মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় ছেলে-মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর সালমা বেগম (৩৫) নামের এক মা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ঋনের চাপ সামলাতে না পেরে। এটা গেলো পত্রিকার খরব। এমন আরও অনেক খবর আছে যা পত্রিকায় আসেনা।
ঘটনা-১
আমাদের বাড়ির কাছের ঘটনা।একজন দাদা ছিলেন তিনি এখন মৃত তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে থাকেন। ছেলেটি ঢাকায় চাকরি করে আর মেয়েটি মাত্রই কলেজে ভর্তি হয়েছে। ভালই চলছিল সংসার বিশেষ করে দাদার পেনশনের উপর নির্ভর করে ও জমি জমা করে তারা দিন পার করছিল কিন্তু বছরখানেক আগে সেই দাদি ঋণ নেয় এবং ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তা সুদ আসলে বাড়তে থাকে। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ধার হাওলাদ করেছেন সেগুলোও ঠিকমত পরিশোধ করতে পারেননা। এভাবে এক সময় টাকার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিনিয়ত মানুষের দাগদায় অতিষ্ট হয়ে উপায় না পেয়ে রাতের অন্ধকারে তিনি তার মেয়ের হাত ধরে পালিয়ে যান। ঘরটি এখন তালাবদ্ধ মানুষগুলো আত্মগোপনে।
ঘটনা-২
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার একটি গ্রাম মিরেরগাঁও। এখানে পলি বেগম নামে এক মহিলা এনজিও থেকে তার নামে এবং তার ননদের নামে কয়েক লাখ টাকা ঋণ নেন। তিনি প্রথম দিকে ভালই ঋণ পরিশোধ করছিলেন কিস্তির মাধ্যমে। কিন্তু শেষ দিকে এসে সমস্যা হওয়ায় অন্য একটি এনজিও থাকে আরও ঋণ নেন এভাবে বেশ কয়েকটি ঋণ নেওয়ার ফলে তার দেনা দিন দিন বাড়তে থাকে এবং ঠিকমতো পরিশোধ করতে না পারায় একসময় এ নিয়ে সালিশ বিচার দরবার শুরু হয় এবং শেষ পর্যন্ত টাকা পরিশোধ করতে না পারে মেয়ে এবং স্বামী নিয়ে ঢাকায় আত্মগোপন করে আছেন।
ঘটনা-৩
পলি বেগমকে সাহয্য করার জন্য তার ননদও ঋণ নেন। কিন্তু ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে সেও তার স্বামী এবং দুই সন্তান নিয়ে যশোরে আত্মগোপন করে আছেন।
ঘটনা-৪
সোহাগী বেগম এর বিয়ে হয়েছে তার খালাতো ভাইয়ের সাথে। ভালই চলছিল সংসার । তার স্বামী গরুর খামার করে এবং শশুর চাকরি করে কিন্তু সোহাগী বেগম আরো ভালোভাবে চলার আশায় ঋণ নেন এনজিও থেকে এবং শেষপর্যন্ত ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে তাদের বিক্রি করে দিতে হয় বসত ভিটা।
এভাবে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে যারা ঋণ পরিশোধ করতে পারেন না তাদের সুদ আসলে টাকা বাড়তেই থাকে এবং একসময় তা এরূপ হয় যে তারা ঋণ এর টাকা পরিশোধ করতে না পেরে ঘরবাড়ি হয় বিক্রি করে দেন না হয় ঘর তালা দিয়ে আত্মগোপন করেন।
যারা ঋণ নিয়ে ইনভেস্ট করেন তারা সময় মত পরিশো করতে পারেন আর যারা শুধু সংসারে খরচ করার জন্য ঋণ নেন তারা মরন ফাঁদে আটকা পড়েন।
ছবি -বিবিসি বাংলার সৌজন্যে।