somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করা সময়ের দাবী !

২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় সিনেটের উচ্চ কক্ষে ' The social media Minimum age ' নামে একটি আইন অনুমোদিত হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী ১৬ বছরের কম বয়সী কিশোরদের নিদিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে। Instagram ও Facebook প্রতিষ্ঠান মেটা হতে Tiktok সবাইকে এই আইন মেনে চলার নির্দেশনা আসতে যাচ্ছে। জানুয়ারি মাস থেকে এক বছরের জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে এই কার্যক্রম চালানো শুরু হবে। পরবর্তীতে এই আইন স্থায়ীভাবে কার্যকর করা হবে। আইন অমান্য কারী সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম কে ৩ কোটি ২০ লাখ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশে অতিসত্ত্বর এমন কোন আইন তৈরির চিন্তা ভাবনা সরকারের নেয়া উচিত। উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ১০-১৮ বছরের কিশোরদের সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশি একটিভ দেখা যায়। ২০২০ সালে কোভিডের সময় অনলাইন শিক্ষা চালু করা হলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোবাইল ব্যবহার অনেকাংশে বেড়ে যায়। বাংলাদেশে যারা বর্তমানে টিন এইজ সময় পার করছে তারা নানা ধরণের অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশে খেলাধুলার জন্য প্রয়োজনীয় মাঠের স্বল্পতা, কো -ক্যারিকুলাম একটিভিটিজ না থাকার কারণে সোশ্যাল মিডিয়াতে অধিকাংশ টিন এইজ সময় পার করে। সোশ্যাল মিডিয়াতে তারা বিভিন্ন ধরণের অশালীন কনটেন্ট, ভাইরাল লিংক, ধর্মীয় উন্মাদনা ও সেক্সসুয়াল হ্যারেসমেন্ট কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে। ফেইসবুকে অনলাইন ক্লাসের নামে গ্রুপ খুলে সেখানে বিপরীত লিঙ্গের সাথে চ্যাটিং, নুড শেয়ার করা, অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব ছড়ানোর কাজ বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠন টিন এইজ শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ফায়দা নিয়ে ইন্টেলেকচুয়াল ভাবে তাদের দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘৃণার বীজ বপন করে চলেছে।বিভিন্ন স্কুল কলেজের আন অফিসিয়াল পেইজে হরহামেশাই এডাল্ট কনটেন্ট ও কোন নিদিষ্ট ব্যক্তিকে টার্গেট করে তা সম্মান হানি করার চেষ্টা চালানো হয়।

রিসেন্ট কয়েকটি ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার কেন নিয়ন্ত্রণ করা উচিত তার গুরুত্ব বোঝা যায়। মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের একজন শিক্ষার্থী পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়ায় অভিযোগে শিক্ষার্থীরা ভাংচুর চালায়। তাদের উগ্রবাদী কার্যক্রম রুখতে কবি নজরুল কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করে। এর প্রতিশোধ নিয়ে ইউনাইটেড কলেজ বাংলাদেশ নামে একটি ফেইসবুক পেইজ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় পরদিন সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে হামলা চালানো হবে, যে সব কলেজের শিক্ষার্থীরা এই হামলায় অংশগ্রহণ করতে চায় তারা যেন পুরান ঢাকায় চলে যায়।

৫ই আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিভিন্ন ইসলামিক মতবাদের অনুসারী দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলমান। সোশ্যাল মিডিয়া ফেইসবুক ব্যবহার করে ইভেন্ট খোলা হয়েছিলো বিভিন্ন মাজার শরীফে হামলা চালানোর জন্য সদস্য সংগ্রহের! এই কার্যক্রমে অনেক টিনএইজ কিশোর সওয়াবের আশায় অংশগ্রহণ করে ।

শেখ হাসিনার পতনের পর ফেইসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে সংঘর্ষ হয়েছে বেশ কয়েকটি স্থানে। এর মধ্যে কলেজের শিক্ষার্থীদের জড়িত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় মব জাস্টিসের জন্য প্রচারণা চালানো হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা এসব কাজে জড়িয়ে পড়ছে দ্রুত গতিতে।

বাংলাদেশে জোর করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক পদত্যাগের ট্রেন্ড শুরু হয়েছে কয়েকমাস ধরে। অন্য দেশের শিক্ষকরা জাতির পথপ্রদর্শক হলেও বাংলাদেশের শিক্ষকেরা কিভাবে চাটুকারিতা ও দলীয় লেজুড়বৃত্তি করে নিজের আখেড় গুছাবেন তা নিয়ে বিজি থাকেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাই শিক্ষকদের প্রতি সম্মান কমে গিয়েছে। ঢাবিতে জোর করে শিক্ষক পদত্যাগের ঘটনা খুব দ্রুত ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। শুরু হয় বিভিন্ন স্কুল -কলেজে -ভার্সিটিতে দলীয় লেজুড়বৃত্তির অভিযোগে শিক্ষার্থী কতৃক জোর পূর্বক শিক্ষক পদত্যাগ করানোর হিড়িক। এর সুযোগ নিয়ে চট্টগ্রামের একটি কলেজে কিছু বখাটে পোলাপান একজন শিক্ষক কে জোর করে পদত্যাগ করানোর ফলে তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন এবং পরবর্তীতে হার্ট এট্যাকে মারা যান।

নতুন স্বাধীনতা, নতুন বাংলাদেশ গড়তে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে সরকারের উচিত অতি দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তাহলে স্বাধীনতা ২.০ 'র প্রথম গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসাবে তা বিবেচিত হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৩৩
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সমসাময়িক চিন্তা ও পাশের দেশের অবস্থা!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৩৩

পাশের দেশের মি শুভেন্দু বাবু যেভাবে চিন্তা করেন, তাতে তাদের দৈনত্যাই প্রকাশ পায়! অথচ বহু বছর আগেই তাদের জ্ঞানী ব্যক্তিরা আমাদের সার্টিফিকেট দিয়ে দিয়েছেন। যাই হোক, এই সবকিছুই থেমে যাবে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনধিকার চর্চা নয়, শান্তিরক্ষি ভারতে প্রয়োজন

লিখেছেন মোহাম্মদ সজল রহমান, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৫৫

বাংলাদেশে একজন রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় অভিযুক্ত এবং ইসকন সংগঠন থেকে বহিঃস্কৃত ধর্ম প্রচারক বিতর্কিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তার মুক্তির জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারতের এক শ্রেণীর জনগণ যেভাবে ক্ষেপে উঠেছে, তাতে মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমরা উকিলরা কেউ চিন্ময়ের পক্ষে দাঁড়াবো না , না এবং না

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২




সাবাস বাংলাদেশের উকিল । ...বাকিটুকু পড়ুন

আগরতলায় হাইকমিশনে হামলা কাকতালীয় না কি পরিকল্পিত?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩২

গতকাল (২ ডিসেম্বর) ভোরে আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভের পর ন্যাক্কারজনকভাবে আক্রমণ করে। বিভিন্ন তথ্যে চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত যে বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের সাথে যুদ্ধ করে ভারত লাভবান হবে বলে মনে করি না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০



আমাদের দেশে অনেক মুসলিম থাকে আর ভারতে থাকে অনেক হিন্দু। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলিম যুদ্ধে মুসলিমদের সাফল্য হতাশা জনক নয়। সেজন্য মুসলিমরা ভারতীয় উপমহাদেশ সাড়ে সাতশত বছর শাসন করেছে।মুসলিমরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×