ঢাকায় নৈরাজ্য বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হচ্ছে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে। আজকে তার সাথে ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো অহিংস অভ্যুত্থান কর্মসূচীর! বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এসে জড়ো হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ এলাকায়। শত শত লোককে বিনা সুদে ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় আনা হয়েছিল অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার কাছে এই ধরণের প্রোগ্রামের আগাম নিউজ ছিলো না। অন্যদিকে গতকাল সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে হামলার প্রতিবাদে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ ভাংচুরের কর্মসূচী দেয়া হয় যার নাম রাখে শিক্ষার্থীরা 'মেগা মানডে'। এই কর্মসূচী পালনের উদ্দেশ্যে দুই কলেজের ৪০০/৫০০ জন শিক্ষার্থী ও পুরান ঢাকার পোলাপান মিলে যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা ও লুটপাট চালায়।কলেজ কতৃপক্ষের দাবী আনুমানিক ৫০/৬০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মোল্লা কলেজ ও পুরান ঢাকার দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শতাধিক আহত এবং যান চলাচলের মহাসড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সোমবার (২৫শে নভেম্বর) রাত ১২ টার দিকে বুটেক্স ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের স্টুডেন্ট দের মধ্যে ছাত্রাবাস দখলের জন্য ধাওয়া পাল্টা শুরু হয়। এতে প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ তাদের ছাত্রাবাসে ঢুকতে বাধা দেয়।
কতিপয় সোশ্যাল ইনফ্লুয়েঞ্জার উস্কানিতে কিছু লোক ভারতের দালাল আখ্যা দিয়ে ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর অফিসের সামনে বিক্ষোভ করে, জিয়াফত রান্নার ব্যবস্থা করে। একসময় পুলিশের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়। এত খারাপ খবরের মধ্যে ভালো খবর হচ্ছে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচলের নিষেধাজ্ঞা হাইকোর্ট স্থগিত করেছে। ঢাকাবাসী এক চরম অরাজকতার পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করলো আজকের দিনে। বিভিন্ন মহল হতে ঢাকায় জরুরি অবস্থা ও নির্বাচনের দাবী ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠছে । পুলিশ ও সেনাবাহিনী সরকারের আদেশ ঠিক ভাবে পালন করছে না। সবাইকে ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত মনে হচ্ছে!
সন্ধ্যার সময় বিভিন্ন নিউজ মিডিয়াতে খবর এসেছে সনাতন জাগরণী সংঘের প্রধান চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ঠিক কি অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তা এখনো জানা যায় নি।
সরকারের সমন্বয়ক উপদেষ্টাগণ ধীরে ধীরে সচল হচ্ছেন। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ফেইসবুকে স্টাটাস দিয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অন্যদিকে আসিফ মাহমুদ সবাইকে থাকার আহবান জানিয়েছেন। ছাত্রনেতা সারজিস সবাইকে শান্ত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
বিভিন্ন পক্ষ এসব ঘটনা থেকে বেনিফিটেড হচ্ছে। বাইরের দেশের কাছে বাংলাদেশ কে একটি জঙ্গী ও উগ্র রাস্ট্র হিসাবে দেখানোর প্রয়াস ৫ই আগস্টের পর থেকে শুরু হয়েছে। এখন চিন্ময় দাস কে গ্রেফতারের ঘটনার কড়া প্রতিক্রিয়া ভারত অথবা আমেরিকা দেখাতে পারে। বাংলাদেশের সরকার কে খুব সাবধানে চিন্ময় দাস কে গ্রেফতারের কারণ ব্যাখ্যা করা উচিত। এতে সবার মধ্যে সন্দেহ দূর হবে। যে কোন মূল্যে সরকারকে ঢাকা শহর থেকে নৈরাজ্য দূর করতে হবে। অন্যথায় সামরিক শাসন অথবা আরো অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে যাবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০