
সংকট ঘনীভূত; ড. ইউনূস কে ঘিরে একটি চক্র সক্রিয়-শিরোনামে মানবজমিন পত্রিকা একটা এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট করেছে। ড.ইউনূস কে ব্যবহার করে ইন্টেরিম সরকারের ভিতরে চারজন ও বাইরে তিনজন এক বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠেছে। তারাই মূলত ড. ইউনূসের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। তারা সংস্কারের নামে দীর্ঘদিন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে ড. ইউনূস কে কুপরামর্শ দিচ্ছেন।
দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে অন্তরায় এই সাতজন কারা আসলে ? তাদের এজেন্ডা কি ? কেবল সংস্কার করলেই কি দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকে ? যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক দেশে ট্রাম্পের মতো শাসক এসে কি স্বৈরাচারী ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে না ? বিশ্বের সবচাইতে বড়ো গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে কি গণতন্ত্রের নামে ধমীয় ফ্যাসিবাদী শক্তি মোদি ক্ষমতায় বসে নাই ? কেবল সংস্কার হলেই তাই পূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে, সুশাসন নিশ্চিত হবে এমন কথা যারা ভাবছেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছে। সাতদলীয় ঐক্য জোটের মধ্যে সম্ভাব্য কারা থাকতে সেটা এবার দেখা যাক !
১- পিনাকী ভট্টাচার্য : উহা ডাবল এজেন্ট ও জামায়াতের প্রক্সি হিসাবে কাজ করছে। সেনাবাহিনীকে জনগণের বিপক্ষে দাড় করাচ্ছে। সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে এলিমিনেট করে কেবল ডানপন্থী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের পক্ষে বলে যাচ্ছে। সবাইকে ভারতের দোসর বানানোর দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছেন তিনি। দেশে যে তিনজনের জন্য গৃহযুদ্ধ হতে পারে তার একজন পিনাকি ভট্টাচার্য ! জুলাই মাসে কোট্ব আন্দোলনের শুরুতে উহা ছাত্রলীগের কাজ বলে উল্লেখ করলেও পরে পল্টি নিয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পক্ষে বলতে শুরু করেন। অবশ্য এর আগেও উহার পল্টিবাজির উদাহরণ আছে।
২- সাংবাদিক ইলিয়াস : উহা আইএসআইয়ের এজেন্ট ! তার কথায় পরিস্কার সে কথা বোঝা যায়। জামায়াতের বিরুদ্ধে এক/দুইটা ভিডিও বানালেও উগ্র-ডানপন্থার মাধ্যমে দেশের গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক মারতে চান তিনি।
৩ - ফরহাদ মজহার : একজন বিভ্রান্তিকর বুদ্ধিজীবী। কখনো তিনি ডান আবার কখনো বাম ! যে নারী সংস্কার কমিশন নিয়ে দেশে এত গন্ডগোল হচ্ছে উহা নাকি জুলাই স্পিরিটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তিনি মনে করেন ! একটা সফল গণঅভ্যুথান কে বিপ্লব বলে ছাত্র-ভাইদের মাথা খারাপ করেছেন তিনি। কখনো তিনি ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ সংস্কারের কথা বলেন আবার ইসকনের সদস্য চিন্ময় প্রভুর সাথে সাক্ষাৎ করে নিজেকে মুক্তচিন্তার অধিকারী হিসাবে দেখাতে চান। অভ্যুত্থানের সরাসরি সুবিধাভোগী হিসাবে উনার স্ত্রী এখন উপদেষ্টা !
৪ - রজার ওরফে খলিলুর রহমান : পিনাকির গুরু হিসাবে এই লোক প্রথমে পরিচিতি পেয়েছে। উনার প্রকৃত নাম ও ডিগ্রী নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। উনার নাগরিকত্ব নিয়ে দেশ ব্যাপী তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। উহাকে রোহিঙ্গা রিপ্রেজেন্ন্টেটিভ কোটায় নিয়োগ দেয়া হলেও তিনি এখন নিরাপত্তা ও ডি-ফ্যাক্টো পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসাবে সরকারে আছেন। তিনি মানবিক করিডোরের ব্যাপারে কারো কথা শুনতে চান না। জনগণকে বিভ্রান্ত করেই যাচ্ছেন।
৫- ড.আলী রিয়াজ : হেফাজতে ইসলাম নিয়ে স্যারের লেখা কলাম পড়ার মাধ্যমে উনার সাথে প্রথম পরিচয় হয়। তিনি ফান্ডামেন্টালিস্টদের নিয়ে গবেষণা করেন ! ঐক্যমত্য কমিশনের প্রধান হিসাবে তিনি সরকারের অংশ হিসাবে কাজ করছেন। উনার নাগরিকত্ব নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ আছে। সংবিধান সংস্কারের দায়িত্ব নিয়ে তিনি প্রথমে পুরো সংবিধান বাতিলের কথা বললেও রাজনৈতিক দলগুলোর বাধার মুখে পিছু হটেন। স্যারের প্রকৃত উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে না। ড. ইউনূসের খুব কাছের মানুষ তিনি।
৬ -আসিফ মাহমুদ: জুলাই অভ্যুত্থানের নায়ক আসিফ মাহমুদ মূলত উপরের কতিপয় ব্যক্তির কু-পরামর্শে কাজ করতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন। মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হিসাবে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। উহার বিরুদ্ধে মাত্র নয় মাসের মাথায় করাপশনের অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা উত্তরের সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসাবে তিনি নিয়োগ দিয়েছেন হিজবুতি এজাজ আহমদকে। উহার এপিএসের বিরুদ্ধে তদবীর বাণিজ্যের অভিযোগে দুদক তদন্ত শুরু করেছে। যদি আসিফ মাহমুদ পদত্যাগ করেন তবে উহার দূর্নীতি ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই তিনি নির্বাচন দেরীতে চান। উহার বিরুদ্ধে আরো বড়ো অভিযোগ হচ্ছে তিনি সেনাপবাহিনীকে জাতির বিরুদ্ধে দাড় করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। উপদেষ্টা পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি।
৭- মাহফুজ আলম : জুলাই অভ্যুত্থানের কথিত মাস্টারমাইন্ড ! উহার ব্যাপারে জুলাই আন্দোলনের সময় পত্রিকায় পড়েছিলাম। ডানপন্থী ও মধ্যপন্থীদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার গুরু দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। উহার বিরুদ্ধে তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত পোস্ট দেয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন পক্ষের বিরাগভাজন হয়েছেন তিনি। ফরহাদ মজহার তাকে উনার শিষ্য হিসাবে আমাদের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। তাই ফরহাদ মজহারের মতো উহার আচরণও বিভ্রান্তিকর ! উহা সরাসরি নির্বাচন বিরোধী না হলেও সাতদলীয় ঐক্যজোটের অংশ হতে পারে !
এই সাতজন ব্যক্তির বাইরে বদিউল আলম মজুমদার বা আসিফ নজরুলের নাম কেউ নিতে পারেন। কিন্তু বিভিন্ন বক্তৃতায় উনারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার পক্ষেই বলে যাচ্ছেন। উপরে বর্ণিত সম্ভাব্য সাতজন ব্যক্তি ড.ইউনূস কে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার পায়তারা করছে !
https://www.ittefaq.com.bd/733163
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২৫ বিকাল ৩:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


