প্রবাসীর জীবন।
---------------মোঃসালাহ্উদ্দিন
মলিন মুখগুলোতে একটু হাসি ফুটানো,
একটু স্বচ্ছলতার জন্য হন্যে হয়ে কর্মসংস্থানের চেষ্টা,
নাওয়া নেই খাওয়া নেই শুধুই চাকুরি খুঁজা।
নির্মম পরিহাস সব জায়গায়ই ব্যর্থ,
কোথায়ও কোনো যোগ্যতার স্বীকৃতি মিলল না।
নিদ্রাহীন দুঃশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন থেকে,
অগত্যা সিদ্ধান্ত প্রবাসী হওয়ার।
কাঠখড় পুড়িয়ে বিদেশ যাত্রার টাকা গোছানোর চলে চেষ্টা,
দালালের হাত ঘুরে,লাঞ্ছনা,বঞ্চনা সহ্য করে যায় বিদেশে।
নতুন দেশে নতুন অবস্থায়,ঝক্কিঝামেলার অন্ত নেই,
সব কিছু বেমালুম ভুলে চলে কাজ আর কাজ।
ভাবনায় থাকে,সপ্তাহে একটি দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে,
মাসের বেতন যাবে কমে।
তাই কাজ করতে হয় শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রেখে,
ধারদেনা শোধ করার জন্য,মানুষিক চাপ নিত্য সঙ্গী।
মাঝে মাঝে মনে হয় পরবাস তো নয়,এ যেনো বনবাস,
টাকার জন্যেই শুধু দেশ থেকে ফোন আসে বিদেশে,
কারো বিয়ে কিংবা অসুখে শুধুই টাকা খোঁজে।
প্রবাসীর টাকায় সবাই আনন্দ করে,
প্রবাসী থাকে কষ্টে।
দেহটা থাকে বিদেশে মনটা পড়ে থাকে দেশে,
বছর ঘুরে প্রবাসী যখন ছুটিতে আসে।
সঙ্গে একটি লাগেজ তাতে সবার জন্য সব কিছু থাকে,
প্রবাসীর ভাগ্যে শূন্য লাগেজটিই জুটে।
ভাগ্যান্বেষণের জন্য পুনরায় নিজ গন্তব্যে দেয় পাড়ি,
ভিনদেশে অবৈধ হলে আর রক্ষা নেই,
অন্যের কাগজ দিয়ে টাকা পাঠাতে হয়।
চিকিৎসার থাকেনা কোনো নিশ্চয়তা,
কাজে কর্মে বিদ্যমান থাকে শুধুই হতাশা।
দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশে,প্রবাসী একজন বাংলাদেশী।
নিজ যোগ্যতায় দেশকে তুলে ধরে ভিনদেশীদের কাছে,
একজন যোগ্য প্রতিনিধি হিসাবে।
দেশের অর্ধেক লোক প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে,
এই প্রবাসীদের উপর নির্ভরশীল।
তথাপি প্রবাসীরা পায় না তাদের যোগ্য মূল্যায়ন,
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভিত্তি করেই,দেশ এগোচ্ছে,
প্রশ্ন প্রবাসীদেরকে দেশ আজ কি দিচ্ছে?
যখন শূন্য খালি হাতে প্রবাসীরা দেশে ফিরে,
জীবন তাদের পতিত হয় দুঃখের তিমিরে।
জনগণের টাকায় যারা বেতন গুনে,
তারা কি করে রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসীদেরকে অবমুল্যায়ন করে?
----------কল্পনাপ্রসূত।
চাঁদপুর।
তাং০৭/০২/২০১৯ইং
(ছবি:গুগল থেকে)।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:২২