

সারাদেশ যখন ভারত পাকিস্তানের ফেকু যুদ্ধ নিয়ে প্রেডিকশন করছে তখন কতিপয় লোক ব্যস্ত সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীকে বিতর্কিত প্রশ্ন করতে, কেউ ব্যস্ত অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান কে গণধোলাই দিতে এবং প্রখ্যাত অভিনেতা আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকের কে মামলায় ফাঁসানো নিয়ে। বিস্তারিত খুলে বলার চেষ্টা করছি।
ফারুকীর বিতর্কিত সংবাদ সম্মেলন ও সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুতি : বাংলাদেশের ছবি 'আলী' কান চলচিত্রে পুরস্কার পেয়েছে। এই সুসংবাদ দিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সেখানে তিনজন সাংবাদিক জেনে বুঝে উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীকে বিতর্কিত প্রশ্ন করা শুরু করে। সাংবাদিকদের বক্তব্য ছিলো জুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা যে ১৪০০ মানুষ হত্যা করেছে তা কতটুকু সঠিক? বিচারের আগে শেখ হাসিনাকে খুনী বলা যাবে কিনা? ফারুকী খুব স্মার্ট উত্তর দিয়েছে। তার বক্তব্য ছিলো এমন, জাতিসংঘ তদন্ত করে প্রায় ১৪০০ মানুষ হত্যার কথ্যা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। শেখ হাসিনা একজন সার্টিফায়েড বর্বর হিসাবে তারা মনে করে। ফারুকী পাল্টা সংবাদিক কে প্রশ্ন করেন, "জুলাই অভ্যুত্থানে আপনি কই ছিলেন "?
আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছে, ফারুকী ফ্যাসিবাদ আওয়ামী বিরোধী হলেও কেন তার স্ত্রী ' মুজিব ' চলচ্চিত্রে শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। জবাবে ফারুকী উত্তর দেন, " তিশা কি করেন তা তিনি জানেন না " । একই ছাদের নিচে বাস করে স্বামী ও স্ত্রী জানে না তারা কি কাজ করে, কেন করছে ! ফারুকীর এই প্রশ্নের উত্তর শুনে যে কেউ বুঝতে পারবেন তিনি কেমন বেকায়দায় পড়েছিলেন। তাই এমন বোকা বোকা উত্তর তার মুখ থেকে বেড়িয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এমন বিতর্কিত প্রশ্ন করে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার সাথে তিনজন সাংবাদিক বেইমানি করেছে। একটি অনলাইন ভিত্তিক সংগঠন ' জুলাই রেভ্যুলেশনারী এসোসিয়েশন মার্চ ফর তিন মিডিয়ার অফিস ইভেন্ট ঘোষণা করেন। এই সংগঠনের ভয়ে দীপ্ত টিভি, এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইয়ের তিন সাংবাদিক বরখাস্ত হন। অথচ উপদেষ্টা নাকি তিন মিডিয়ার লোক ছাটাই নিয়ে কিছুই জানতেন না।
আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমান কে গণ ধোলাই দিয়েছে ছাত্রদল। ছাত্রদল কে এই কাজ সরকার থেকে করতে বলা হয়েছিলো ? একজন লোক যিনি আওয়ামী লীগের সময় ঢাকা-১৭ আসন থেকে উপনির্বাচনের টিকিট চেয়েছিলো। সিদ্দিক খুবই ভালো একজন অভিনেতা ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী ট্রেন্ডে গা ভাসাতে যোগ দিয়েছিলেন রাজনীতিতে ! সেই রাজনীতি তার কাল হলো। জনসম্মুখে রাম ধোলাই করেছে স্থানীয় বিএনপির পোলাপান ! তাদের অভিযোগ সিদ্দিক আওয়ামী লীগ পাওয়ারে থাকতে অনেক অন্যায় ও খারাপ কাজের সাথে জড়িত হয়ে পড়েছিলো। তাই ছাত্র-দল উহাকে পিটিয়েছে। তার কাপড় খুলে ফেলা হয়েছে যা একজন অসৎ রাজনীতিবিদের যথার্থ প্রাপ্ত হিসবে আমরা আত্নতুষ্টিতে ভুগতে পারি ! কিন্তু একজন লোক কে রাম প্যাদানি অথবা কোন মামলা ছাড়াই মারধর বা গ্রেফতার সমর্থন যোগ্য নয়। এসব ঘটনা শেখ হাসিনার জামানায় হইতো। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করাটাই যেন সরকারের পক্ষে অধরা থেকে যাচ্ছে।
সবশেষ আসি আলী যাকেরের ছেলে ইরেশ যাকেরের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে। বিএনপির একজন কর্মী শ্রাবণ মিরপুরে জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মারা গেছেন। এখন দাবী করা হচ্ছে ইরেশ যাকের সহ আরো ৪০৭ জন মিলে শ্রাবণ কে হত্যা করেছে। অন্যদিকে ইরেশ যাকের জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিলেন বলে সংস্কৃতি উপদেষ্টা দাবী করেন। দেশে চলছে ঢালাও ভাবে মামলা বাণিজ্য ! এসব মামলায় বাদি আসামী কে চিনে না। এভাবে হাজার হাজার ভুয়ো মামলা বাণিজ্যের কবলে পড়েছে দেশ। মামলা বাণিজ্য করে রাজনৈতিক দলগুলো ভালো ইনকাম করছে ! অর্থাৎ নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত দেশে আর কবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে ?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২৫ রাত ২:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




