প্রকুতির স্নিগ্ধতা কিংবা রুক্ষতা সবসময় মানুষকে স্পর্শ করে না। চকচকে জোৎস্না রাতে, এমনকি ঝকঝকে পূর্ণিমা রাতে, যখন মাথার উপর পূর্নচন্দ্র থাকে তখনও প্রেয়সির হাত ধরে বসে থাকা মানুষটির মনেও অকল্পনীয় ধরনের বেদনা থাকতে পারে; থাকতে পারে না পাওয়ার তীব্র জ্বালা কিংবা হারানোর প্রচন্ড কষ্ট। প্রকৃতি যখন স্নিগ্ধতায় ডুবে যায়, যখন কোমলতার চাদর বিছানো থাকে সমস্ত প্রকৃতি জুড়ে তখন রুক্ষ মন থাকার নিয়ম না থাকলেও কিছু মানুষের মনে কিছুতেই স্নিগ্ধতা ধরা দেয় না। নিশুতি রাতে পুরো শহর যখন ঘুমে নিমগ্ন, মানুষতো মানুষই এমনকি ইট কাঠের নির্জীব দেয়ালগুলোও যখন ঘুমিয়ে যায়, ইনসোমনিয়ার তীব্র কষ্টে কিছু মানুষ তখনও জেগে থাকতে বাধ্য হয়। ঘুম যেনো তাদের কাছে এক দুঃস্বপ্ন, মহাকালের ওপার থেকে ভেসে আসা কোন অমৃত।
এর উল্টোটাও হয়। রুক্ষ প্রকৃতিতেও কখনও কখনও সুরের বীণা উঠে, ঝংকার লাগে প্রতিটি পাতায় পাতায়, মূর্ছনায় মূর্ছা যায় রসিক নাগর। যদি তা-ই না হতো তবে ক্লান্ত দুপুরে অখন্ড অবসরে বাঁশিওয়ালা তার বাঁশির সুর তুলতে পারতো না, কিংবা পারতো না কেউ গলা ছেড়ে ভাটিয়ালি গাইতে, পারতো না কোন অরুর হাত ধরে রুপমরা রৌদ্র বিলাস করতে। হয় না, সবসময় প্রকৃতির মতো মানুষের মন হয় না। জটিল, রহস্যময় প্রকৃতি থেকে বড় রহস্যময় মানব মনের গতিপ্রকৃতি।
[ছবি ইন্টারনেট থেকে কালেক্টড]