এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ কে তার দলের পক্ষ থেকে শোকজ করা হয়েছে। গত রোববার রাতে ধানমন্ডিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজন কর্মীকে ' মাস্তানি ও মব সন্ত্রাস ' সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছিল। এই নিউজ সংবাদ মাধ্যমে আসার পর তাদের কে সংগঠন থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। এরপর শোনা যায় ডিএমপি কমিশনার নাকি হান্নান মাসউদ কে অনুরোধ জানিয়েছেন তাদের ছাড়িয়ে নিতে। হান্নান মাসউদ থানায় গিয়ে বৈবিছার তিন নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়ে আম-জনতার তীব্র রোষানলে পড়েন। সাধারণ মানুষের মুখে একটাই প্রশ্ন " হান্নান মাসউদ কি আইনের উর্ধেধ ? উহা কি সরকারের কোন অংশ ? একজন পুলিশ কমিশনার কিভাবে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে হান্নান মাসউদ কে ফোন দিতে যাবে ?
জুলাই অভ্যুত্থানের যে কয়জন ছাত্রকে মনে করা হয় রাজনৈতিক ভাবে সফল হবেন তার মধ্যে হান্নান মাসউদ অন্যতম। অভ্যুত্থানের সময় হান্নান মাসউদ সরাসরি মুখপাত্র হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। অভ্যুত্থানের পর নিজের এলাকা সন্দীপে জনসম্পৃক্ত কাজে হান্নান মাসউদ বেশ সক্রিয়। কয়েকবার তিনি অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। এতে সবাই মনে করেছিলো হান্নান মাসউদ এনসিপির নাহিদ,হাসনাত, ও সারজিস আলমের চেয়ে নির্বাচনে জনপ্রিয়তার দিক থেকে এগিয়ে থাকবেন। কিন্তু বাধ সাধলো হান্নান মাসউদের গাড়ি !
হান্নান মাসউদের বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। হান্নান মাসউদের পক্ষে দামী গাড়িতে চড়া প্রায়ই অসম্ভব ! আবার হান্নান মাসউদ বড়ো কোনো চাকুরি আগে থেকে করতো না। একজন বেকার ছেলে হটাৎ করে দামী গাড়িতে চড়া, লাক্সারিয়াস জীবন যাপনের কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহের উদ্রেক হয়। সমালোচনার মুখে হান্নান মাসউদ জানান, জামায়াত সাপোর্টার একজন ব্যবসায়ী উহাকে এই গাড়ি গিফট করেছে। এবার শুরু হয় নতুন সমালোচনার ! কেন একজন ব্যবসায়ী মাসউদ কে গিফট করবে কোনো রিটার্ন ছাড়া ? জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পরিচিতি না পেলে হান্নান মাসউদ কি এমন গাড়ি গিফট পেতেন ? হান্নানের বিরুদ্ধে বন্দরে ধান্দাবাজি, আম্লিকের নেতাকর্মীদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনার বিনিময়ে অর্থ নেয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এসব কিছুই উহাকে বারবার নেটিজেন দের কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছিলো।
গত রবিবারের ঘটনায় হান্নান মাসউদ যাদের ছাড়াতে গিয়েছেন উহারা আগেই বহিস্কার হয়েছে। এরপরও হান্নান মাসউদের থানায় যাওয়ার ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে এনসিপির বৈবিছাকে প্রয়োজন। কেবল একক সিদ্ধান্তে হান্নান থানায় গিয়েছে তা ভাবার করার কারণ নেই। কারণ সামনে রাজপথে নির্বাচন পেছানোর দাবিতে যখন এনসিপি মাঠে থাকবে তখন সাপোর্ট টিম হিসাবে বৈবিছা কে লাগবে। আর এত সবকিছুই হচ্ছে ইন্টেরিম সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে। সংস্কারের দোহাই দিয়ে আর বেশিদিন নির্বাচন পেছানো যাবে না সরকার সে কথা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। রাজপথেই ফয়সালা হবে আগামী দিনের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ !
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫০