একটা বড় ধরনের নাড়া খেয়েছি আমরা পুরো দেশবাসী। ভীত হয়েছি, বিষন্ন হয়েছি, হতাশ হয়েছি। আমরা লাগাতারভাবে দোষারোপ করে যাচ্ছি সাংবাদিকদের, কিছু গর্দভ ফেসবুকারদের, কিছু অপজিট মেন্টালিটির মানুষদের এমনকি হামলাকারীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু এখানেই কি শেষ? এরপর কি আমাদের কিছুই করার নেই? এতে কি আসলেই কোন উপকার হবে দেশের? সমাধান হবে সংকটময় পরিস্থিতির? বরং আতংক এবং ঘৃণা ছড়াচ্ছে।
এখনই সময় এধরনের অনাকাংখিত সিচুয়েশনকে রুখে দাঁড়ানোর। আমি সাংবাদিক নই, ডিফেন্সের কেউ নই। একেবারেই রুট লেভেলের সাধারন মানুষ আমি। দেশের ক্রান্তিকালে কিছু করবার মতন কোন ক্ষমতাই নেই আমার। কিন্তু আমার আছে বোধ, যাকে বলে সিক্সথ সেন্স। জানি আপনারও আছে। আমাদের এই সেন্সকে কাজে লাগাতে হবে। কিভাবে?
অবজার্ভ করুন। আপনার পরিবারের সদস্যটিকে, আপনার বন্ধুটিকে। তার মধ্যে হঠাৎ করে কিংবা ধীরে ধীরে কোন পরিবর্তন আসছে কিনা খেয়াল করুন। সে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী হোক কিম্বা অন্য প্রতিষ্ঠানের। শুধুমাত্র পোষাক দিয়ে তাকে জাজ করবেন না। তার আচরণ, তার ব্যক্তিগত আগ্রহের ক্ষেত্র, ধর্ম-দেশ-মানুষ সম্পর্কে তার মতাদর্শ জানতে চেষ্টা করুন।
দেশের চলমান ক্রাইসিসে তার প্রতিক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করুন। বিশ্বে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন জঙ্গি নাশকতামূলক কর্মকান্ড নিয়ে তার সাথে আলোচনা করুন। খেয়াল করুন, এসবে কি সে এক্সট্রিম লেভেলের নিঃস্পৃহ নাকি প্রতিক্রিয়াশীল? মনে রাখবেন, এক্সট্রিম কিছুই ভালো না। এর থেকেই তৈরী হয় উগ্র ধর্মবাদ অথবা উগ্র জাতীয়তাবাদ।
যদি তার মাঝে সন্দেহজনক কিছু আপনার সিক্সথ সেন্সের রাডারে ধরা পড়ে, তবে কাজে লেগে যান তাকে এক্সট্রিমিস্ট হওয়ার পথ থেকে সরিয়ে আনতে। যদি আপনি নিজে কাউন্সেলিং না করতে পারেন তবে প্রফেশনাল কাউন্সেলরের কাছে যান। এখন কিছু স্বেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠানও আছে এধরনের কাজ করার জন্য।
ব্রেইনওয়াশ যদি করতেই হয়; তবে তা হোক শান্তির জন্য। তাকে বোঝান ধর্মের লক্ষ্য জীবন গড়া, জীবন নাশ নয়। জিহাদ যদি করতেই হয়, তা যেন আগে নিজের মনের হিংস্রতার সাথে করে। আপনার বাড়িয়ে দেয়া স্নেহের হাতকে উপেক্ষা করবে, এতটা মনোবল কোন বিপথগামী তরুণের নেই বলেই আমার বিশ্বাস। তাকে ঘৃণা নয়, ভালবাসা দিয়েই করুন জয়।
আমাদের স্বপ্নগুলো যেন অশ্রু দিয়ে ধুয়ে না যায়।