
২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত ক্রিকেটের মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ভারতের ক্রিকেট রাজনীতির কারণে তা এখন শঙ্কার মুখে পড়েছে। নিরাপত্তার অজুহাতে ভারত সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা ক্রিকেট দল পাকিস্তানে পাঠাবে না। পাকিস্তানের জন্য আগামীবছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ! চীন সহ বিভিন্ন দেশ থেকে লোন নিয়ে পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য বিশাল পরিসরে আয়োজন করতে চেয়েছিল। অর্থ সংকটে ভোগা পাকিস্তান জাতিগত দাঙ্গা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সারা বিশ্বে বদনাম কুড়িয়েছে। পাকিস্তানের গর্ব করার মতো একমাত্র সেক্টর হচ্ছে ক্রিকেট খেলা কিন্তু দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে অনেক দেশ পাকিস্তানে খেলতে যেতে আগ্রহী নয়। তাই বড়ো কোন টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের এই দুর্দশার পিছনে ভারত কে দায়ী করেন অনেক পাকিস্তান ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ! গতবছর এশিয়া কাপ পাকিস্তান আয়োজন করলেও ভারত পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। এশিয়া কাপ হাইব্রিড মডেলে খেলার জন্য ভারত আইসিসির কাছে আহবান করলে আইসিসি ভারতের ম্যাচগুলো শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে পাকিস্তান আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কারণ ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ সারাবিশ্বের মানুষের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভারত যদি পাকিস্তানে খেলতো যেত পাকিস্তান বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হইতো। একই পরিস্থিতি সামনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ঘটতে যাচ্ছে। ভারতের বাধার মুখে পাকিস্তানের একক ভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজন ভেস্তে যেতে চলেছে। এই সুযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আইসিসির কাছে আবেদন করবে যাতে হাইব্রিড মডেলে খেলা হলে ভারতের ম্যাচগুলো যাতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ-ভারত বর্তমান সম্পর্ক খুবই নাজুক অবস্থায় রয়েছে । ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ভারতীয় মিডিয়া গুলো বাংলাদেশ কে নিয়ে প্রোপাগাণ্ডা চালানো শুরু করে। বাংলাদেশে ইসকনের বহিস্কৃত নেতা চিন্ময় দাস কে গ্রেফতারের পর ভারতের প্রতিক্রিয়া আগুনে ঘি ঢালার মতো অবস্থা সৃষ্টি করেছে। এই উত্তেজনাকর অবস্থায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পাকিস্তানের পাশাপাশি আয়োজন করতে আগ্রহ প্রকাশ করা বিস্ময়কর ঘটনা বটে!
বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান শেখ হাসিনার সংসদের এমপি হওয়ায় ছাত্র-জনতার তীব্র আক্রোশ থাকায় দেশে এসে ক্রিকেট খেলতে পারছেন না। সাকিব আল হাসানের ভক্ত ও বিরোধীদের মধ্যে সাকিবের দেশে খেলাকে কেন্দ্র করে ঢাকায় সংঘর্ষ হয়। এখন ভারতের ক্রিকেটাররা যদি বাংলাদেশে খেলতে এসে তবে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা যে কোন ধরণের অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটাতে পারে। মাঠের বাইরে ও ভেতরে ভারতীয় ক্রিকেটাররা হেনস্তার শিকার হইতে পারেন।
বাংলাদেশ খেলাধূলায় ক্রিকেট খেলা বাদে অন্য কোন খেলায় এগিয়ে যেতে পারেনি। ফুটবল ভালো খেললেও দুর্নীতি ও স্পন্সর না থাকায় ফুটবলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এখন যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করতে গিয়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটে তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যে কোন ধরণের টুর্নামেন্ট আয়োজন হুমকির মুখে পড়বে। তাই এই ধরণের কোন প্রস্তাব বিসিবির পক্ষ থেকে আইসিসির কাছে উত্থাপন না করাই বাংলাদেশের ক্রিকেট ভবিষ্যতের জন্য সহায়ক হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১:২২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



