গণতান্ত্রিক দেশে যখন সাধারণ জনগণ অধিকার বঞ্চিত হবে,জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে,ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দাপিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করবে স্বভাবিক ভাবেই জনগণ প্রতিবাদ জানাবে,আন্দোলন করবে,সভা সমাবেশ করবে। রাষ্ট্রে তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আর গণতান্ত্রিক দেশে এটাই স্বাভাবিক হওয়া বাঞ্চনীয়।
কিন্তু অপ্রিয় হলেও ভয়ংকর সত্য আমাদের দেশে কোন দলীয় প্রধান যদি ক্ষতার গদিতে বসে তখন উচ্চবাচ্যে জনগণের সকল ক্ষমতার উৎস বললেও জনগণকে ক্ষমতার বলয়ে বশ্যতা স্বীকার করাতেই তাদের প্রচেষ্টা সবসময়ই থাকে। ভোটের পর জনগণের সাথে সুসম্পর্ক না রাখা,জবাবদিহির কোন সুযোগ না দেয়া,সংবিধান তাদের ইচ্ছানুযায়ী রাতারাতি পরিবর্তন করা,ক্ষমতার দাপটে দাপিয়ে বেড়া,“যথেষ্ট হযেছে” কিংবা হুমকির সুরে কথা বলা ইত্যাদি।
একটা স্বতস্ফূর্ত,যৌক্তিক,জনগণের সমর্থন থাকার পরেও আন্দোলনের সময় কিংবা পরে যারা আন্দোলনে যোগ দিয়েছে তাদের হয়রানি,তাদের পরিবারকে হয়রানি করা কিংবা ধড়পাকড় অথবা মিথ্যা মামলা ঠুকে দেয়ার অর্থ কি দারায় ? এগুলো করে এমন ভাবে শাসানো হয়,শায়েস্তা করা হয়,ভয়ভীতি দেখানো হয় যেন আন্দোলনের নাম মুখে না আনা হয়,সরকার অস্বচ্ছ,অস্বাভাবিক,অসত্য,অরাজকতা,নৈরাজ্য যা করছে তা সব স্বচ্ছ,স্বাভাবিক,সত্য! এর বিরুদ্ধে কোন কথা বললে কিংবা আঙুল তুলা হলে ক্ষমতার বলয়ে তাদের একেবারে নিঃশ্বেষ,নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে!
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আন্দোকারীকে হাতুরি দিয়ে মেরুদন্ড ভেঙে দেয়ার প্রমাণ সহ গণমাধ্যমে আসলেও তাদের কোন বিচার হলো না উল্টো আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে রিমান্ডে নেয়া হলো। কি ভয়ংকর আশ্চর্য ক্ষমতার বলয় ভাবা যায়! “নিরাপদ সড়ক চাই” আন্দোলনে একই কায়দায় মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জেলে ঢুকিয়ে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে,বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইতিমধ্যে ধড়পাকড় শুরু হয়ে গেছে,মামলা দেয়া হচ্ছে। বিশ্ব গণমাধ্যমে স্বচ্ছ সত্য বলায় আলোকচিত্রী শহিদুলকে রিমান্ডে নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এই সাজনো মামলার মানে কি ? আমরা কি বুঝি না ? আন্দোলনের সংর্ঘের সময় ছবি তুলায় সাংবাদিকদের পেটানো হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই আন্দোলনে যা ঘটছে তা এককথায় সত্যকে অসত্য প্রমাণ করার এবং ধামাচাপা দেয়াতেই বেশি ব্যস্ততা দেখেছি । যা ক্ষমতাসীন দলের নেতা নেত্রীর বক্তব্যে স্পষ্টতা পাওয়া যায় !
আন্দোলন স্তমিত হওয়ার পর ক্ষমতাসীন দলের এরকম ভূইফোর অনিয়ম,শায়েস্তা করার হিংস্র মনোভাব গণতন্ত্রকে শুধু প্রশ্নবিদ্ধ করেই না সেই সাথে এদেশের জনগন যে ক্ষমতার উৎস নয় বশ্যতা স্বীকার করে আছে সেটাও প্রকাশ পায়......!!!!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৪৭