somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোহাম্মদী ইসলাম বলতে কি বুঝায়?

০৩ রা নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা, আহমদ মোজতবা (সাঃ) মানব জাতির মুক্তির জন্য যে ধর্ম প্রবর্তন করে গেছেন তা-ই মোহাম্মদী ইসলাম।

এ সম্পর্কে হযরত রাসুল (সাঃ) হাদিসে ফরমান, ” ইসলামের স্তম্ভ হলো পাঁচটি বিষয়ের উপর (১) আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং নিশ্চয় মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসুল-এ কথার সাক্ষ্য দান (২) সালাত কায়েম করা (৩) যাকাত দেয়া (৪) হজ্জ করা এবং (৫) রমজানের সিয়াম পালন করা। ” ( বোখারী ও মুসলিম শরিফের সূত্রে মেশকাত পৃষ্ঠা-১২)

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর এ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ধর্মই হলো মোহাম্মদী ইসলাম। পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ” নিশ্চয় ইসলাম আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ধর্ম ( সুরা আলে ইমরান)

ইহাতে পরিস্কার যে, হযরত আদম (আঃ) হতে শুরু করে আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত আল্লাহর মনোনীত সকল নবীগনের প্রবর্তিত ধর্মই ছিল ইসলাম। সমুস্ত নবী-রাসুলগনের ধর্মের অন্তর্নিহিত দিক অভিন্ন বলেই তারা প্রত্যেক সমকালীন যুগের মানুষের জন্য সময়োপযোগী জীবন বিধান তথা শরিয়তের বিধি বিধান প্রবর্তন করে গেছেন।

এ কারনেই হযরত আদম (আঃ) এর উম্মতের কালেমা ছিল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আদামু সফিউল্লাহ, হযরত নূহু (আঃ) এর উম্মতের কালেমা ছিল- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু নুহুনাবিউল্লাহ, হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর উম্মতের কালেমা ছিল- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ, হযরত ঈসা (আঃ) এর উম্মতের কালেমা ছিল- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ঈসারুহুলুল্লাহ, শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উম্মতের কালেমা হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ।

অর্থাথ সমুস্ত নবী রাসুলের উম্মতগনই তাদের কালেমাতে প্রথমত তাওহীদের স্বীকারোক্তি করেছেন এবং স্বীয় নবীর প্রতি আনুগত্যের সাক্ষ্য হিসেবে নিজ নবীর নাম উল্লেখ করেছেন।

হযরত রাসুল (সাঃ) হলেন, অতিত যুগের নবীগনের প্রবর্তিত ইসলামের সর্বাধুনিকতম সংস্কারক। যার মাধ্যমে ইসলাম পুর্নতা লাভ করেছে। এ মর্মে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে ” আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পুর্ন করে দিলাম, তাতে আমার নেয়ামত পরিপুর্ন করে দিলাম, এবং ইসলামকে একমাত্র ধর্ম হিসেবে মনোনীত করলাম ” ( সুরা মায়িদাহ-৩)

আমরা জানি যে, হযরত আদম (আঃ) হতে শুরু করে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত আল্লাহর মনোনীত সকল নবীগনের প্রবর্তিত ধর্মই ছিল ইসলাম। সমুস্ত নবী ও রাসুলগনের ধর্মের অন্তর্নিহিত দিক অভিন্ন বলেই তারা প্রত্যেকেই সমকালীন যুগের মানুষের জন্য সময়োপযোগী জীবন বিধান তথা শরিয়তের বিধি বিধান প্রবর্তন করে গেছেন। অনুরূপভাবে আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)ও সকল মানব জাতির মুক্তির জন্য যুগোপযোগী ও বিজ্ঞান সম্মত জীবন ব্যবস্থা প্রবর্তন করে এর নামকরণ করেন মোহাম্মদী ইসলাম।

আমরা যেহেতু পূর্ববর্তি কোন নবীর ধর্ম অনুসরণ না করে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দেয়া ইসলামি বিধান অনুসরণ করি, সেহেতু আমাদের এ ধর্মের নাম ‘মোহাম্মদী ইসলাম’ নামে পরিচিত হওয়া অধিকতর যুক্তিসংগত। এ কারনেই আইন শাস্ত্রে ইসলামি জীবন বিধান Muhamadan Law হিসেবে বিশ্বময় স্বীকৃতি লাভ করেছে। তাছাড়া বিভিন্ন তাফসীর কারকগন তাদের তাফসীরের কিতাবে ইসলাম ধর্মকে ” দ্বীনে মোহাম্মদী ‘ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মুলত উহাই মোহাম্মদী ইসলাম

ইতিহাস থেকে জানা যায়, মোহাম্মদী ইসলামের স্বর্ন যুগ ছিল ৫৩ বছর। হযরত রাসুল (সাঃ) এর নবুয়্যত জীবনের ২৩ বছর এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের ৩০ বছর। এ দীর্ঘ সময়ে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উম্মতগণ মোহাম্মদী ইসলামের অনুসারী হিসেবেপরিচিত ছিল।

কিন্তু উমাইয়াদের শাসনামলে ইসলামি খেলাফতের নাম পরিবর্তন করে উমাইয়া শাসন হিসেবে আখ্যায়িত করা হলো তখন মোহাম্মদী ইসলাম হতে মোহাম্মদ বাদ দিয়ে শুধু ইসলাম রাখা হয়েছে। এভাবে মুসলমানদেরকে সুকৌশলে রাসুল (সাঃ) থেকে বিচ্ছিন্ন করে মুসলিম জাতিকে কান্ডারী বিহীন করা হয়েছে। তাই আজ আমরা আমাদের প্রিয় নবীর নাম সম্বলিত মোহাম্মদী ইসলামের কথা শুনলে চমকে উঠি। অথচ দুনিয়াতে যত ধর্ম, যত মতবাদ, যত আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার সবই প্রায় প্রবর্তকের নামানুসারেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

এমনকি ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন মাযহাব ও তরিকা গুলো ঈমামগনের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনের তাফসীর গ্রন্থ গুলোর নামকরণ করা হয়েছে তাফসীর কারকগনের নামানুসারে। অনুরুপ ভাবে হাদীস সংগ্রহ কারীদের নামানুসারেই হাদীস গ্রন্থ গুলোর নামকরণ করা হয়েছে।

সুতরাং মোহাম্মদী ইসলাম নতুন কোন বিষয় নয়, এটা হলো হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রবর্তিত আল্লাহর মনোনীত ইসলাম, যা হেরা গুহায় উৎসারিত
রেফারেন্স:
১। মোহাম্মদী ইসলাম

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৭
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুহূর্ত কথাঃ সময়

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



সামুতে সবসময় দেখেছি, কেমন জানি ভালো ব্লগাররা ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়! যারা নিয়মিত লেখে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ প্রচণ্ড নেগেটিভ স্বভাবের মানুষ। অন্যকে ক্রমাগত খোঁচাচ্ছে, গারবেজ গারবেজ বলে মুখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×