somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইদ্দত পালনের বিধানটি শুধু প্রাসঙ্গিকই নয়, সাইন্টিফিকও বটে-

২৬ শে মে, ২০১১ রাত ১০:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পবিত্র কোরআনের (৬৫:০৪) নং আয়াতে তালাকপ্রাপ্তা যেসব নারীরা ঋতুর বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় বা অন্য কোন কারণে নিয়মিত মাসিকের ব্যাপারে নিরাশ হচ্ছে এবং যে নারীরা ঋতুবতী হয়নি, উভয়ের ক্ষেত্রেই তিন মাস ইদ্দত পালনের বিষয়টি এসেছে-
সূরা তালাক্ক (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৬৫:০৪) অর্থ- তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা মাসিকের ব্যপারে নিরাশ হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস, এবং যাদের এখনও মাসিক শুরুই হয়নি, তাদেরও (অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে)গর্ভবতী নারীদেইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
সূরা আল বাক্বারাহ (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০২:২৩৪) অর্থ- এবং যারা মৃত্যুবরণ করে তোমাদের মধ্য হতে এবং (যারা) ফেলে রেখে চলে যায় নিজেদের স্ত্রীদেরকে, তখন তাদের (স্ত্রীদের) উচিত হলো নিজেদেরকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন তারা নিজেদের ব্যাপারে ন্যায়সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে তোমাদের কোন পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।
(০২:২৩৫) অর্থ- এবং তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই যদি তোমরা সেই নারীদের বিয়ে করার আভাস দাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ, আল্লাহ জানেন যে, তোমরা অবশ্যই তাদের স্মরণ করবে। কিন্তু বিধিমত সম্মানজনক কথাবার্তা ছাড়া তাদের সাথে গোপনে অঙ্গিকার করবে না এবং বিবাহবন্ধন পাকাপাকি করবে না, যতক্ষণ না নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত হয়। আর একথা জেনে রেখো যে, আল্লাহ তোমাদের সম্পর্কে জানেন, অতএব তাঁকে ভয় করতে থাক এবং জেনে রেখো, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও ধৈর্য্যশীল।

স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর মানসিক অবস্থাকে সামলে নেয়ার জন্য ইদ্দত পালনের এই চার মাস দশ দিন সময়টুকু বিশেষ প্রয়োজন বলে অনেকে অভিমত প্রকাশ করেছেন। (৬৫:০৪) নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, "গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত।" সুতরাং পারিপার্শ্বিক অবস্থাকে সামলে নেয়ার পাশাপাশি প্রকৃত অর্থে মহিলাটি গর্ভবতী কিনা তা ইদ্দত পালনের এ সময়ের মধ্যেই পরিষ্কারভাবে বোঝা সম্ভব হয়। যেহেতু গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। তাই বিধবা মহিলাটি গর্ভবতী কিনা সে বিষয়ে সন্দেহমুক্ত হবার জন্য এই সময়সীমা বেধে দেয়া হয়েছে। ইদ্দত পালনের সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পর অর্থাৎ নিজেকে অপেক্ষা করিয়ে রাখার পর গর্ভবতী নয় তা নিশ্চিত হলে তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা মহিলাটি ইচ্ছে করলে যথারীতি বিয়ে করার অধিকার রাখেন এবং ইদ্দতের সময়কাল পূর্ণ হলে বিধিমত তাদেরকে বিয়ে করায় কোন দোষ নেই। তবে তার আগে অর্থাৎ ইদ্দত পালনকালে সম্মানজনক পন্থায় তাদেরকে বিয়ে করার ইচ্ছা জানানো যেতে পারে। কিন্তু এর বেশি কিছু নয় অর্থাৎ ইদ্দতের নির্ধারিত সীমা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের সাথে কোন গোপন অঙ্গিকার কিংবা বিবাহবন্ধন পাকাপাকি করা যাবে না।

তালাকপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে যারা মাসিকের ব্যপারে নিরাশ হচ্ছে কিংবা যাদের এখনও মাসিক শুরুই হয়নি, তারা গর্ভবতী নয় এরূপ নিশ্চিত হলে তিন মাস ইদ্দত পালনের পর ইচ্ছে করলে সেই তালাকপ্রাপ্ত মহিলারা যথারীতি বিয়ে করার অধিকার রাখেন। কিন্তু দেখা যায় যে, অনেকে (৬৫:০৪) নং আয়াতের বক্তব্যের এই অংশটুকু [এবং যাদের এখনও মাসিক শুরুই হয়নি, তাদেরও (অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে)] সম্পর্কে দ্বিধায় আছেন। তারা হয়ত ভাবেন যে, ঋতুবতী না হলে কোন নারীর পক্ষে গর্ভবতী হওয়া সম্ভব না। অনেকে এই আয়াতটির উপর ভর করে বাল্য বিবাহকে হালাল ভাবেন এবং শিশু কনেদের মাঝে বিয়ে সম্পর্কে সঠিক বোধ জন্মানোর আগেই তাদেরকে বিয়ের নামে নাযায়েজ পন্থায় শারিরিক ও মানসিক নির্যাতনের পথে ঠেলে দিতেও দ্বিধা করেন না। আবার অনেকে সঠিকভাবে বোঝার চেষ্টা না করেই এটি নিয়ে কটাক্ষও করেন।

প্রকৃত অর্থে ইদ্দত পালনের এই বিধানটি নিয়ে এরূপ ধর্মান্ধ কিংবা বিরূপ আচরণ করার কোন স্কোপই নেই, বরং এটি যে খুবই প্রাসঙ্গিক ও সাইন্টিফিক- সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে সকল ধর্মানুরাগী চিন্তাশীল পাঠকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এই বিষয়টি বুঝতে হলে প্রথমত আল-কোরআনে বিয়ের বয়স সম্পর্কে কি বক্তব্য এসেছে তা পর্যালোচনা কোরে দেখতে হবে-
সূরা নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:০৬) অর্থ:- আর এতীমদের প্রতি বিশেষভাবে নজর রাখবে- যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে, তখন তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ আঁচ করতে পারলে, তবেই তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পণ করতে পার। এতীমের মাল প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ করো না বা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা স্বচ্ছল তারা অবশ্যই এতীমের মাল খরচ করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সঙ্গত পরিমাণ খেতে পারে। যখন তাদের হাতে তাদের সম্পদ প্রত্যার্পণ কর, তখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্যই আল্লাহ হিসাব নেয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট।

দেখা যাচ্ছে যে, (০৪:০৬) নং আয়াতে বিয়ের বয়সে উপনীত হবার কথা বলতে গিয়ে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ ঘটেছে কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। যদিও এখানে এতিমদের উদ্দেশ্য কোরে বক্তব্য প্রদান করা হয়েছে। অভিভাবকহীন থাকায় সমাজে এতিমদের ক্ষেত্রে যেহেতু পদে পদে বঞ্চিত হবার সম্ভাবনা থাকে, তাই তাদের বিষযটি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে অন্যদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশটি উপেক্ষা করতে হবে, এমনটি ভাবা ঠিক নয়। যেহেতু এই নির্দেশটি বিয়ের সাথেই সংশ্লিষ্ট। তাই এতিমদের তো বটেই, সেইসাথে অন্য সবার বিয়ের ব্যাপরে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রেও এটি আমলে নেয়া চাই। পরিবারে পিতা-মাতাই সবচেয়ে বড় অভিভাবক। তাই তাঁরা উপস্থিত থাকার পরও যদি অজ্ঞতা প্রসূত সিদ্ধান্ত নেবার কারণে কোন সন্তানকে বঞ্চনা সইতে হয় এবং তাদের অধিকার ক্ষুন্ন হয়, তাহলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট অভিভাককেই নিতে হবে।

এখানে সম্পদ হস্তান্তরের বিষয়টি এসেছে। আমরা জানি যে, বুদ্ধি-বিবেচনা করার যোগ্যতা না থাকলে সম্পদ রক্ষা করা এবং তার সদ্ব্যবহার করা বেশ কঠিন ব্যাপার। এমন কি বিচক্ষণতার অভাবে সম্পদহারা হয়ে পথে বসার মত পরিস্থিতিতে পড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। তাই এ ধরনের পরিস্থিতিতে যেন তারা না পড়ে সেজন্য উপায় বলে দেয়া হয়েছে। বাকিটা তো আল্লাহতায়ালার ইচ্ছা। সম্পদের হেফাজত করা যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তেমনি সাংসারিক জীবনে পারিবারিক দায়িত্ব পালন করাও তার চেয়েও বেশি গুরুত্ব বহন করে। তাই বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ ঘটার জন্য উপযুক্ত বয়সে উপনীত হবার বিষয়টি সবার ক্ষেত্রেই বিবেচনা করার দাবি রাখে।

আল-কোরআনে বিয়ের বয়স হিসেবে নির্দিষ্ট কোন বয়সের কথা বলা হয়নি। তবে অনেকে মাসিক শুরু হওয়াকে, আবার অনেকে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সকে বিয়ের বয়স হিসেবে নির্ধারণের জন্য তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। বিয়ের বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়া না হলেও আল- কোরআনের (০৪:০৬) নং আয়াতে বিয়ের বয়সের উপযুক্ততা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। সাধারণ ভাবে বুদ্ধি-বিবেচনার উন্মেষ এবং দৈহিক বৃদ্ধি সাধন একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে কোন ইসলামী রাষ্ট্রের সরকার যদি পুরুষ ও নারীর জন্য গ্রহণযোগ্য বিয়ের বয়স নির্ধারণ করে দেন, তাহলে রাষ্ট্রের সামগ্রিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে বৃহত্তর স্বার্থে তা মেনে চলা যেতে পারে। আবার মাসিক শুরুর আগে মেয়েদের বিয়ে দেয়া যাবেনা- এমন নির্দেশ আল-কোরআন ও হাদিছে নেই। তাই এ বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রাখার উপায় নেই। তবে কোন দেশের ইসলামি শাসক কর্তৃক বিয়ের বয়স নির্ধারণ করে দেয়া হলে তা লঙ্ঘনের পূর্বে যৌক্তিক কারণ দেখিয়ে পূর্বানুমতি নেয়া উচিত। তা না হলে সরকার রাষ্ট্রের আইন ভঙ্গের কারণে শাস্তি দেয়ার বা জরিমানা করার অধিকার রাখে।

সঙ্গত কারণে মাসিক হওয়ার পূর্বেই কোন নারীর বিয়ে হলে এবং কোন কারণে সে তালাকপ্রাপ্তা হলে আল-কোরআনে তাকেও তিন মাস ইদ্দত পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে- যে নারীর এখনও ঋতুকাল শুরুই হয় নাই, তাকে ইদ্দত পালন করতে হবে কেন?

এর উত্তর দেয়ার আগে রাসূল (সাঃ) ও আয়শা (রাঃ) এর মধ্যকার বৈবাহিক সম্পর্কের বিষয়টি সংক্ষেপে তুলে ধরতে চাই। আল্লাহ তায়ালা আবুবকর (রাঃ) এর আদরের কন্যা আয়শা (রাঃ) -কে রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ করার মাধ্যমে তাদের মাঝে আত্মীয়তার বন্ধনকে সুদৃঢ় করার সাথে সাথে ইসলামের খেদমত করার জন্য নিয়োজিত করেছিলেন। হযরত আবুবকর (রাঃ) এবং রাসূলুল্লাহর (সাঃ) মধ্যে এমনই ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল যে তাঁরাও মনে মনে এই সম্পর্ককে আত্মীয়তার বন্ধনে রূপ দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করতেন। রাসূল (সাঃ) এর সাথে বাগদান সম্পন্ন হওয়ার সময় আয়শা (রাঃ) এর বয়স কম ছিল। তাঁরা বিবাহিত জীবন যাপন শুরু করেছিলেন বাগদানের বেশ কয়েক বছর পরে।

Saheeh al-Bukhari, Volume 7, Book 62, Number 64
'Aa'ishah, may God be pleased with her, narrated that the Prophet was betrothed (zawaj) to her when she was six years old and he consummated (nikah) his marriage when she was nine years old, and then she remained with him for nine years.

হাদিছ গ্রন্থে সন্নিবেশিত হযরত আয়শা (রা) এর বক্তব্যে তাঁর বিবাহকালীন বয়সের একটি চিত্র সংক্ষেপে পেশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিয়ের সময় ও বিবাহিত জীবন যাপন শুরুর সময় আয়শা (রাঃ) এর প্রকৃত বয়স ঠিক কত ছিল তা ইতিহাসের পাতা থেকে খতিয়ে দেখা যেতেই পারে। হযরত আয়শার (রাঃ) বক্তব্যটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানের কারণে বর্ণনাকারীর শব্দ প্রয়োগ জনিত ও উচ্চারণগত ত্রুটি কিংবা বোঝার ভুলের কারণে বয়সের হিসেব করতে গিয়ে ঊনিশ-বিশ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কিন্তু তারপরও খুব বেশি অসামঞ্জস্যতা নেই বলেই মনে হয়। রাসূলের (সাঃ) জীবন যে আল-কোরআনের বাস্তব প্রতিফলন ছিল সে বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। সুতরাং নিঃসন্দেহে আল-কোরআনের বক্তব্য অনুসারে সে সময় আয়শা (রাঃ) শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত ছিলেন বলেই তো রাসূল (সাঃ) তার সাথে বিবাহিত জীবন যাপন শুরু করেন। তবে আমাদের ভুললে চলবে না যে, শুধুমাত্র সংসার ধর্ম করার জন্যই নয়, বরং এর পাশাপাশি বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে মহান আল্লাহর ইচ্ছানুসারেই রাসূল (সাঃ) তাঁর যোগ্য পত্নী হিসেবে আয়শাকে (রাঃ) চয়ন করেছিলেন। ঐতিহাসিক তথ্য ও উপাত্তের উপর ভিত্তি করে এখানে যেভাবে বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে তা দেখে নিতে পারেন- What was Ayesha’s (ra) Age at the Time of Her Marriage? - (১)

এবার এ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত বাস্তব ও ব্যতিক্রমী উদাহরণ তুলে ধরছি-
বর্তমান সময়ের স্বল্পবয়স্ক বা কমবয়সী দশজন পিএইচডি অর্জনকারী প্রতিভাধরের নাম আমরা মোটামুটি সবাই জানি (The 10 Youngest PhDs of All Time- ২- A, B) । কালের প্রবাহে মাঝে মাঝে এ ধরনের ব্যতিক্রমী মানুষের আগমন অন্যসব সাধরণের মধ্য থেকে তদেরকে আলাদা করে ভাবতে সেখায়। স্রষ্টা তাঁর ক্ষমতাকে মাঝে মাঝে এভাবেই আমাদের সামনে প্রকাশ করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেন। এ ধরনের মানুষের আগমন আগেও যেমন ঘটেছে, তেমনি এখনও ঘটছে এবং হয়ত ভবিষ্যতেও ঘটবে। এই সব জলজ্যান্ত প্রমাণকে অস্বীকার কিংবা উপেক্ষা করার উপায় নেই।

এই দশজনের মধ্যে সবাই প্রতিভাধর হলেও তাদের মধ্যেও ব্যতিক্রম আছে। যেমন "Kim Ung-Yong" এতই প্রতিভাধর ছিলেন যে, তিনি মাত্র তিন বছর বয়সে Hanyang ইউনিভার্সিটির পদার্থবিদ্যা বিভাগের একজন সম্মানিত অতিথি ছাত্রের খাতায় নাম লেখান। যা আমরা চিন্তাও করতে পারি না। শুধু তাই নয়, সাত বছর বয়সে নাসায় রিসার্চ করার জন্য আমেরিকার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তার জন্মভূমি কোরিয়া থেকে তাকে সসম্মানে নিয়ে যাওয়া হয়। (Kim was a guest student of physics at Hanyang University from the age of 3 until he was 6. At the age of 7 he was invited to America by NASA. He finished his university studies, eventually getting a Ph.D. in physics before he was 15) - (৩)

উম্মুল মু'মিনিন হযরত আয়শা (রাঃ) যে সেই সময়কার একজন প্রতিভাধর ব্যতিক্রমী নারী ছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। মহান আল্লাহতায়লার ইচ্ছায় অন্যদের চাইতে বেশ কম বয়সেই তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জন্য উপযুক্ত হিসেবে গড়ে ওঠেন। সকল কালের সকল নারীর পক্ষ থেকে তিনি এক মহান কর্ম সাধনের জন্য নিজেকে নিবেদন করেছিলেন। বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহর (সাঃ) মহান বিদ্যাপিঠে সরাসরি তাঁরই তত্বাবধানে রেখে ইসলামের মহান আদর্শকে আত্মস্থ ও ধারণ করানোর জন্যই মহান আল্লাহ তাকে মনোনিত করেন। তারই ফলশ্রুতিতে সেই আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তিনি আ্মরণ নিরলসভাবে সচেষ্ট ছিলেন। অল্প বয়স থেকেই তিনি তুখোড় স্মরণশক্তি, বুদ্ধিমত্তা ও প্রতিভার যথেষ্ট স্বাক্ষর রেখেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়! একালের কম বয়সী দশজন প্রতিভাধরকে ব্যতিক্রমী ও অসাধারণ হিসেবে মেনে নিতে পারলেও নবীপত্নী আয়শার (রাঃ) বেলায় অনেকেই নাক সিটকান। হাস্যরস ও বেহুদা কথা বলতেও তাদের বাধে না। কোরিয়ার বিস্ময় শিশু "কিম-উং-ইওং" -কে ৩ বছর বয়সে ইউনিভার্সিটিতে পদার্থবিদ্যা বিভাগে অতিথি ছাত্র হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হলে এবং ৭ বছর বয়সে নাসায় রিসার্চ করার জন্য আমেরিকার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে যাওয়া হলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায় না। শুধু ইসলামের বেলাতেই ভাল কোরে না জেনে চোখ কান বন্ধ রেখে মিথ্যাচার করার পাঁয়তারা করা হয়।

এই ব্যতিক্রমী ঘটনাগুলো সাধারণের সাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়। বিশ্ব জনসংখ্যার হিসেবে তাদের শতকরা হার অতীব নগণ্য। কাজেই তাদের সম্পর্কে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের নিয়ম থেকে একটু ভিন্নভাবেই ভাবতে হবে। তা না হলে সবই গোঁজামিল ঠেকবে। চাক্ষুষ প্রমাণ সাপেক্ষ সত্যকেও তখন মিথ্যা কিংবা অবাস্তব বলেই মনে হবে। সুতরাং আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে, রসূল (সোঃ) এর জীবনে এমন কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে এবং যা মহান আল্লাহর নির্দেশ অনুসারেই ঘটেছে এবং এমন কিছু নির্দেশ আছে যেগুলো একান্তভাবে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের জন্যই নির্দিষ্ট ছিল।

আয়শা (রাঃ) এর বয়স নির্ধারণ করা আমার এই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু নয়। হাদিছ গ্রন্থে সন্নিবেশিত খোদ আয়শার (রাঃ) এই বক্তব্য থেকে অন্তত এটুকু বোঝা যায় যে, মহান আল্লাহর ইচ্ছায় বিয়ে পাকাপাকি হয়ে গেলেও তাঁরই নির্দেশ অনুসারে আয়শা (রাঃ) শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার উদ্দেশ্যেই রাসূল (সাঃ) তার সাথে বিবাহিত জীবন শুরু করার ক্ষেত্রে সময় নিয়েছিলেন। রাসূল (সাঃ) এর সাথে সংসার জীবন শুরু করার পূর্বে আয়শা (রাঃ) মূলত তাঁর পিতা হযরত আবুবকর (রাঃ) এর বাসাতেই থাকতেন। রাসূল (সাঃ) এর জীবনের এই অংশটি থেকে আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবনে আর্থ-সামাজিক, ভৌগলিক ও বায়োলজিকাল ইত্যাদি কারণে উদ্ভূত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে অভিভাবক মহলের পক্ষ থেকে কম বয়সে বর-কনের মধ্যে বিয়ে ঠিকঠাক কোরে রাখার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কোন বিশেষ কারণে কম বয়সে বিয়ের কথাবার্তা হয়ে গেলেও শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বিবাহিত জীবন শুরু না করার ইংগিত এই ঘটনার মধ্যে রয়েছে। তাছাড়া যতটুকু জানা যায়, রাসূল (সাঃ) তাঁর কন্যা ফাতিমার (রাঃ) বিয়েও ১৮ বছর বয়স হবার পরই দিয়েছিলেন। রাসুল (সাঃ) নিজেও যেমন তাঁর কোন স্ত্রীর সাথে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত বিবাহিত জীবন যাপন শুরু করেন নাই, তেমনি কাউকে তা করার জন্য কখনও উদ্বুদ্ধ করেছেন বা শিশু বয়সে কারও বিয়ে দেবার ব্যবস্থা করেছেন বলে কোন প্রমাণও নেই।

ইসলামে বিবাহ সম্পাদনের বিষয়টি মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক শুরুর সাথে সম্পর্কিত নয়। তবে অর্থনৈতিক সামর্থের কথা বাদ দিলে বিবাহিত জীবন যাপনের বিষয়টি অবশ্যই একজন পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত হবার সাথে সম্পৃক্ত। আবার মানসিক বিকাশের বিষয়টি নিজস্ব সক্ষমতার পাশাপাশি পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপরেও অনেকাংশে নির্ভরশীল। অপরের উপরে নির্ভরশীলতা মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে একটা বড় অন্তরায়। যেসব ছেলে-মেয়েরা যত তাড়াতড়ি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ পায়, তাদের মানসিক বিকাশও তত তাড়াতাড়ি সাধিত হতে দেখা যায়। শুধু তাই নয় শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও থাকতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে এই বিকাশ সাধন এতই দ্রুততার সাথে হতে দেখা যায় যে তখন তা অন্য দশজন সাধারণের সাথে তুলনা করা চলে না।

আমরা আয়শা (রাঃ) এর তুখোড় স্মরণশক্তি ও মেধার কথা বিভিন্ন বর্ণনা থেকে জানতে পারি। হাদিছ বর্ণনা ও রাসূলের (সাঃ) ওফাতের পর বিভিন্ন সমস্যা সামাধানে তাঁর অসাধারণ বুদ্ধিমত্তা ও প্রাজ্ঞতার যথেষ্ট প্রমাণ তিনি রেখেছেন। বিবাহিত জীবন শুরুর সময় আয়শা (রাঃ) এর প্রকৃত বয়স নিয়ে অবিশ্বাসীরা অবিবেচকের মত যেরূপ হাস্য-রস করে তা মোটেই যৌক্তিক নয়। আল্লাহতায়ালা সেই বয়সেই যে তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে রাসূলের (সাঃ) জন্য উপযুক্তভাবেই গড়ে তুলেছিলেন তাতে কোনই সন্দেহ নাই। রাসূলের (সাঃ) জন্য আয়শা (রাঃ) এবং তাঁর জন্য রাসূল (সাঃ) পারফেক্ট ছিলেন বলেই তো তাঁদের মাঝে বোঝাপড়া ও পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতি অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ ও মধুর ছিল। আয়শা (রাঃ) জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রাসূলের (সাঃ) পাশেই ছিলেন এবং তাঁরই কোলে মাথা রেখে রাসূল (সাঃ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সংসার জীবনে আপনজনের সাথে ছোট-খাট ভুল বুঝাবুঝি থেকে শুরু করে বেশ গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতেই পারে। রাসূল (সাঃ) ও আয়শার (রাঃ) মাঝে অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক ছিল এবং তাদের জীবনেও এরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। মহান আল্লাহতায়ালা স্বয়ং রাসূলের (সাঃ) জীবনে এ ধরনের পরিস্থিতির অবতারণা করেছেন এবং ঐশী বাণী পাঠিয়ে পরোক্ষভাবে ইমানদার মানুষকে তার বাস্তব সমাধানও জানিয়ে দিয়েছেন।

সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার পূর্বে একজন নারীর শরীর সুগঠিত হতে শুরু করে এবং শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন গুলো বেশ দ্রুত ঘটতে থাকে। এই পরিবর্তন সবার ক্ষেত্রে একই রকম নাও হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে শারীরিক বৃদ্ধিসাধন ও মানসিক পরিপক্কতা বেশ দ্রুত ঘটলেও পারিপার্শ্বিক অবস্থা, পুষ্টিহীনতা, হরমোনের অসামঞ্জস্যতা বা বংশগত স্বাভাবিক কারনে প্রথম মাসিক বা ঋতুস্রাব শুরু হতে বেশ সময় লাগতে পারে। আমাদের দেশের মেয়েদের মাসিক শুরু হয় সাধারণত ১০ - ১২ বছর বয়সে। তবে দেখা গেছে শারীরিক ও মানসিকভাবে পূর্ণতা প্রাপ্ত ২০ - ২২ বছর বয়স্কা নারীর ক্ষেত্রেও ঋতুকাল শুরু না হবার ঘটনা বিরল নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৯০% মেয়েদের মাসিক সাধারণত ১৩.৫ বছর বয়সে শুরু হলেও এর সর্বোচ্চ সময়সীমা প্রায় ১৭ বছর ধরা হয়। এরপর শুরু না হলে মেডিকেল চেকআপের এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা নেবার পরামর্শ দেয়া হয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না এবং এমনিতেই বা সমান্য চিকিৎসায় এর সমাধান হয়ে যায়। সুতরাং সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালা সঙ্গত কারণেই ঋতুকাল শুরু হওয়া বা না হওয়াকে বিবাহিত জীবন যাপনের উপযুক্ততার মাপকাঠি হিসেবে নির্ধারণ করে দেন নাই। কারণ তাহলে যেসব মুসলিম নারীদের ঋতুকাল বংশগত ভাবেই দেরিতে শুরু হওয়ার টেন্ডেন্সি রয়েছে, তাদের বয়স বৃদ্ধি পেলেও ঋতুবতী না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করা মুশকিল হয়ে পড়ত। তাই ঋতুস্রাব শুরুর পূর্বে বিবাহিত জীবন আরম্ভ করা যাবেই না, এমনটি ভাবা ঠিক নয়। তবে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিয়ের জন্য সে উপযুক্ত কিনা তা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এবং আল-কোরআনের নির্দেশ ও রাসূলের (সাঃ) সুন্নতও তাই।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য- (৬৫:০৪) নং আয়াতে বলা হয়েছে যে, "যারা মাসিকের ব্যপারে নিরাশ হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস।" এই নির্দেশনার মাধ্যমে মূলত এই বিষয়টি বোঝানো হয়েছে যে, স্ত্রী ঋতুবতী হোক বা না হোক, তার মাসিক হবার বয়স পেরিয়ে যাক বা না যাক, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক ছিল বলে বিন্দুমাত্র কোন সম্ভাবনা অর্থাৎ সন্দেহ থাকলে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকে নির্ধারিত মেয়াদ অনুসারে অবশ্যই ইদ্দত পালন করতে হবে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে- সন্দেহ হবার মত কোন কারণ না থাকলে অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগেই তালাক হয়ে গেলে ইদ্দত পালনের ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা থাকবে কি?

এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য (৩৩:৪৯) নং আয়াতের বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন-
সূরা আহযাব (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-৯০)
(৩৩:৪৯) অর্থ:- হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা বিশ্বাসী নারীদেরকে বিবাহ করার পর তাদেরকে স্পর্শ করার পূর্বেই তালাক দিয়ে দাও, তখন তাদেরকে ইদ্দত পালনে বাধ্য করার অধিকার তোমাদের থাকবে না। তোমরা তাদেরকে কিছু দেবে এবং সৌজন্যের সাথে তাদের বিদায় দেবে।

এই আয়াতের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের কাছাকাছি এলে অর্থাৎ তাদের মাঝে স্বামী-স্ত্রীর মত নিবিড় সম্পর্ক হলে অবশ্যই ইদ্দত পালন করতে হবে। কিন্তু তারা পরস্পরকে স্পর্শ করার আগেই অর্থাৎ তাদের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগেই কোন অনভিপ্রেত কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেলে ইদ্দত পালন করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না।

অনেকের বদ্ধমূল ধারনা,ঋতুবতী হওয়ার আগে কোন নারীর পক্ষেই গর্ভধারণ করা সম্ভব না। তাদের জানাতে চাই যে, ঋতুবতী হওয়ার আগেই স্বামীর সাথে বসবাসরত কোন বিবাহিত নারীর গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া ঠিক নয়। কারণ তাদের ক্ষেত্রেও গর্ভবতী হবার বাস্তব প্রমাণ রয়েছে এবং বিজ্ঞানও তাই বলে-

Menarche- is the first menstrual cycle, or first menstrual bleeding, in female human beings. From both social and medical perspectives it is often considered the central event of female puberty, as it signals the possibility of fertility. - (৪)

Relation to fertility- On the other hand, not every girl follows the typical pattern, and some girls ovulate before the first menstruation. Although unlikely, it is possible for a girl who has engaged in sexual intercourse shortly before her menarche to conceive and become pregnant, which would delay her menarche until after the birth. This goes against the widely held assumption that a woman cannot become pregnant until after menarche. - (৫)

সুতরাং বিবাহিত নারীদের মধ্যে যারা ঋতৃবতী হয়নি অর্থাৎ যাদের মাসিক শুরুই হয়নি তাদের ক্ষেত্রেও ইদ্দত পালনের বিধানটি মোটেই অপ্রাসঙ্গিক নয়।

মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালা সর্বজ্ঞ। তিনি যা জানেন আমারা তা জানিনা। আর তিনি যতটুকু আমাদের জানাতে চান, ততটুকুই আমরা জানতে পারি। মাসিক শুরু না হলেও একজন নারীর গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা থাকে এবং এই সত্য তথ্যটি আজ আমরা বিজ্ঞানের সহায়তায় জানতে পারছি। অথচ মাসিক হয়নি এরূপ বিবাহিত নারীদের জন্যও ইদ্দত পালনের নিয়ম ও সময়সীমা স্বয়ং স্রষ্টা আল-কোরআনে অনেক আগেই আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। সেই সাথে বুদ্ধি-বিবেচনা করার মত উপযুক্ত বয়স হবার পরই বিয়ে দেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ঋতুবতী নয় এরূপ তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারীর ইদ্দত পালনের বিধানের অযুহাতে যেন কোন কচি শিশুকে বিয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের ফন্দি-ফিকির করা না হয় সেই পথও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিশ্বাসীদেরকে সৎপথে পরিচালিত করার জন্য মহান স্রষ্টা আল-কোরআনে মানুষের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বিবিধ বিষয় সম্পর্কে মৌল জ্ঞান দান করেছেন। এগুলো সঠিকভাবে মেনে চলার মধ্যেই মানবজাতির সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
-------------------------------
তথ্যসূত্র-
১)http://www.islamawareness.net/FAQ/what_was_ayesha.html
২)A)http://www.onlinecolleges.net/2012/04/02/the-10-youngest-phds-of-all-time/
B)http://www.gradschoolhub.com/10-youngest-people-ever-to-achieve-a-doctorate-degree/
৩)http://www.woosk.com/2009/04/kim-ung-yong-attended-university-at-age-4-phd-at-age-15-worlds-highest-iq.html
৪)http://en.wikipedia.org/wiki/Menarche
৫)http://en.wikipedia.org/wiki/Menarche#Relation_to_fertility
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৪
৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×