somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকদের উপর এতো ক্ষোভের কারন কি?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাপোজ, আপনার সামনে কেউ একটা খারাপ কাজ করল; আপনি তাকে দুইভাবে বলতে পারেন যে কাজটা খারাপ; প্রথমটা হল আপনি এভাবে বলতে পারেন, "আপনি যে কাজটা করলেন, এটা আসলে করা উচিৎ হয় নাই (বা ঠিক না)। এটা অন্যদের জন্য এই এই কারণে খারাপ এবং এটার কারণে আপনার শাস্তিও হতে পারে"। কেউ এইটায় অফেন্ডেড ফীল করার কথা না, কারন আপনি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করতেছেন কেন কাজটা খারাপ।
দ্বিতীয়টা হল, আপনি বলতে পারেন "বালের কাজ করছ এইটা?! বুঝ না এইটা খারাপ? মাথার মধ্যে কিছু নাই?! সব কি গু?! ওগুলা মাথার মধ্যে বাল ফালাইতে রাখছ?! পাছায় লাথি দিয়া তোমার জেলে ভইরা দেয়া উচিৎ"। এটা আপনি যাকে বলবেন, সে যদি অফেন্ডেড হতে না চায় তাহলে তাকে হয় বয়রা হতে হবে, না হয় সুপার হিউম্যান হতে হবে। তাছাড়া অফেন্ডেড ফীল না করার উপায় নাই!
এই দুইটার প্রতি রি-অ্যাকশানও কখনও এক হবে না; হওয়া সম্ভবও না।

এইসব সাধারণ জ্ঞান কেন বিলাচ্ছি? কারন, আজকে কয়েকজন এথিস্টের কিছু লেখা পড়ার সময় খেয়াল করলাম তারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসীদেরকে ইন্টেনশনালি মক করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন। কেন 'ইন্টেনশনলি' বললাম? কারন উনাদের লেখায় সেটা খুব স্থুলভাবেই প্রকাশ পায়। আর সত্যি বলতে এখন পর্যন্ত আমার দেখা/চেনা/জানা এথিস্টদের মধ্যে দু'একজন ছাড়া বাকি সবই "না খাইলে ভইরা দিব" গোত্রীয়। জাস্টিফাই করা আর মক করা, দুইটা ডিফারেন্ট জিনিস। তারা নিজের ভিউ পয়েন্টকে জাস্টিফাই করায় চেয়ে নির্দিষ্ট একটা গোত্রকে হিউমিলিয়েট করায় বেশি ইন্টারেস্টেড।

বেশ অনেক মাস আগে কোন এক ভিডিওতে দেখেছিলাম, “আপনি কি নাস্তিক?” এ প্রশ্নের জবাবে এক বিজ্ঞানী (নাম মনে নাই, তবে খুব ফেমাস) বলেছিল, “আমি জানি না সৃষ্টিকর্তা আছে কি না কারন তার কোন এভিডেন্স এখনও খুঁজে পাইনি। তবে যদি খুঁজে পাই, তাহলে বিশ্বাস করব”। ভিডিওর অন্য একটা অংশে উনি বলেছিল “আমি বুঝি না ‘এথিস্ট’ শব্দটাই কেন এক্সিস্ট করে! যা ‘স্কী’ করে না তাদের জন্য কি ‘নন-স্কী প্লেয়ার’ নামের কোন শব্দ আছে? তারা কি একসাথে হয়ে বলে বা প্রমাণ করতে চায় তারা কেন স্কী করে না? তারা কি কোন সংগঠন করে ল’ পাল্টে ফেলার চেষ্টা করে? একজন মানুষ সৃষ্টিকর্তায় কতটুকু বিশ্বাস করে বা করে না, সেটা নিয়ে সময় নষ্ট করার সময় বা শক্তি কোনটাই আমার নেই।”

একজন এথিস্টের ভিউ পয়েন্ট ডিফারেন্ট, তিনি সবকিছুকে অন্য অ্যাঙ্গেল থেকে দেখেন; এটাকে আমি এপ্রিশিয়েট করি। তিনি যে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, সেটা দিয়ে নতুনভাবে ভাবছেন; ভাল জিনিস। কিন্তু নিজেকে জাস্টিফাই করার নামে অন্য একটা গোত্রকে মক না করলে কি হয় না? আপনি কোনটায় কতটুকু বিশ্বাস করেন বা না করেন, সেটা কেউ জানতে চায় নাই তো। আপনার বিশ্বাস আপনার কাছে, আমার বিশ্বাস আমার কাছে; সিম্পল!

আমাদের সাধারণ প্রবৃত্তি হল আমরা একজনকে দিয়ে সম্পূর্ণ একটা সম্প্রদায়কে জাজ করি। যে এথিস্ট ইন্টেশনালি অন্যকে মক করায় ব্যস্ত; তার কারণে যারা এই কাজ করে না, তাদের নামটাও খারাপ হচ্ছে। আপনি যদি পাহাড়ের চুড়া থেকে একটা গোল কিছু গড়িয়ে দেন, সেটা নিচের দিকে পড়তেই থাকবে এবং এটার আঘাত বাকি অনেক কিছুতেই আঘাত করবে। এখন যদি আপনি বলেন, “হ্যাঁ, বলটা আমি গড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু নিচে অন্য কিছুতে আঘাত করাটা নিশ্চই আমার ফল্ট না! আমি সে ইন্টেনশনে তো ছুড়ি নাই।”; তাহলে আমার শুধু একটা কথাই বলার আছে, “আপনার স্বাক্ষর জ্ঞান আছে, কিন্তু আপনি শিক্ষিত না”।

শিক্ষা গ্রহণ করা আর শিক্ষিত হওয়া, এই দুইটার মধ্যে তফাৎ কোথায় জানেন? শিক্ষা গ্রহণ করা মানে হল “হাতের পাঁচ আঙ্গুল এক সমান না” এটা মুখস্থ করা, আর শিক্ষিত হওয়া মানে হল সেটা বুঝে বিলিভ করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। আমি একটা জিনিস শিখেছি কিন্তু সে অনুযায়ী কখনই কাজ করি না, তাহলে আমি নিজেকে কখনই শিক্ষিত বলতে পারব না। সোজা কথা হল, জানার পরিধি বেশি মানেই কিন্তু জ্ঞানী না। আপনার বলার ধরন-এর উপরও অনেক কিছু নির্ভর করে... কিভাবে বলতে বা উপস্থাপন করতে হবে, সেটাই যদি আঁচ করতে না পারেন তাহলে আপনার জ্ঞান আর 'কিছু জিনিস'-কে অন্যভাবে দেখতে জানার মূল্যটা কোথায়?

© লেখাঃ আমিরুল ইসলাম
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×