শিক্ষক বটে! =
চট্টগ্রাম কলেজে এক মহানীতিবান জাঁদরেল অধ্যক্ষ ছিলেন। আমি এইচএসসি পড়াকালে তাঁকে অধ্যক্ষ হিসেবে কিছুদিনের জন্য পেয়েছিলাম। আমি পাশ করার স্বল্পকালের মধ্যেই অবসরে গিয়েছিলেন তিনি।
একবার কলেজে বিভিন্ন কক্ষে ঘুরে ঘুরে পরীক্ষার পরিবেশ দেখছিলেন তিনি। তখনকার আমলে ছাত্ররা, এমনকি রাজনীতি করা ছাত্ররাও, শিক্ষকদের যথেষ্ট সম্মান-সমীহ করতো। শিক্ষকরাও নীতি-আদর্শের ব্যাপারে ছিলেন অনেক সচেতন। কাজেই, তিনি পরিদর্শনে বেড়িয়েছেন মানে সবদিকে পিনপতন নীরবতা।
অধ্যক্ষ মহোদয়ের এক কন্যাও সেবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিলেন। কন্যা যে রুমে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন সে রুমে অধ্যক্ষ মহোদয় ঢুকেই লক্ষ করলেন মেয়েটি পাশের আসনের অন্য এক পরীক্ষার্থীর সাথে ইশারায় কথা বলছেন। হয়তো ভেবেছিলেন, বাবা এসেছেন, কি আর হবে? কিন্তু না, এই বাবা যে সেই বাবা না তা মেয়েটার বুঝতে বাকি ছিল।
অধ্যক্ষ মহোদয় সরাসরি মেয়ের কাছে গিয়ে তাঁর খাতা এবং প্রশ্নপত্র ছিনিয়ে নিলেন। সাথে সাথে কন্যা কান্না করে বাবার পায়ে পড়লেন। কিন্তু, লাভ হলো না। তিনি ওর খাতা এবং প্রশ্নপত্র শিক্ষকের টেবিলে রেখে ওই কক্ষে দায়িত্বরত এক শিক্ষককে নির্দেশ দিলেন পনেরো মিনিট পর মেয়েকে খাতা ফেরত দিতে। তারপর, খুব দ্রুতই কক্ষ ত্যাগ করলেন।
বাংলাদেশে এমন শিক্ষক আজকাল দেখা যায় কি?
[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৩৬