
গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি বারবার বলেছেন যে ছাত্র-জনতা তাঁকে এই দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেছে এবং দেশের ক্রান্তিলগ্নে তিনি এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী এই চিত্রটি হয়তো সম্পূর্ণ সত্য নয়।
জুলাই মাসে প্যারিস অলিম্পিক চলাকালীন যখন বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন তুঙ্গে, তখন ড. ইউনূস প্যারিসেই অবস্থান করছিলেন। এই সময়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে তাঁর যোগাযোগ হয়েছিল বলে জানা যায়। অনেকে এটিকে সাধারণ যোগাযোগ মনে করতে পারেন, কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় - কীভাবে এবং কেন এই যোগাযোগ স্থাপিত হলো?
জামায়াতে ইসলামী ইউরোপ শাখার নেতা আবু বকর মোল্লার ভাষ্য অনুযায়ী, ড. ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে কাজ করেছেন এবং এর জন্য লবিং ফার্মকে টাকা দিয়েছেন। তার মতে, ড. ইউনূস এবং জামায়াতে ইসলামী এই দুটি গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সরকারের "ফ্যাসিবাদ" এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কাজ করেছে। এই মন্তব্যটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ড. ইউনূসের ক্ষমতার কেন্দ্রে আসার পেছনে থাকা দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ইঙ্গিত দেয়, যা এখন পর্যন্ত জনসাধারণের কাছে অনেকটাই অজানা ছিল।
এই পুরো বিষয়টি একটি নতুন প্রশ্ন সামনে এনেছে। যদি ড. ইউনূস সত্যিই দেশের গণতন্ত্রের জন্য লবিং করে থাকেন, তবে কি এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ? অনেকেই মনে করেন যে, ফ্যাসিবাদী বা স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য লবিং একটি বৈধ এবং কার্যকর উপায় হতে পারে। এর মাধ্যমে দেশের ভেতরের সমস্যাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে আনা যায় এবং মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও সুশাসনের পক্ষে জনমত তৈরি করা যায়। এ ক্ষেত্রে ড. ইউনূসের মতো একজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বের লবিংয়ে যুক্ত হওয়া স্বাভাবিক বলেই মনে হতে পারে।
ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লা আরও বলেছেন যে, ড. ইউনূসের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার কোনো ইচ্ছা নেই এবং তিনি কেবল একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে চান। এই বক্তব্য স্বস্তিদায়ক হলেও, লবিং ফার্ম ব্যবহারের মতো বিষয়টি জনমনে একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ড. ইউনূসের ক্ষমতায় আসা সম্পূর্ণ আকস্মিক বা ছাত্রদের আবেগতাড়িত সিদ্ধান্তের ফল নয়। বরং এর পেছনে একটি পূর্বপরিকল্পিত কৌশল কাজ করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।
দেশে গণতন্ত্রের জন্য ড. ইউনূস ‘লবিং হায়ার’ করে টাকা খরচ করেছিলেন-ইউরোপ শাখা জামায়াত নেতা
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



