somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অরুপম
দেবার মতো তেমন কোন পরিচয় আমার নেই। আমি মানুষ, চমৎকার এই পৃথিবীর চমৎকার সব ঘটনা দেখে এখন পর্যন্ত চমৎকৃত। আর তাই লেখালিখির মাধ্যমে সেটা কিছুটা প্রকাশ করতে চেষ্টা করি।

বেঁচে থাকা কেন?

১২ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ক্যান্সারের শেষ স্টেজে আছে, কেমোথেরাপি চলছে এমন মানুষকেও দেখেছি দুচোখে
বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে উচ্ছ্বসিত হতে। কিডনি ডায়ালাইসিসের রোগিকে বলতে শুনেছি,'এতো কষ্ট এই ডায়ালাইসিসে, এরচেয়ে বরং মরে যাওয়া ভালো।' কিন্তু তারপরও সে নিয়মিত ক্লিনিকে যায় ডায়ালাইসিস করাতে। একবার করিয়ে ২ দিন ঝিম মেরে পড়ে থাকে, উঠবার মতোন শক্তি পায় না। তারপরও সে চিকিৎসা চালাচ্ছে। কেন? বেঁচে থাকার তীব্র আকাঙ্খায়।
এই তো কিছুদিন আগে সংগীত শিল্পি আবদুল গাফফার চৌধুরি দেশের সবার কাছে সাহায্য চেয়ে বলেছেন, ' আমি মরে গেলে আমার কবরে হয়তো ফুল দিবেন। সেটা না করে আমি জীবিত থাকতে আমার চিকিৎসার জন্য দান করুন। ১৬ কোটি মানুষ ১ টাকা করে দিলে আমার চিকিৎসা হয়ে যাবে৷ আমি আরো কিছুদিন পৃথিবীতে বাঁচতে চাই।' কেন সে আরো কিছুদিন বাঁচতে চায়? জীবনের অনেক বসন্ত পার করে এখন তো বার্ধক্যের শেষ সীমানায় পৌছে গেছেন। যশ খ্যাতিও অনেক পেয়েছেন। তারপরও কেন সে সাহায্যের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন? কারনটা সবাই বুঝি। পৃথিবীটাকে আরো কিছুদিন নিজের চোখে দেখা। মানুষের এটাই নিয়ম। সর্বস্বের বিনিময়েও সে কেবল একটা জিনিসই চায়, জীবন। সে কেবল বাঁচতে চায়। জীবন জিনিসটা মানুষের কাছে এতোটাই দামি।
এই যে ক্যান্সারের রোগি, যার কেমো চলছে, ব্যাথা বেদনায় জীবন যার অতিষ্ট, কিডনি ডায়ালাইসিসের যে রোগিটা নিজের মুখেই বলছে "....এরচেয়ে মরে যাওয়া ভালো", এদের যে কাউকে কি চায় জিজ্ঞেস করে দেখবেন। এক কথায় বলবে বাঁচতে চাই। মৃত্যুশয্যায় পড়ে থাকা মানুষটিও সত্যিকার শেষ ইচ্ছে জানতে চাইলে বলবে আর কয়েকটা দিন, আর কিছু সময় পৃথিবীতে বাঁচতে চাই। হয়তো সে বলে না এটা। সম্ভব নয় জানে বলেই হয়তো বলে না।

এতো সাধের আকাঙ্খিত জীবন স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়ে মানুষ আত্মহত্যা কেন করে বলতে পারেন? এর উত্তরটা পাবার জন্যে আপনাকে বুঝতে হবে মানুষ বাঁচতেই বা কেন চায়। খুব সহজভাবে বলতে গেলে, একজন মানুষ তার কাছের মানুষদেরকে ছেড়ে যেতে চায় না। সে চায় না তাদের ভালোবাসা, তাদের যত্ন, তাদের অভিমান, অনুযোগ এসবকে ছেড়ে যেতে। কোন মানুষকে যদি বলা হয় যে মৃত্যুর ঠিক পরদিন থেকেই তাকে এবং কাছের মানুষদেরকে একসাথে একটা ঘরে থাকতে দেয়া হবে, তারা একসাথে থাকতে পারবে, পৃথিবীর কোন মানুষ বোধ করি মরতে ভয় পেতো না। বোধ করি জাহান্নামে যেতেও তার ভয় হতো না। কারন ভয় মানুষের ঐ কেবল একটা জায়গাতেই, মৃত্যুর পর একাকিত্বের ভয়। আরেকটা বিষয়ও আছে। স্বার্থপরতা। তার মানুষেরা সবাই দিব্যি জগতে ঘুরে বেড়াবে, ভালোবাসবে, ঘরসংসার করবে, সন্তান জন্ম দেবে, জীবনকে অর্জন আর উপভোগ করবে। অথচ সে থাকবে অনন্ত অপেক্ষায়। এটা সে মেনে নিতে পারে না। স্বার্থপরের মতো তাই সে চায় বেঁচে থাকতে। অনন্ত নিশ্চুপতার, প্রহরবিহীন প্রতিক্ষার ভয়, আর একাকিত্বের ভয়ে সে মরতে চায় না।
এই ভালোবাসার আর কাছের মানুষগুলো যখন তার থাকে না, যখন ঐ মানুষটা থাকে না যাকে তার; একান্ত তার নিজের মানুষ মনে করতে পারে, তখনই সে নিস্বার্থের মতো সবকিছু ছেড়ে দেয়। প্রচন্ড আকাঙ্খিত জীবনে সে যখন আর কোন আকাঙ্খার বিষয় খুঁজে পায় না, যখন নিশ্চুপতা আর শূন্যতার ভীতি তার কাজ করে না তখনই সে আত্মঘাতী হয়। সাধের জীবনকে মৃত্যুর পায়ে সঁপে দেয়।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×