত ১টি নদী দূষণ মুক্ত করতে। কিন্তু ঘন ঘন ডিসি পরিবর্তনের কারণে কাজের অগ্রগতি হয়নি। নতুন ডিসিরা তাদের কর্মপরিকল্পনা জমা দিয়েছেন।
মূলত বাংলাদেশে কোনো ভালো কাজের পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করা কঠিন। আমলাদের অসযোগিতা , কিছু মানুষের স্বার্থহানি ও অপপ্রচারে বছরের পর বছর শুধু কর্ম পরিকল্পনা হাতে নিতে দেখা হয় কিন্তু তা বাস্তবায়ন হতে দেখা যায় না।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



