আমাদের মুসলিমদের শরীরে আর ইসলাম নেই। আমাদের চালচলন সব দুনিয়া কেন্দ্রিক। আমাদের প্রাত্যহিক কাজের মধ্যে ইসলামের কোন স্থান নেই। আল্লাহকে স্মরন করার সময় আমাদের নেই। মহানবী (সাঃ) এর একটা সুন্নাহ অনুসরন করার প্ল্যান আমাদের ডেইলি রুটিনে নেই।
আমাদের কর্মজীবি একজন পুরুষের প্রাত্যহিক রুটিন যাচাই করলেই কথার সত্যতা বুঝতে পারবেন।
সকাল ৯ঃ০০ টায় অফিস। ঘুম থেকে উঠছি সকাল ৮ঃ০০ টায়। উঠে সোজা ওয়াশরুম। ওয়াশরুমের কাজ শেষ করে নাস্তা করা। নাস্তার ফাঁকেফাঁকে গায়ে পোশাক চড়ানো, জুতা, রুমাল, মানিব্যাগ, মোবাইল পকেটে ঢুকানো। হুড়োহুড়ি করে অফিসের ব্যস্ততম দিনে প্রবেশ। দিনটা শুরু হচ্ছে ব্যস্ততা দিয়ে। কিসের জন্য ব্যস্ততা! রুটি রুজির জন্য ব্যস্ততা। এরপর ব্যস্ততা চলছেতো চলছে। মিটিং, ডেইলি ওয়ার্ক সব শেষ করতে করতে দুপুর একটায় লাঞ্চ ব্রেক। এক ঘন্টা বিরতীতে লাঞ্চ করা, দোকানে বসে আড্ডা দিতে দিতে একটা চা খাওয়া এবং আবার ব্যস্ততা। আবার মিটিং-এ উপস্থিত হওয়া। বিদেশী ম্যানেজমেন্ট তাই নামাযের সময়ে মিটিং কল করা হচ্ছে নাকি কারও কোন হ্যাডেক নেই। ম্যানেজমেন্টের হ্যাডেক থাকবে কি করে আমি নামটা মুসলমানের নিয়ে বসে আছি। আমারইতো নামায পরা না পরা নিয়ে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ভাল লাগলে পরলাম নাইলে পরলাম না। অফিস অফিস করতে করতে বাসায় পৌঁছানো রাত ৮টা বা ৯টায়। সারাদিনে কোথাও ইসলাম বা আল্লাহর জায়গা নেই। হয়তো দুই একবার ইচ্ছা জাগলে, মিটিং বা কাজ না থাকলে জায়নামাজ বিছিয়ে ঠুক করে একটু মাটিতে কপাল ঠেকানো।
রুমে এসে,ফ্রেস হয়ে ডিনার। ডিনারের পরেই শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দেওয়া। হাতে মোবাইল। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে একটু রিফ্রেশমেন্ট দরকার তাই একটা মুভি দেখলে মন্দ হয়না। মুভিটা শেষ করতে করতে রাত একটা দুইটা। অহহ এখন ঘুমাতে হবে। কারন সকাল ৮ঃ০০ টায় আবার দৌড় শুরু। সময় কোথায় ফজরে আরামের ঘুম হারাম করে মসজিদে যাওয়ার?
আমার চালচলন ইঙ্গিত দেয় আমার চিরস্থায়ী আবাস এই দুনিয়া। আমার পোশাকে আমার মুসলমানিত্বের কোন চিহ্ন নেই। আমার আড্ডার টপিক, আলোচনার বিষয়ে ইসলামের কোন অস্তিত্ব নেই। আমার ভাবসাব বলে দেয় আমাকে কবরে যেতে হবেনা। আমার ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করা ইঙ্গিত দেয় আমাকে মাটির নিচে যেতে হবেনা। আহ! আল্লাহ! কখন আমার হুশ হবে? কখন আমি বুঝব আমার জীবন শুরু হবে কবরে যাওয়ার পর। কখন আমি বুঝব আমি আর মাত্র ৩০-৪০ বছর হয়তো এই দুনিয়ার অতিথি। সকালে রুহটা বের হয়ে গেলে দুপুরেই আমার মা, বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী আমাকে মাটিতে নামিয়ে দিয়ে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১০:৩০