
করোনা পরিস্থিত নিয়ে উদ্রেক আর উতকন্ঠায় দিবস-রজনী পার করছি।দেশের অবস্থা প্রতিদিনই ভয়াবতায় রুপ নিচ্ছে।আমি চিন্তিত।আমি শঙ্কিত ভীষন।করোনা নিয়ে মানুষ এখনও পুরোপুরি সচেতন হয়ে উঠেনি।মানুষ এখনও অবজ্ঞা আর অবহেলায় দিন পার করছে।আমার এক সিনিওর সেদিন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছিলেন,৫-৬ জন আক্রান্ত নয় বরং সরকারে বলা উচিৎ ৫ লক্ষ আক্রান্ত।তাহলেই বাঙ্গালী ঘরে ঢুকে যাবে, প্রয়োজনে সেনাবাহিনী বেদম প্রহার করবে সবাইকে।আমি তার এই স্ট্যাটাসে মন্তব্যে রাখি আগে উচিৎ হবে দরিদ্রদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেয়া।তাহলে সমস্যা সমাধান হবে।তিনি আমার এই কথার কোন উত্তর দেন নি।আগ্রহ নিয়ে তার প্রোফাইলে ঢুকলাম।বায়োতে লিখা ছিলো, Judge me, I will prove you wrong.আমি দেরী না করে বন্ধু তালিকা থেকে তাকে বিদায় জানাই।আমার মাথামোটা লোক একদমই পছন্দ না।
আমাদের এই সোনার দেশে অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র সীমার নীচে বাস করেন।ধনী যারা গরীবদের দেখে তাদের অবস্থা ধরি মাছ না ছুই পানি।অথচ তারা যদি আমাদের প্রতি সত্যিকার অর্থে করুণার সুরে তাকাতো আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি বাঙ্গালীর ভাত নিয়ে কোন চিন্তা করতে হতো না।ধনীরা গরীবদের মূল্যায়ন করতে চান না।সমস্যা এই জায়গাতেই।আমার একজন সিনিওর একদিন তার স্ট্যাটাসে তার অফিসের চেয়াম্যান সাহেবের একটি উক্তি তুলে ধরেন সেখান লিখা ছিলো, আপনার পরিবারের সকল চাহিদা পূর্ণ করার পর বেঁচে থাকা অর্থ জনগণের।কতই না মেধাবী তিনি।তার মতো সকল ব্যাক্তিগন যদি এভাবে ভাবতো আমাদের ভিন্ন কোন দেশের কাছে টাকার জন্য দুহাত বাড়াতে হতো না।আর আল্লাহ সেই ব্যক্তি সেই জাতিকে ভিক্ষার রাস্তা খুলে দেন যারা অভাবের রাস্তা খুলতে চান নিজেদের জন্য।ইশ মানুষ যদি বুঝতো।
ব্লগার রাজীব নূর তার একটি স্ট্যাটাসে বলেছেন, আমাদের মতো দরিদ্র দেশে এক বছর না, তিন বছরের খাবার মজুত রাখা দরকার। খরা, বন্যা ও ঝড় তো প্রতি বছরই লেগে আছে। হোমো সেপিয়েন্স নামের এই প্রজাতিটা পৃথিবীজুড়ে অশান্তি সৃষ্টি করে যাচ্ছে । এটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে অন্য সব প্রজাতি অনেক ভালো থাকবে”।বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকতের সাথে আমি এক অসাধারন মিল খুঁজে পেয়েছি তার এই কথাগুলোর সাথে। বিগত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের দরিয়া কূলে হরেক রকম প্রান দেখা গেছে।কোথাও হরিন হরিণী নৃত্য করছে,কোথাও কাঁকড়ার দলো উৎসব আয়োজন করছে আবার দরিয়ার পানিতে হরেক রকমের মাছেদের আনাগোনা শুরু হয়েছে।এই দৃশ্যগুলো কতই না নজর কাড়া।প্রানীগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে,তারা স্বস্তির সাথে শ্বাস ফেলছে।আমি এক নাগাড়ে তাকিয়ে ছিলাম সেগুলোর দিকে।মানুষ কত জালিম হতে পারে চিন্তা করা যায়?আপন মাতৃভূমির নিরিহ প্রানীদের সাথে কি ধরনের আচরন করতে হয় তারা আজও সেটা শিখেনি।আল্লাহর কাছে শুকরিয়া তিনি এসব প্রানীগুলোকে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে জাতির বিবেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।
আজ সকল অত্যাচারী সীমালঙ্ঘনকারী শাসকগণ কোথায়?তারা নাকি অমুক জাতিকে তমুক জাতিকে নিশ্চিহ্ন করে দিবেন।পৃথিবীতে রাজত্ব করবেন।আজ তারা সবাই পালিয়ে গিয়েছেন।তাদের মনে ভয় ঢুকেছে।তারা বোঝে, আল্লাহর আযাব বড্ড কঠিন।এদিকে ডনাল্ড ট্রাম্প দুই দিন আগে বলেছিলেন,লক্ষধিক মৃত্যু না হলে তিনি খুশী হবেন।একজন প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি নিজ জাতির প্রতি এমন একটি অবজ্ঞামূলক কথা বললেন কি করে আমি এটা ভেবেই ক্লান্ত।আসলে তিনি দেশের মানুষকে নিয়ে ভাবেন না এটাই হবে হয়তো।কারন একজন মানুষ যখন দায়িত্ব নেন তখন তার প্রধান কর্তব্য হচ্ছে নিজেকে মানবতার স্বার্থে বিলিয়ে দেয়া।আর এই কাজটা করেছেন, আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।যিনি মৃত্যুকে সামনে রেখে মানবতার কল্যানে আপন পেশায় ফিরে গিয়েছেন।তার প্রতি আমার অবিরত শ্রদ্ধা ।
চলবে-
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


