একদিন বিকালের ঘটনা ।
ওঁই মামা যাবেন ! ওঁই খালি যাবেন !
এগুলো আমাদের নিত্য দিনের কথাবার্তা। যার মধ্যে কি যেন একটা মিসে আছে আমরা চাইলেও তাদেরকে আর অন্য কোনও নাম এ ডাকতে পারি নি। নিশ্চয়ই বুজতে পারছেন কাদের কথা বলতে চাচ্ছি ! তবে হয়ত বুঝতে সমস্যা হচ্ছে কারন এখন সব পরিচিত কিংবা অপিরিচিত সবাই আমাদের মামা, কি বন্ধু কি আত্মীয় কি প্রতিবেশী চেনা অচেনা সবাই আমাদের মামা । যাই হোক এতো মামার ভিরে আমি রিকশা চালক মামার কথাই বলছি ।
সেদিন বিকালে যাচ্ছি রিকশায় চড়ে । চালক খুব ই নম্র ছিলেন। বিভিন্ন কথাবার্তা বললাম । ভাই ডেইলি কত টাকা দেয়া লাগে?
কত টাকা পান? যাই হোক - আচমকা ঘটল সেই ঘটনা। একটা গাড়ি থামা ছিল। দূর থেকেই দেখছিলাম কিন্তু যখন কাছে আসলাম তখন গারির দরজা খুলে গেলো আর আমাদের রিকশার সাথে গারির একটা ছোট খাটো ক্রাস হল । সুন্দর ভাবে বলতে গেলে গারিটি হালকা আঘাত প্রাপ্ত হল । আর আমারা পরেই গেলাম । সেটাতো আর কোনও আঘাত নয়!
পরের ঘটনা আরও মর্মান্তিক ।গাড়ি থেকে নেমে এল সুন্দর বেশ ধারি চার জন যুবক । নেমেই কোনও কথাবার্তা ছাড়া অসহায় রিকশা চালক কে কিল ঘুষি দিয়ে মাটিতে শুইয়ে দিল। আমি আমার আঘাত প্রাপ্ত হাত নিয়ে শুধু দেখলাম কিছু বুঝার আগেই রিকশা চালক মাটিতে লুটায়িত। তার উপরেই তাদের মারধর চলতে থাকে আর সাথে ছিল ফ্রী তেঁ গালি গালাজ । অথচ চিন্তা করে দেখুন এর জন্য দায়ি ছিল কে ? ? মামারা বরই অসহায় ! দোষ থাকলেই কি আর না থাকলেই কি মাইর তাদের জন্য বরাদ্দ । এ যেন চির চেনা এক নিয়তি !!!
একটা শিক্ষিত ছেলের কাছ থেকে যদি এই আচরন হয়, তাহলে এই দেশের আর কি অবস্থা হবে! ভাবলে সঙ্কিত হতে হয়। আমাদের লেভেল যে কই চলে গেছে তা এখান থেকেই প্রতীয়মান। আমাদের এই শিক্ষার আর মান থাকল কই আর থাকবেই বা কিভাবে - শিক্ষার যে হাল দেশে হয়েছে তাতে মানবিকতা যে চরম অবনতির পর্যায়ে চলে গেছে তা আর বলার দরকার পরে না।
কাজেই আসুন আমরা আগে নিজেদের কে পাল্টাই তারপর এই ঝম ধরা সমাজ টাকে আবার নতুন করে সাজাই। তাই মাঝে মাঝে মনে হয়- আমাকে আমার মতো থাকতে দাও - আমি নিজেকে নিজের মতো গুছিয়ে নিয়েছি , কথাটির যথাযথ ব্যাবহার হয় নি ।নিজেকে পাল্টাতে হবে সাথে সমাজ টাকে ও পাল্টাতে হবে তবে সেটা যেন সমাজের কৃষ্টি কালচার অনুযায়ী হয়।