কখন যে ঘুম ভাঙ্গল ঠিক টের পাই নি । কিছুক্ষন পর বুঝলাম ঘড়িটা বোধ হয় টিক টিক করছে। ইচ্ছে করছে ঘড়িটাকে কয়েক বছর পিছিয়ে দেই। কিন্তু অসম্ভব। জীবনের খেলায় কখন যে ঘড়িটা এসে এখানে থামল বুঝতেও পারিনি। জানি সে খুব নিষ্ঠুর। তারপরও এই নিষ্ঠুরতার সাথে মিশে আছে কত স্মৃতিকথা, কত আবেগ আর কত ভালবাসা। আবেটা এখন অনেকটা ভোতা হয়ে গেছে। তার সাক্ষি সে নিজেই। এখনও ঐ দিনগুলোকে খুব মিস করি। যেই দিনগুলোতে সবাই একসাথে ছিলাম। দিনগুলো খুব ভালই কেটেছে আমাদের। আমরা ছিলাম সাত জন। আমি(পড়াশুনা+মাস্তি), জাকির (পড়াশুনা+টেনশন), নাজমুল(পড়াশুনা+ মাস্তি+boss of virtual life. fb
তে মেয়ে পটানো তার জন্য ২/৩ মিনিটের ব্যাপার।), তানজিন(পড়াশুনা করে life এ কি হবে আর মাঝে মধ্যে নাসরিন আপুর কথা ভাবে)মানে সারাদিন ঘুরাপিরা করা+মাস্তি+নাসরিন is my heart. ফইন্নিরপুত ফইন্নির কথা আর নাই বলি।পাশের রুমের মৃদুল
চশমা পরা কবি কবি ভাব হলেওকখনো কবিতা লেখা হয়নি।পড়াশুনা+দুইদিন পর পর নিরু আপুর সাথে দেখা করা। দুঃখের হলেও সত্যি তার বিয়ে হয়ে গেছে। সামির ভাই ছোট হলেও অনেক পাঁকা। মুখে এক গোচা দাঁড়ি আছে,,, সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে আমেনা আপুকে love করার কথা, আমেনা আপুকে kiss খাওয়ার কথা বলে মিটিমিটি হাঁসে। ছোটভাই সুমন খুব ভাল, নোয়াখাইল্লা হোলা।
দিনগুলো আমাদের ভালোই কেটেছে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আধ ঘন্টা লাগত বাথরুমে...আমার না মৃদুল ভাইয়ের। তার
উপর আমার পিডাপিডি তো আছেই। দিনে দুই তিনবার তর্ক বিতর্ক হত আমাদের সাথে যদিও তার কোন উদ্দেশ্য নেই।জাকিরের টেনশান যদিও পুরো প্ল্যাটে ছড়িয়ে থাকত তারপরও মনের টানে মাঝে মধ্যে আমাদের সাথে মাস্তিতে যোগ দিতো। নাজমুল
ভাইয়ের যদিও রাগ একটু বেশি ছিল তারপরও ইমশনের টানে প্রেম ককরেও সে বেচারা জীবনের প্রথম প্রেমে চেকা খাইছে।
বাড়িয়ে বলাটা তার একটা পেশা। তবে মাঝে মাঝে এর জন্য নিজেও বিপদে পড়ে। জাইঙ্গা পড়ে ছবি তোলা আর সারাদিন গান আর নাচানাচি করলেও তানজিন ভাই সবার আগে বাবা মার কথা ভাবতো। ঐদের মাস্তিতে আমিও একটু একটু থাকতাম। সামির ভাই আছে বিরাট টেনশানে কারন আমেনা আপুর সোজা কথা মেডিকেলে চান্স না পেলে আমার কাছে এসো না সামির। কথাটা বলতে আমেনা আপুর একটুও মুখে আটকালো না। আমেনা আপুর kiss খাওয়ার পর থেকে নাজমুল তাকে একটু আধটু পছাইতো। মৃদুল ভাইয়ে কথা কি বলব,
এখনো সবাই ঘুমিয়ে গেলে symphony মোবাইলে hide করা 2x vedio গুলো একবার দেখে নিতো। আমাদের ৭ জনের
পরিচয়টা যদিও কয়েক মাসের কিন্তু সস্পর্কটা ছিল অনেক মধুর।মজার ব্যাপার হল আমাদের বাথরুমের কোন ছিটকেরী ছিল না,
বালতি ভরা পানি ছিল আমাদের সম্মান রক্ষার একমাত্র হাতিয়ার। ফলে মাঝে মাঝে দূর্ঘটনার মুখমুখী হতে হয়,,,। আর হবেই না না কেন...! সামির ভাইের যদি মানুষর সামনে হিসু না আসে কিংবা মেয়ে মানুষের মত সব খুলে হিসু করতে হয় তবে বাথরুমেই তো তার একমাত্র ভরসা। এখন আর কেউ একসাথে নেই। স্রোতের সাথে গাঁ ভাসিয়ে সবাই চলছে সবার গন্তব্যে। মোবাইলেও কথা হয় না। মাঝে মধ্যে fb তে দেখা যায়...। সবাই নিজেকে নিয়ে অনেক বেশি ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। এখন আর সকালে বাথরুমে যাওয়ার জন্য সিরিয়াল দিতে হয়না...। ছড়পোকারা সামির ভাইয়ের লুঙ্গির ভিতর ডুকে কামড়ায় না....ফলে সামির ভাইয়ের লুঙ্গির ভিতরে হাত দিয়ে ঘুমানোর মত মজার বিষয় দেখা যায় না। জিবন থেকে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো চোখের কোনে ক্ষনে ক্ষনে ভেসে উঠে। এখন আর নাজমুলের মত কেউ দমক দেয় না, কিবা বাচ্চাদের মত বলে না'লুঙ্গি ধরে টান দিমু বা চল কিলাকিলি করি।' জাকির না থাকায় কোনো কাজেই টেনশান লাগে না,,,। তানজিনের সেই হাসির কথা আর শুনি না..। মৃদুল ভাইয়ের সাথে তর্ক হয়না,,,। সামির ভাইকে আমেনা আপুকে নিয়ে পচাতে পারি না। নাজমুলেরর মত কেউ বলে না তুই কিন্তু pk (ওকে) sms বা call দিবি না। রাতের আধারের মত সবাই কোথাই
মিশে গেছে। হয়তো কোন দিন আর দেখা হবে না।কিন্তু আমাদের স্বপ্ন, ভালবাসা আর বন্ধুত্ব করে গেছে স্বপ্ন বিলাস ছাত্র হোস্টেল। ঠিক ৪০৪ নম্বর রুমের ভাঙ্গা খাট আর ছাড়পোকা।