

পাকিস্তান-ভারতের এক্স মিলিটারি কর্মকর্তারা জোশে অনেক কথাই বলে থাকেন তাদের জনগণকে আলী বুঝ দেয়ার জন্য। ভারতের প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানে হামলার বিষয়ে ভারতের সেনাবাহিনীর সিদ্ধান্তকে চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন। পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও আগ বাড়িয়ে ভারতের সাথে যুদ্ধ করার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। পাকিস্তান নিরপেক্ষ তদন্তের আহবান জানিয়েছে যা প্রশংসার দাবিদার। সব কিছু যখন আস্তে আস্তে শান্ত হতে শুরু করেছে তখন বাংলাদেশের এক্স বিডিআর মহাপরিচালকের ফেইসবুকে বেফাঁস মন্তব্যের জেরে নেট দুনিয়া তোলপাড়। তাঁর নাম জেনারেল ফজলুর রহমান। তিনি বর্তমানে বিডিআর হত্যা তদন্ত কমিশনের প্রধান। ফজলুর রহমান ব্যক্তিগত ফেইসবুক একাউন্টে ভারতের সেভেন সিস্টার্স দখলের জন্য বাংলাদেশের মিলিটারিকে চীনের সহায়তা নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। এক্স মিলিটারি জেনারেল খুব সম্ভবত ড. ইউনূসের যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার বক্তব্য সঠিক ভাবে বুঝতে পারেন নাই। কিন্তু কে এই ফজলুর রহমান ?
জেনারেল ফজলুর রহমান এক্স বিডিআর মহাপরিচালক ছিলেন। সে সময় তার অনেক বীরত্বের কথা আজো মানুষের মধ্যে আশা জাগায়। বিগত ১৫/১৬ বছর ধরে ভারতের এক প্রকার করদ রাজ্যে পরিণত হচ্ছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের জুতা সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ কে করবে, কখন করবে সব প্রেস্ক্রিপশন আসতো দিল্লী থেকে। তখন বাংলাদেশের মানুষ ফিরে যেত অতীতে যখন সীমান্তে বাংলাদেশ ভারত/ মায়ানমার কে চোখে চোখ রেখে জবাব দিতো। জেনারেল ফজলুর রহমান যখন দায়িত্বে ছিলেন তখন মিয়ানমারের সাথে নাফ যুদ্ধে বাংলাদেশ জয়ী হয়েছিলো। ভারতের থেকে পাদুয়া অংশ বাংলাদেশ ফেরত আনে। ভারতের কুড়িগ্রামে রোমারি ক্যাম্পে ভারত-বাংলাদেশ সংঘর্ষ হয় যেখানে ভারতের গজব বেইজ্জতি হয়।
জেনারেল ফজলুর রহমান বর্তমানে বিডিআর হত্যা তদন্ত কমিশনের প্রধান। বাংলাদেশের বিডিআর হত্যার পিছনে ভারতের যোগসাজশ নিয়ে যেমন সাধারণ মানুষের মধ্যে কানাঘুষা আছে ঠিক তেমনই যারা মারা গিয়েছেন তাদের আত্নীয় স্বজন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে দাবী করেছে তারা হিন্দি ভাষায় কথা বলছেন এমন লোকের আওয়াজ পেয়েছেন। পিলখানা হত্যায় বাংলাদেশের ৫৭ জন অফিসার একসাথে মারা যায় যা খুবই বিরল ঘটনা। সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য এই হত্যাকান্ড চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। ইন্টেরিম সরকার সেজন্য তদন্ত কমিশন গঠন করেছে যার প্রধান হিসাবে আছেন ফজলুর রহমান। বাংলাদেশের একটা বিরাট অংশের মানুষ মনে করে সঠিক ভাবে তদন্ত করলে তৃতীয় কোন পক্ষের( ভারত) নাম বের হয়ে আসতে পারে। এমতাবস্তায় তদন্ত কমিশনের প্রধান যদি এমন ফাউল আলাপ করেন সেটা উদ্বেগজনক।
জেনারেল ফজলুর রহমান একজন এক্স মিলিটারি হয়ে কিভাবে এসব ভাবতে পারেন তা বোধগম্য নয়। ভারত যদি পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ শুরু করে তাহলে এ পাড়ের সীমান্ত অরিক্ষিত থাকবে কেন এমন ভাবছেন একজন মিলিটারি ? তাঁর কি বুদ্ধি লোপ পেয়েছে না আবেগে গা ভাসাতে চাইছেন ? এক্স মহাপরিচালকের এমন মন্তব্য একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় খুবই দুঃখজনক। পুরো তদন্ত প্রক্রিয়া বায়াসড হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তদন্ত কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার বক্তব্য যারা মিস ইন্টারপ্রিটেশান করছে তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা। ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন তিনি শান্তির দূত এবং যুদ্ধ বিরোধী। এক্স বিডিআরের বক্তব্য নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বার্তা দেয়া হয়েছে। ফজলুর রহমানের বক্তব্য একান্তই তার ব্যক্তিগত এবং সরকার এসব বক্তব্য সমর্থন করে না। কিন্তু শুধু ব্যাখ্যা দেয়া যথেষ্ট নয়। যদি একটা ক্রেডিবিলিটি তৈরি করতে চায় বিডিআর হত্যার তদন্ত কমিশন তবে ফজলুর রহমান কে অব্যহতি দেয়ার বিকল্প নেই। জেনে রাখা ভালো, অন্য কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব আছে এমন কোনো অংশ যদি কেউ দখল করতে হুমকি দেয় উহা যুদ্ধ ঘোষণা করার শামিল। কিন্তু আমাদের এক্স মিলিটারি অফিসার প্রাচীন শিক্ষা ভুলে গিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। উহার সঠিক মানসিক ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন !

সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২৫ রাত ৮:৩৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



