মানসিক রোগ! =
নিউইয়র্কে বসবাস করেন আমার এ সুহৃদ। শ্বশুর অসুস্থ শুনে দেশে গেলেন। ফিরেও এসেছেন। ফোন দিলাম মুরুব্বির অবস্থা জানতে।
বয়স পঁচাত্তর হতে আশির ভেতরে। চলাফেরায় সমস্যা নেই। তাঁর করোনা হয়নি, তবে করোনায় মানসিকভাবে আক্রান্ত তিনি। যাঁকেই কাছে পান হাত ধরে ক্ষমা চান। বারবার ক্ষমা চান। বলেন, 'আমি আপনার অনেক ক্ষতি করেছি, আমাকে খাস দিলে মাফ করে দেবেন।' বারবার প্রশ্ন করে আসলেই মাফ করেছেন কিনা তাও নিশ্চিত করেন।
আমার এই সুহৃদের সাথে জীবনে দেখা হয়েছে নাকি কেবল তিনবার। তাও, স্বল্প সময়ের জন্য। তারপরও তাঁর হাত ধরে বারবার মাফ চাইছেন। ওই একই কথা বলে, 'আমি আপনার অনেক ক্ষতি করেছি, .....' মুরুব্বীকে বাড়িতে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। নইলে রাস্তাঘাটে ঘোরাঘুরি করে অপরিচিতের কাছেও মাফ চাইতে থাকেন।
তিনি কি কাজ করতেনা জানতে চাইলে জানা গেল, প্রথম জীবনে কয়েকবছর ঠিকাদারি ব্যবসা এবং পরবর্তীতে দীর্ঘদিন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় ছিলেন। জমি দখল, কেনাবেচা, ফ্ল্যাট নির্মাণ, বিক্রয়, ইত্যাদি। এখন তাঁর বড়ো ছেলে ওসব দেখভাল করেন। মুরুব্বি স্থানীয় রাজনীতির সাথেও জড়িত ছিলেন।
সবদিক বিবেচনায় বলা চলে বেশ সফল এক মানুষ তিনি। কারো কাছে প্রয়োজনে মাফ চাওয়া দোষের কিছু নয়, বরং উদারতা। কিন্তু এই মুরুব্বি যেভাবে মরিয়া হয়ে মানসিক রোগীদের আদলে মাফ চাইছেন তা সত্যিই উদ্বেগের। নিশ্চয়ই এ ধরণের অস্বাভাবিক আচরণে তাঁর অতীত কর্মকান্ডের প্রভাব রয়েছে!
চলুন, আমরা আজকের দিনটিতে যে কাজগুলো করছি তা নিয়ে নতুন করে ভাবি। কৃতকর্মের কারণে শেষ বয়সে যেন মানসিক রোগ আবার পেয়ে না বসে।
ML Gani
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:০৭