somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না : ড. ইউনূসের মনে কেন এমন আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে ?

২৪ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দৈনিক সমকাল থেকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর বরাতে আমরা জানতে পারি —প্রশাসন, পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনের ওপর সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই—নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে এক গভীর অস্বস্তির ইঙ্গিত দেয়। তিনি বলছেন, এসব জায়গায় এখনো বিএনপি ঘেঁষা প্রভাব রয়ে গেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়িত্বশীল পদগুলোতে নিয়োগ, বদলি ও পুনর্বিন্যাস তো এই সরকারই করেছে। সেই কর্তৃত্বের দায়ভার এখন হালকা করে দেখলে তা কেবল রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা নয়, নৈতিক দায়বোধ থেকেও পলায়ন বলে প্রতীয়মান হয়।

যে সময় নির্বাচন কমিশন সংস্কারের জন্য একটি কমিশন কাজ করছিল, সেই সময়ই সংস্কারের সুপারিশপত্র হাতে পাওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠিত হলো পুরনো ছাঁচেই। কেন এমন তড়িঘড়ি? সংশ্লিষ্ট মহলগুলো পরামর্শ দিয়েছিল—আগে সংস্কারের রূপরেখা আসুক, তারপর তার ভিত্তিতে কমিশন গঠন হোক। সেই প্রজ্ঞাবান আহ্বানে কর্ণপাত না করে, এক প্রকার রাজনৈতিক সুবিধাবাদের অনুশীলনে, বিএনপি-জামাত ও তাদের ঘনিষ্ঠ মহলের সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন সম্পন্ন হয়। আজ সেই কমিশনের ওপর ভরসার অভাবের দায় কাকে দেওয়া যাবে?

রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ কাঠামোতে ‘নিরপেক্ষতা’র যে দাবি এখন করা হচ্ছে, তার ভিত্তি কোথায়? প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যে ধরণের নিয়োগ, পদোন্নতি বা বদলি হয়েছে, তা কি কোনো স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হয়েছে? নাকি তা হয়েছে রাজনৈতিক চাপ ও পক্ষপাতমূলক সুপারিশের ভিত্তিতে? এখন সেই কাঠামো থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা, যেন নিজের রোপণ করা বৃক্ষে অন্য কারও ফল চাওয়া। গঠন যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়, তবে ফলাফলও তো পূর্বনির্ধারিত।

ইউনূস সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দৃঢ়তা দেখাতো, আজ এই অভিযোগের অবকাশ থাকতো না। কিন্তু সরকার বরং একপ্রকার স্থবিরতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় নিমগ্ন ছিল। এটাও প্রশ্নসাপেক্ষ—নির্বাচনের পথে হাঁটার ইচ্ছা সত্যিই ছিল কিনা, নাকি দীর্ঘমেয়াদে ‘কার্যকর’ থাকার চিন্তাই ছিল প্রাধান্যপ্রাপ্ত। এখন এসে যদি বলা হয়, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না—তবে এতদিন যে প্রস্তুতির নাটক চলেছে, তা কিসের জন্য?

যে রাজনৈতিক শক্তি নির্বাচনে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, তাদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব ছিল। কিন্তু ইউনূস সরকার সেই পথ এড়িয়ে গিয়ে যাদের ওপর ভরসা করেছেন, আজ তাদের আচরণেই তিনি বিচলিত। সেনাবাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতা নেওয়ার সুযোগ থেকেও তার সদ্ব্যবহার হয়নি। এই দ্বিধাগ্রস্ত নীতিনির্ধারণ এবং শ্লথ প্রশাসনিক প্রয়াস দেশজুড়ে অনিশ্চয়তার আবহ তৈরি করেছে।

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচন শুধু ফল নয়, পদ্ধতিরও প্রশ্ন। সেই পদ্ধতি যদি অবিশ্বাস্য হয়, তাহলে ফলাফলই বা কীভাবে বিশ্বাসযোগ্য হবে? ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের উচিত এখন দায়িত্ব এড়ানো নয়, বরং এই প্রতিকূল পরিস্থিতির দায় স্বীকার করে সাহসিকতার সাথে করণীয় নির্ধারণ করা। অন্যথায় এই সরকারও ইতিহাসের খাতায় পরিণত হবে আরেকটি উদ্ভ্রান্ত রাজনৈতিক পরীক্ষার নামান্তর হিসেবে।

প্রধান উপদেষ্টার আসলে চিন্তার জায়গা টা কোথায় ? মানুষজন স্বপ্রনোদিত হয়ে ভোট দিতে যাবে না ? বিগত দশ বছর ধরে সাধারণ মানুষ তার ভোটাধিকার হতে বঞ্চিত। সবাই নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে রয়েছে । এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ড. ইউনূসের কি নিয়ে এত ভাবনায় পড়ে গেলেন ? বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না সেই ভয় ?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×