somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপেক্ষা..

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অপেক্ষা...
লেখক..এম এ মোমেন খান
-
মেয়েটার চোখের দিকে তাকালে আর চোখ ফেরানো যেত না!
সপ্তম ইন্দ্রীয় দিয়ে অনুভবে তার বিচরণ ছিল সারাক্ষণ!

ব্লাক ডায়মন্ড রং এর মত চোখ, হালকা কাজলে অন্য রকম একটা সুন্দরের আভাস
ছিলো তার,
আর লম্বা এলোকেঁশী চুল গুলো হালকা বাতায়নে বনলতাকেও ছাড়িয়ে যেতো এটা নিশ্চিত!

অসীম শ্রদ্ধাভরে, মনের গহীনে কখন যে কল্পনার আঁধারে ছবি এঁকে ফেলেছি নিজেও ঠাওরাইতে পারিনি!!
সেদিন আকাশটা ছিল দক্ষিণের এক কোণে কালো, গুরুম গুরুম আওয়াজে বিজলির ঝলকানি এসে পড়ছে গাঁয়ে।
হাসপাতালের রুম গুলোতে পাবলিক জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছি অপরুপ আকাশের দিকে।

সেদিন খুব অসুস্থ ছিলাম, সম্ভবত জ্বরের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাকে হাসপাতালের স্মরণাপন্ন হতে হয়েছিলো।
আমি আর প্রেয়সী, জানালার মুখোমুখি জায়গা থেকে দুজনের চোখের চাহনি একত্রিত হলো!
কি আর্শ্চয!!
প্রেয়সী এখানে কি করে?
নিজেই বার বার প্রশ্ন করছিলাম,
তখন জ্বরের ভাবটা বেশ কম।
বৃষ্টিভেজা মাটির সঁদা গন্ধ নাকে এসে ঢুকছে, আমি আঁড় চোখে তাকিয়ে আছি তার দিকে।
খানিকটা দেখার পর মুচকি একটা হাসি দিয়ে জানালার পর্দাটা এঁটে দিলো!
বুঝতে পারলাম আশ্রয়স্থলটা তার এখানেই।
রাত কেেট গেল নিদ্রাহীন চোখে,সকালের মিষ্টি রোদের স্বাদটা গাঁয়ে নিবো বলে বারান্দার এক কোণে দাড়ালাম!
ঘটনার সূত্রপাত সেখানেই, ঘারে একটা বড় কার্টুন আঁকা ব্যাগ, সম্ভবত হলিউডের কোন নায়িকার প্রতিচ্ছবি ব্যাগের পিছনে বহন করছে!
-
অতি ফর্সা ত্বকের মেয়েটা যে একটু রোদেই লাল বর্ণের হয়ে যায় সেটা সকালের রোদের ঝলকানিতে বুঝা যাচ্ছিলো।
খুব ছোট ছোট পা ফেলে সামনের দিকে আসতেছে।
আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি প্রেয়সীর দিকেই।
উপরতলা থেকে সব কিছু অনুমান করাটা সহজ, গলাটা একটু হুংকার দিয়ে চুপ করে আছি, শব্দটা শুনতে পেয়ে আমার দিক তাকালো প্রেয়সী।
সেকি চোখ!!!
বড় বড় চোখ দিয়ে বুঝিয়ে দিলো এটা আমার অন্যায়!!
আমি ততোখনে পুরাই সুস্থ!!
ডাক্তার আসবে কিছুক্ষণ পরেই, আমাকে রিলিজ দিয়ে দিবে হয়ত!
কিন্তু আমি যাবোনা,কিছুক্ষণ পর আবারও হাসপাতালের বেডে শুয়ে পড়লাম।
আমাকে রিলিজ দিতে চাইলেও নিলাম না!!
আমার বড় ভাইকে বললাম, আমি মনে হয় পুরো সুস্থ হইনি!
-
কোন ঝামেলা ছাড়াই প্রেয়সীর জন্য সেদিনটা বরাদ্দ ছিলো হাসপাতালে।
আমি তো পুরাই সুস্থ, স্কুল ছুটির অপেক্ষায় আছি,সময়টা বেশ দূরহ!
ঘড়ির কাটা গুলোও চলছেনা কেন জানি!
বিকেল হয়না কেন!
সেদিনের বিকেলটাই আমার জন্য গত আট বছর ধরে অনেক স্মৃতি বহন করছে।
সে অনেক কথা, কয়েকটা সমগ্রভাব উপন্যাস লেখার মতই!
ইতোমধ্যে বিকেল হলো, বারান্দার সেই কোণে দাড়িয়ে ছটফট করছি,পায়তারা দিচ্ছি এদিক ওদিক!
দূর থেকে নীলাভ পোষাকে কে জানি আসছে!
অনুমানের তীর নিক্ষেপ করলাম প্রেয়সীর দিকেই!
লক্ষবস্তুতেই আঘাত হানতে সক্ষম হলাম।
আমি উপরতলায়,
আর সে নিচ দিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে।
হালকা শীতের সময় খুব একটা রোগী দেখা যায়না হাসপাতাল গুলোতে!
সময়টা এরকমি ছিলো, তবে সময়ের বয়সটা আট বছর আগে!!
দুজনের দেখা গুলো এভাবেই হয়, আমি চলে আমি সেখান থেকে।
সেদিনের সন্ধাটা ছিলো বেশ মনোরম,
দুজনেই খুব কাছ ঘেষে দাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিলাম।
-
আমার নামের সাথে হুবহু মিল ছিলো তার...।
পরের কাহিনী রবীন্দ্রনাথ এর প্রেমালাপের কবিতার মতই!!
আমি আর প্রেয়সী একসময় শিরি ফরহাদ হয়ে যাই,কিন্তু গল্পের শেষে দেবদাসের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে কে জানে!!!
দীর্ঘ আটটি বছর, অনেক সময়, অনেক দিন!
কিন্তু পারুর আর দেখা হয়না!
আমি দেবদাস হয়ে কোন এক ছোট্ট শহরে খুঁজে ফিরি পারুকে..........
এই বুঝি দেখা হবে,
এই বুঝি কথা হবে................
-
অপেক্ষাটা খুবই খারাপ কিন্তু আগ্রহটাও যে ভয়ানক!!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যারিস্টার সুমন দায়মুক্ত , চু্ন্নু সাহেব কি করবনে ?

লিখেছেন শাহাবুিদ্দন শুভ, ০৮ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৭


দেশে প্রথম কোন সংসদ সদস্য তার বরাদ্ধের ব্যাপারে Facebook এ পোষ্ট দিয়ে জানিয়ে থাকেন তিনি কি পেলেন এবং কোথায় সে টাকা খরচ করা হবে বা হচ্ছে মানুষ এসব বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়ের নতুন বাড়ি

লিখেছেন সাদা মনের মানুষ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২২

নতুন বাড়িতে উঠেছি অল্প ক'দিন হলো। কিছু ইন্টরিয়রের কাজ করায় বাড়ির কাজ আর শেষই হচ্ছিল না। টাকার ঘাটতি থাকলে যা হয় আরকি। বউয়ের পিড়াপিড়িতে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকার পরও পুরান... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৮










চিত্রকলার কোন প্রথাগত শিক্ষা ছিলনা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। ছোট বেলায় যেটুকু শিখেছিলেন গৃ্হশিক্ষকের কাছে আর পাঁচজন শিশু যেমন শেখে। সে ভাবে আঁকতেও চাননি কোন দিন। চাননি নিজে আর্টিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতা বনাম ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত বিবিধ দোষ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৪



জাহান্নামের শাস্তির তীব্রতার বিবেচনায় মুমিন ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে অমুসলিম উপস্থাপিত দোষারোপ আমলে নেয় না। আমার ইসলাম সংক্রান্ত পোষ্ট সমূহে অমুসলিমগণ ইসলামের বিবিধ ক্ষেত্রে বিবিধ দোষের কথা উপস্থাপন করে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×