নিউটন মণ্ডলঃ নয় দিন আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি স্বরূপ নভেনা শেষে মহা আড়ম্বর, উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারস্থ পবিত্র ক্রুশের গির্জা’র পর্বোৎসব পালন করা হয়। পাশাপাশি ৬৭ জন ছেলে-মেয়ে হস্তার্পণ সংস্কার গ্রহণের মাধ্যমে হৃদয়ে পবিত্র আত্মাকে গ্রহণ করে। তাই ধর্মপল্লীর জন্য দিনটি ছিল বিশেষ আশীর্বাদের ও আনন্দের দিন। পর্বোৎসবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহাধর্মপ্রদেশের সহকারি বিশপ থিওটোনিয়াস গমেজ, সিএসসি, ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার জেমস শ্যামল গমেজ, সিএসসি, সহকারি পাল-পুরোহিত ফাদার অমল রোজারিও, সিএসসি, ফাদার ডেভিড বোরাল, সিএসসি, খুলনা ধর্মপ্রদেশের ফাদার আলবিনো সরকার এবং ফাদার বাপ্পি এন. ক্রুজ।
ধর্মপল্লীর উদ্যোগে প্রায় দুই মাস যাবৎ আরএনডিএম ও এমসি সিস্টারগণ হস্তার্পণ সংস্কারের প্রার্থীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ ও আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত করে তোলেন। ১৮ সেপ্টেম্বর খ্রিস্টযাগের শুরুতেই হস্তার্পণ সংস্কার প্রার্থীরা বিশপ মহোদয় ও পুরোহিতগণের সঙ্গে শোভাযাত্রা সহযোগে গির্জা ঘরে প্রবেশ করেন। বিশপ মহোদয় তাঁর সহভাগিতায় বলেন, “লক্ষ্মীবাজার ধর্মপল্লী একটি প্রাচীন ও ঐহিত্যবাহী ধর্মপল্লী। এখানকার ইতিহাস প্রায় ১৩২ বছরের ঐতিহ্যমণ্ডিত। বিভিন্ন সময়ে অনেক পবিত্র মানুষ এই ধর্মপল্লীতে কাজ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন, বিশপ থিওটোনিয়াস অমল গাঙ্গুলী, সিএসসি”। তিনি হস্তার্পণ সংস্কার গ্রহণকারী প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “তোমরা যে বিশ্বাসপূর্ণ হৃদয়ে আজ যীশুকে অন্তরে গ্রহণ করতে যাচ্ছ, সেই একই বিশ্বাস তোমরা সারা জীবন অন্তরে জ্বেলে রাখবে”। খ্রিস্টযাগের পর ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার জেমস শ্যামল গমেজ, সিএসসি হস্তার্পণ গ্রহণকারী ছেলে-মেয়েদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সেই সাথে পর্বোৎসবকে সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পর্বীয় খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণকারী একজন যুবক তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আজ আমার জীবনে একটি আনন্দপূর্ণ দিন। বেশ কিছুদিন যাবৎ আমি খ্রিস্টযাগে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। ফাদার শ্যামল ফোন দিয়ে পর্বীয় নভেনায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। সাথে সাথে জাগতিকতায় মগ্ন না থেকে আধ্যাত্মিক জীবনে মনোনিবেশের পরামর্শ দেন। তার উপদেশ আমার কাছে নিরানব্বইটি মেষ প্রান্তরে ফেলে রেখে হারানো মেষটিকে খোঁজার মতো মনে হয়েছে। আজকের এই পর্ব দিনে শ্রদ্ধেয় ফাদারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি মনে করি তিনি এই ধর্মপল্লীর একজন উত্তম মেষপালক। তাঁর অনুপ্রেরণায় আজ আমি পর্বীয় আনন্দ উপভোগ করছি”।
এই বিশেষ দিনে লক্ষ্মীবাজার ধর্মপল্লীর খ্রিস্টভক্তগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানকে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬