প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই কিছু ছাত্র নামধারী উৎপাতকারী থাকে যাদের কাজ হচ্ছে বাজারের হিজড়াদের মতো "তোলা" উঠানো। যারা "তোলা" সর্ম্পকে জানেন না তাদের জন্য বলছি, হিজড়া সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ বাজারে বিক্রেতাদের কাছ থেকে ফাও কিছু জিনিসপত্র (সবজি বিশেষত) নিয়ে নেয়। তারা ভাবে এগুলো তাদের জন্যই। এরকম করে "তোলা" উঠানো তাদের অধিকার।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও এমন কিছু ছেলেপেলে থাকে। এরা টং দোকানে নাস্তা করবে, বিল দিবে না। বিল চাইলে ছাত্রের বাইরে যে তার আরও একটা তথাকথিত পরিচয় আছে সেটা সদর্পে, সগর্বে প্রকাশ করবে। প্রেমিকা নিয়ে ফুচকা খাবে, বিল দেয়ার কথা ভুলেও মনে আনবে না। ক্যাম্পাসে শোডাউন দিবে, ফুডকোর্টে খাবে কিন্তু পয়সা দেবে না। এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত চাঁদা উঠাবে, হলের ডাইনিংয়-ক্যাফেটেরিয়ায় ফাও খাবে, সাথে ধমকধামক তো আছেই। "তোলা" না দিলে হিজড়েরা যেমন অকথ্য গালিগালাজ করে তারা কিন্তু এখানে থেমে থাকে না। এককাঠি সরস হয়ে গায়ে হাত তুলতে পারলে তারা আত্মতৃপ্তি পায়। তাদের এই সরস আচরনের জন্য যখন একটা সাদাসিধে ছেলেকে ডাইনিং কিংবা টংয়ে একবেলা বাকি দিতে দোকানদার উসখুশ করে তখন তাদেরকে দোষ দিতে পারি না।
বিশ্ববিদ্যালয় মানুষ গড়ার কারখানা । বিশ্ববিদ্যালয় এখানে পুরোপুরি ব্যর্থ না হলেও কিছুটা ব্যর্থ। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠের কিছু ছেলে যখন এমন হয় তখন ব্যাপারটা খুবই লজ্জাজনক। একটা টং দোকানি কিংবা একটা ফুচকাওয়ালা, কিংবা মাত্র ২ টাকা লাভে খাবার বিক্রি করা ডাইনিং মালিককেও যখন এসব পাতি নেতাদের চাঁদা দিতে হয় তখন সাধারন ছাত্ররা রাজনীতি দুরে সরে যাবে এটা কি খুব বেশি অস্বাভাবিক? রাজনীতি কাউকে চুরি ছ্যাঁচড়ামি শিখায় কিনা আমার জানা নেই। খুব সম্ভবত উত্তরটা না হবারই কথা।
এখানেই তাদের শেষ নয়। ছোটখাটো ছ্যাঁচড়ামি, চাঁদাবাজি করতে করতে তাদের কলজেটা বড় হয়ে যায়। শুরু করে টেন্ডারবাজি। ক্যাম্পাসে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে? আমার চাঁদা দাও, নয়তো কাজ বন্ধ। আবাসিক হল সংস্কার হচ্ছে? আমি সরকারি দলের রাজনীতি করি।আমার অনুমতি(!) না ছাড়া কাজ চলবে না। অতঃপর রাজার নজরানা, তারপর কাজ চালানোর সদয় অনুমতি। ক্যাম্পাসে তারা অলিখিত রাজা। সবাই তাদের নজরানা দিবে, ভেট দিবে, আর তারা ড্রপের পর ড্রপ দিয়ে, মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করে আমাদের ধন্য করবে।