নিউটন মণ্ডল: ৩১ মার্চ ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে বেলা ২.৩০ মিনিটে নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে মহান স্বাধীনতা দিবস এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্বাধীনতার ঘোষক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৬তম জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা, সিএসসি এবং দুই জন শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
স্বাগত বক্তব্যে ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা, সিএসসি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত বর্বরোচিত ও লোমহর্ষক নরহত্যার ইতিহাস সম্পর্কে আলোকপাত করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু হলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, দক্ষ, বিচক্ষণ ও নির্ভীক নেতা”। বঙ্গবন্ধুকে এই উপমহাদেশের এক বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, “তিনি কখনও কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি। শেখ মুজিব সারা বিশ্বে প্রতিবাদী কণ্ঠকে সোচ্চার করেছিলেন। যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন”। এরপর তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকলের আত্মার জন্য চিরশান্তি কামনা করেন।
অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জনাব জামিলুর রহমান খান ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার-এর জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি বিশ্লেষণপূর্বক এর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে বলেন, ১৯৭১ সালরে ১০ এপ্রিল তারিখে মুজিবনগর সরকার কর্তৃক জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের এক অনন্য দলিল এবং বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বৈধতার প্রমাণপত্র ও প্রথম আইনী সনদ। এই ঘোষণা পত্রেই স্বাধীনতা ঘোষণার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটি অত্যান্ত সুনিপুণ ভাবে বর্ণণা করা আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ নামক নবগঠিত রাষ্ট্রের ভিত্তি স্বরূপ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারকে সকল নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করণার্থে রাষ্ট্রীয় আদর্শিক ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে ইদাফ ইকবাল বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে বক্তব্য রাখেন এবং নিজেদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত, বিবেকবোধ ও স্বদেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে আদর্শ সৈনিকের ভূমিকা পালনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতা দিবসের উপর সংগীত, আবৃত্তি পরিবেশন করে। শিক্ষক মি: রেনেট জন পল গমেজের রচনা ও পরিচালনা এবং ড্রামা ক্লাবের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মহান স্বাধীনতাকে কেন্দ্র করে মঞ্চায়িত হয় বিশেষ নাটিকা “মুক্তি গাঁথা”। সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মিসেস তাসনুভা শারমিন অনুষ্ঠানটি সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং এই অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক মি: জ্যোতি এফ, গমেজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনু হত্যার নিন্দা জানান এবং এই দুঃখজনক ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবি জানান। অনুষ্ঠানে তনুর আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৮