somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মিজানুর রহমান মিলন
আমার ব্লগবাড়িতে সুস্বাগতম !!! যখন যা ঘটে, যা ভাবি তা নিয়ে লিখি। লেখার বিষয়বস্তু একান্তই আমার। তাই ব্লগ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার আগে একবার ভাবুন এই লেখা আপনার নিজের মস্তিস্কপ্রসূত নয়।

পম্পেও, নেতানিয়াহু ও এমবিএসের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সংলাপ এবং ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যা

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কয়েকদিন আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদি আরব সফরে গিয়েছিলেন। সৌদি আরবের নিওম সিটিতে এমবিএস, পম্পেও এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন খবর প্রচারিত হয়েছে। যদিও পরিস্থিতির চাপে সৌদি আরব নেতানিয়াহুর উপস্থিতি অস্বীকার করেছে, কিন্তু ঘটনার সমস্ত আলামত ও ইসরায়েলি মন্ত্রীসভার সদস্যের সাক্ষ্য এবং মার্কিন ও ইসরায়েলি বিভিন্ন মিডিয়া এ কথা স্পষ্ট করে যে সেদিন নেতানিয়াহু ঐ বৈঠকে উপস্থিতিই ছিল। পম্পেওর সফর সঙ্গী সাংবাদিকদের বিমানবন্দরে টারমাকের বাইরে যেতে দেওয়া হয়নি। বৈঠকস্থলে যেহেতু কোন সাংবাদিক উপস্থিত ছিল না সেহেতু তাদের মধ্যে ঠিক কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ভবিষ্যতে ফাঁস না হলে তা জানা সম্ভব নয়। তবে আন্তর্জাতিক বিষয়ে যারা ওয়াকিবহাল এবং টুকটাক খোঁজ খবর রাখেন তাদের পক্ষে সেই ঘটনার সূরতহাল কল্পনা বা অনুমান করা মোটেই অসম্ভব নয়। সেদিনের ত্রিপক্ষীয় সংলাপের সারাংশ অনুমান করার চেষ্টা করছি মাত্র।

সেদিনের ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় মাইক পম্পেও ও নেতানিয়াহু এমবিএসকে প্রচণ্ড চাপ দেন ট্রাম্পের দুই মাসের সময়ের মধ্যে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং ইসরায়েলের সাথে প্রকাশ্য কূটনৈতিকসহ সকল ধরণের সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। না হলে এমবিএসকে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দেন।

জবাবে এমবিএস বলেন, আরব আমিরাত, বাহরাইন ও সুদান কি এমনি এমনি স্বীকৃতি দিয়েছে? ওরা আমার নির্দেশই স্বীকৃতি দিয়েছে। ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতেই তো পথ পরিষ্কার করছি আমরা। নতুন আব্বা হুজুর বাইডেন ক্ষমতায় আসতেছে। উনি কি নির্দেশ দেন তার অপেক্ষায় থাকব আমি। স্বীকৃতি দিতে হলে নতুন আব্বা হুজুর ক্ষমতা নেওয়ার পর দিব।

নেতানিয়াহু বলেন, বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর আপনার রাজা হওয়ার সম্ভবনা অনিশ্চিৎ হয়ে যাবে। এটা কি জানেন আপনি? আপনাকে টপকিয়ে অন্য কোন যুবরাজ রাজা হতে পারে।

এমবিএস বলেন, জানি, কিন্তু নতুন আব্বা হুজুরকে ম্যানেজ করে নেব। (এরপর মুচকি হাসি।)

এবার উল্টো এমবিএস অভিযোগ করলো। আপনাদের কথায় ইয়েমেনে হামলা শুরু করেছিলাম। আপনারা বলেছিলেন মাত্র তিনদিনেই হুথিরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু কি হল? হুথিরা আগের চেয়ে তো এখন অনেক শক্তিশালী। তারা এখন আমাদের তেলক্ষেত্র আরামকোতে মিসাইল হামলা করতেছে।

নেতানিয়াহু জবাবে বললেন, আরে মূল সমস্যা তো ইরান। ইরান হুথিদের সহায়তা না করলে হুথিরা তিনদিনেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। যা বলেছিলাম ঠিকই বলেছিলাম।

তাই তো আপনাদেরকে কতবার বলেছি ইরানকে শেষ করে দেন। ইরানে হামলা করেন। ইরান শেষ হলে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া আমার বা হাতের ব্যাপার। কিন্তু আপনারা তো কিছুই করতে পারলেন না! দিন দিন ইরান শক্তিশালী হয়ে যাচ্ছে। ইরানই আমাদের একমাত্র মাথা ব্যথা। ইরান পরমাণু বোমা বানালে কিন্তু আমাদের সবার বিপদ। ইরানকে নিয়ে ভাবেন যোগ করলেন এমবিএস।

সঙ্গে সঙ্গে নেতানিয়াহু এমবিএসের কথা সমর্থন করলো। পম্পেওকে উদ্দেশ্য করে নেতানিয়াহু বললেন, এমবিএস তো ঠিকই বলেছে! ইরানই আমাদের একমাত্র বিপদ!

পম্পেও বললেন, কিছুই করিনি মানে! পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে আসলাম। জেনারেল কাশেম সোলায়মানিকে হত্যা করলাম। ইরানের উপর ইতিহাসের নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিশ্বের কোন দেশের সাথে ইরান বাণিজ্য করতে পারছে না। এতে তো ইরান শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু....

কিন্তু আর না। আমি এই সময়ে ইরানে হামলা চাই। ইরানের সাথে একটা যুদ্ধ চাই। যোগ করলেন এমবিএস। সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে উঠে সমর্থন করলেন নেতানিয়াহু।

পম্পেও বললেন, অনেক ভেবেছি ইরানের সাথে যুদ্ধ অত সহজ নয়। ইরানকে ধ্বংস করার খায়েশ আমার বহুদিনের। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তো কয়েকদিন আগে ইরানে হামলা করতেই চেয়েছিলেন। তবে ট্রাম্পের এই স্বল্প সময়ে অন্যভাবে ইরানকে ঘায়েল করতে হবে। এতে ইরান যদি নিজ থেকেই যুদ্ধ শুরু করে তাহলে আমরাও বসে থাকব না।

বাইডেন ক্ষমতায় আসলে যদি আবার পরমাণু চুক্তিতে ফেরেন তাহলে কিন্তু সাড়ে সর্বনাশ! তার আগেই কিছু একটা করতে হবে। বললেন নেতানিয়াহু।

সঙ্গে সঙ্গে এমবিএস এর স্বগতোউক্তি তাহলে ইরানকে উস্কে দেন! ল্যাটা চুকে যায়!



আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানী গুপ্ত হত্যা করেছি।মোসাদকে নির্দেশ দিয়ে রেখেছি। প্রস্তুতি সম্পন্ন। শুধু আপনার অনুমতি পেলেই আবারো এই কার্যক্রম শুরু করব। পম্পেওকে উদ্দেশ্য করে নেতানিয়াহু।

পম্পেও বললেন, প্রস্তাবটা অতি পছন্দ হয়েছে। আমেরিকায় এই সময়ে ক্ষমতার পালা বদল হতে যাচ্ছে। তাই ধারণা করছি ইরান এই সময়ে কোন প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে তুলবে না। আর যদি পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে ইরানের সাথে যুদ্ধ অনিবার্য! ট্রাম্প এই উসিলাটাই খুঁজতেছেন। তিনি বাইডেনের জন্য পরমাণু চুক্তিতে ফেরা অনিশ্চিৎ করতে চান।

এমবিএস ও নেতানিয়াহু সহমত পোষণ করে বললেন তবে তাই হোক।

(মিটিং সমাপ্ত)

বি.দ্রঃ এই ত্রিপক্ষীয় সংলাপ সম্পূর্ণরুপে অনুমান নির্ভর। কোন প্রকার তথ্যসূত্র নেই। ঘটনার পরিক্রমার উপর ভিত্তি করে লেখা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:০৫
৫টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×