

খুব এক্সসাইটিং ব্যাপার স্যাপার ঘটছে আজকাল ! ব্লগে যে চরিত্র নিয়ে লিখি উহাই গ্রেফতার হচ্ছে। গতকাল নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে নিয়ে লিখলাম। আজকে দেখি বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাকে। তবে উহাকে যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে এতে মোটেই সন্তুষ্ট নই। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় ২০৭ নাম্বার আসামি হিসাবে নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এসব মামলার কোনো মেরিট নেই। মামলা বাণিজ্য ব্যবসার অংশ এটি ! একদিকে সরকার সারাদিন গলা ফাটাচ্ছে আমরা ভুয়া মামলার পক্ষে নই অন্যদিকে গ্রেফতার করা হচ্ছে যে সব মামলায় বেশিরভাগই ভুয়া !
নায়িকা নুসরাত ফারিয়া ঢালিউড ও টালিউড দুই জায়গায় সমান তালে অভিনয় করেছে। শুরুতে নাটকে অভিনয় করেছিলো ফারিয়া। তবে বেশি জনপ্রিয়তা পায় কলিকাতার নায়ক অঙ্কুশের সাথে " আমি শুধু চেয়েছি তোমায় " ছবির মাধ্যমে। ২০১৩/২০১৪ সালে সনি সিনেমা হলে সে ছবি দেখেছিলাম। নুসরাত ফারিয়ার ক্রমেই রাজনীতিবিদদের সাথে সখ্যতা বেড়ে যায়। এদিকে বাংলাদেশে তার ছবির পরিমাণ কমে যেতে থাকে। বাংলাদেশে সারাবছর উল্লেখ করার মতো ২/৩ টি ছবি হয়ে থাকে। সেখানেও চলে সিন্ডিকেট ! নায়ক শাকিব খান তার পছন্দের নায়িকা ছাড়া ছবি করে না। পুরো ঢালিউড ইন্ডাস্ট্রি তার কাছে বন্দী ! সে নিজে নতুন নায়িকা প্রমোট করে। তাদের সাথে প্রেম করে, গোপনে বিয়ে করে ও নায়িকার বাচ্চা হয়। সবকিছুই চলে গোপনে গোপনে। যখন নায়িকারা স্ত্রীর মর্যাদার জন্য সমাজে সব কিছু প্রকাশ করে তখন শাকিব খান উক্ত নায়িকাকে ডিভোর্স দেয়। তাদের সাথে ছবি করা বাদ দেয়। নতুন নায়িকা খুজে ! পরপর এমন দুইটি ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর নায়ক শাকিব খান বাংলাদেশের নায়িকাদের বাদ দিয়ে কলিকাতার নায়িকাদের সাথে ছবি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে বাংলাদেশের নায়িকারা বেকার হয়ে পড়ে। দেশে সুপরিচিত নায়িকা বাদ দিয়ে কলকাতার নতুন নায়িকাদের বাংলাদেশের ছবিতে সুযোগ দেয়ার ফলে ইন্ডাস্ট্রির বেহাল দশা। দেশে নায়কের সংখ্যা খুবই কম। সেজন্য নুসরাত ফারিয়ার মতো জনপ্রিয় নায়িকারা দিনের পর দিন ছবি পায় না।
বাংলাদেশে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদের অভাব নেই। অনেক সময় তারা কালো টাকা সাদা করার জন্য ছবিতে বিনিয়োগ করে। বেকার নায়িকারা কাহিনী যাই হোক সে সব ছবিতে অভিনয় করে। সেখান থেকে গড়ে উঠে সখ্যতা। নুসরাত ফারিয়ার সাথে একই ভাবে বাংলাদেশের অনেক ইয়ং রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আবার শেখ সেলিমের মতো রাজনীতিবিদরা সুন্দরী তরুণী নায়িকাদের সঙ্গ পেতে প্রচুর টাকা খরচ করতে দ্বিধা করে না। নায়িকা নিপূণ ও নুসরাত ফারিয়া জড়িয়ে পড়েন এসব চরিত্রহীন রাজনীতিবিদদের সাথে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে। নুসরাত ফারিয়ার সাথে বেশি সখ্যতার কথা শোনা যায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ হাসান পলকের ! পলকের মন খারাপ হলে শান্তির খোজে নুসরাত ফারিয়াকে ডেকে নিয়ে যেত।
নায়িকা নুসরাত ফারিয়ার ব্যাপারে জুলাই অভ্যুত্থানের কিছুদিন আগে একটা ভয়ংকর তথ্য জানা গিয়েছিল। কলিকাতায় এমপি আনার হত্যাকান্ডে নুসরাত ফারিয়াকে হানি ট্রাপ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিলো বলে ভারতের গোয়েন্দারা তথ্য দিয়েছিলো। সরাসরি ফারিয়ার নাম নেয় নি। কিন্তু এমন ভাবে একজন নারীর বর্ণনা দেয়া হয়েছিলো যার সাথে নুসরাত ফারিয়ার ৯৫ ভাগ মিলে যায়। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের কারণে এমপি আনার হত্যাকান্ড চাপা পড়ে যায়। এখন যেহেতু ফারিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে আনার হত্যাকান্ড নিয়ে আবার পুনরায় তদন্ত করে দেখা হোক। ভারতের গোয়েন্দারা যে নায়িকার কথা বলেছেন জাতির সামনে তার পরিচয় প্রকাশ করা জরুরি।
নায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে কে যদি "শেখ মুজিব: একটি জাতির রূপকার" ছবিতে শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করার জন্য গ্রেফতার করা হয় তবে একই ছবিতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে গ্রেফতার করা উচিত। তারা মাত্র এক টাকা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে উক্ত ছবিতে অভিনয় করেছিলো। ক্ষমতার সাহচর্যে থেকে নিজেদের সুযোগ সুবিধা বাগিয়ে নেয়া ছিলো দুইজনের প্রধান উদ্দেশ্য। এখন তিশার বিরুদ্ধে যদি কেউ জুলাই হত্যাকান্ডের মামলা দেয় পুলিশ কে উনাকে গ্রেফতার করবে ? সম্ভবত না ! কারণ সংস্কৃতি উপদেষ্টা হিসাবে কেবিনেটে আছেন তিশার স্বামী প্রখ্যাত পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী। সরকার নিশ্চয়ই নিজের লোকদের বিব্রত করার চেষ্টা করবে না কোনোভাবেই।
মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগের আইডিয়া যার মাথা থেকে এসেছে উহাকে কদমবুচি করতে মন চায়। কারণ বাংলাদেশের নাটকে ফটকা বাজি, রুম ডেইট ও ফাতরামি কালচার ঢুকিয়ে জেন-জি'দের চরিত্র হনন করার পিছনে ফারুকীর অবদান শতভাগ। বাংলা ভাষাকে বিকৃত করার পিছনে ফারুকীর অবদান শতভাগ। জেন-জি'রা তাদের আইডল কে উপদেষ্টা হিসাবে দেখতে পেয়ে খুব খুশি। নুসরাত ফারিয়ার উচিত ছিলো ফারুকীর সাথে সুসম্পর্ক রাখা। তাহলে হয়তো আজকে উহাকে গ্রেফতার হতে হতো না। এ ব্যাপারে একটা মজার জিনিস শেয়ার করে ব্লগ শেষ করছি। জনপ্রিয় পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা ছিলো। কিন্তু অত্যন্ত চতুর হওয়ার কারণে তিনি সাম্প্রতিক সময়ে ফারুকী-তিশা দম্পতির সাথে উঠাবসা করতে শুরু করেন। তাদের সাথে ফটোসেশন করতে দেখা গেছে। কিছুদিন পর দেখা গেল উহার জামিন হয়ে গেছে। অভিনেতা চঞ্চল চৌধরীর একটা বিজ্ঞাপনের ডায়ালগ আজকের পরিস্থিতির সাথে মিলে যায় " একটু চালাক না হলে আজকাল দুনিয়ায় টেকা বডড কঠিন "।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০২৫ রাত ৯:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





