আসন্ন পৌর নির্বাচনে একটি বিষয় পরিস্কার হয়ে গেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট বাস্তবিক অর্থেই ভেঙে গেছে। এই কথা বলার পিছনে যে বিষয়টি আমাকে অনুঘটক হিসেবে সাহায্য করেছে তা হচ্ছে নির্বাচনে জোটের অন্যতম সঙ্গী জামায়াত ইসলামীর এককভাবে ২৭টি মেয়র পদে নির্বাচন করা। যেখানে এই পর্বে ৯০টি মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় বিএনপি ২০ দলীয় জোটের যে মিটিং ডাকে তাতেও জামায়াত অংশ নেয়নি।
এর আগে বিএনপি যুদ্ধাপরাধী বিচারের বিষয়ে জামায়াতের সাথে সম্পর্কের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এটাকে শুধু নির্বাচনী জোট বলে অভিহিত করেছে।অথচ সেই নির্বাচনের প্রাক্কালে জোটের বিষয়ে এবারে জামায়াতের সীমাহীন নির্লিপ্ততা পরিলক্ষিত হচ্ছে।তাহলে এটা কি ধরে নেয়া যায় না, জামায়াত খুব সচেতনভাবেই বিএনপিকে এড়িয়ে চলছে।যদিও রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত ইসলামী সঠিক কাজটিই করছে।কারণ রাজনীতি কোনো আলো আধাঁরীর খেলা নয় যে তুমি জনগণের চোখকে ধুলো দেয়ার জন্য তুমি ক্ষণে ক্ষণে অবস্থান পরিবর্তন করবে। বাস্তবিক অর্থে বিএনপির এই আলো আধাঁরীর রাজনীতিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দল হচ্ছে জামায়াত।
জোটের বড় সঙ্গী হিসেবে যেহেতু বিএনপি জামায়াতের রাজনৈতিক বিপর্যয়ের সময়ে নীতিগতভাবে পাশে দাড়াতে পারবে না, তাই তার উচিৎ ছিলো জামায়াতকে জোটের রাজনীতি থেকে মুক্তি দেয়া। তাতে জামায়াত নিজেকে রাজনৈতিকভাবে বাঁচানোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাতে পারত। আর বিএনপিও আলো আধাঁরীর রাজনীতি থেকে মুক্ত করে রাজনীতির স্বচ্ছ আলোতে জনগণের সামনে তুলে ধরতে নিজেকে পারত।যা দুটি রাজনৈতিক দলের জন্যই ভালো হত।
এ প্রসঙ্গে বিএনপিকে মনে রাখতে হবে একবিংশ শতাব্দীতে এসে রাজনীতিতে একটি মৌলিক পরিবর্তন এসেছে , তা হচ্ছে তুমি যা বিশ্বাস করো তাই করো, সেটা ভুল শুদ্ধ যাই হোক না কেন, কিন্তু তুমি যা বিশ্বাস করো না , তা করো না। জনগণ তখন তোমাকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল মনে করবে। আর জনগণ কখনো দুর্বল রাজনৈতিক দলের পাশে থাকতে চায় না। কারণ জনগণ নিজেই তো দুর্বল। জনগণের টিকে থাকার জন্য শক্তি দরকার।এখন বিএনপিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সেকি দুর্বল রাজনৈতিক দল হিসেবে আলো আধাঁরীর খেলা খেলবে , না সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার মধ্যে দিয়ে নিজেকে শক্তিশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেকে জনগণের সামনে উপস্থাপিত করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪