চিত্রঃ আমার মোবাইলের হোম স্ক্রিন
"যেদিন অগ্নিতে তাদের মুখ ওলট পালট করা হবে সেদিন তারা বলবে, হায়! আমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করতাম। "
আল কোর'আন ৩৩:৬৬
এটা একটা রিমাইন্ডার। এই মোবাইলের স্ক্রিনটা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দেয় আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ) এর আনুগত্য না করার ভয়াবহ পরিনতি। আমি দুনিয়াতে কয়েক সেকেন্ডের জন্যও আমার শরীরের কোন অংশ মোমবাতির আগুনে ধরে রাখতে পারি না। কিভাবে সহ্য করব! যখন আমার মুখ আগুনে ঝলসানো হবে।
এবার আনুগত্য বা দাসত্বের ব্যাপারে বলি। এই কিছুদিন আগেও মনে হত Slave of Allah শব্দটার মধ্যে আত্নহানীকর কিছু গন্ধ আছে। দাস শব্দটা কেমন যেন মনে হত এত বুদ্ধিমান প্রানী মানুষের সাথে যায় না।এত এত বুদ্ধির অধিকারী কিভাবে কারও অধীনে থাকতে পারে? এরকম ভয়ঙ্কর কিছু চিন্তা ভাবনা জেঁকে বসেছিল এই মস্তিষ্কে। পরে ভেবে দেখলাম আসলে আমরা খুব বেশী হিপোক্রেট। ধরি আমি একটা ইন্ডাস্ট্রিতে জব করছি। সেখানে খুব বুক ফুলিয়ে বলছি আমি এই কম্পানির এমপ্লয়ী। যদিও এটা এক প্রকার দাসত্বই। কিভাবে? আমি কিছু টাকার বিনিময়ে বসের প্রত্যেকটি কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বাধ্য। এক্ষেত্রে কখনও মনে হয় না যে, আমার এত এত স্কিল আছে, এত এত বুদ্ধি আছে তারপরও কেন আমি ইন্ডাস্ট্রির দাসত্ব করছি। কারন ঐযে, বললাম আমি কিছু টাকা মাস শেষে নিজের পকেটে পুরছি। অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বিনা মুল্যে আমাকে প্রতি মুহূর্তে অক্সিজেন দিচ্ছেন, রিজিক্বের ব্যবস্থা করছেন প্রত্যেকটা বেলাতে, দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষিত রাখছেন প্রত্যেকটা সেকেন্ডে। আত্মীয় স্বজনের ভালবাসা দিয়ে ভরিয়ে রেখেছেন সারাটা জীবন। এমনকি অবাধ্যতা করার সময়ও অক্সিজেনের সাপ্লাই বন্ধ করছেন না। শুধু এক বা দুইদিন না,কেউ কেউ জীবনের প্রায় পুরোটা সময় কাটিয়ে দিয়েছি অবাধ্যতায়। অথচ কি হাস্যকর দেখুন আমরা যে বুদ্ধিমত্তার বড়াইয়ে নিজেকে স্বাধীন হিসাবে মনে করছি, সেই বুদ্ধিমত্তাও তাঁরই দেওয়া। আর কত কিছু পেলে নিজেকে তাঁর দাস বলতে এবং মানতে কুণ্ঠাবোধ হবে না? অথচ আমি যদি আমার অফিসে একদিন কামাই করি এর জন্য শুনতে হবে তিরষ্কার, মাইনে কাটা যাবে, পেনাল্টি হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৩