ফুরফুরে বাতাসে উড়তে দারুন লাগছে।
নিজের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকালাম, সারাদেহ নীল রংয়ের সুইমিং কস্টিউম-এর মত পোশাকে আবৃত, বুকে হলুদ ত্রিভুজের মাঝে বিশাল 'S' আঁকা, ঘাড় থেকে পিছন দিকে হলুদ রংয়ের চাদর ঝুলছে; গত সপ্তায় "হিমু ফ্যান ক্লাবে" যোগ দেয়ার পর লাল রংয়েরটা পাল্টে ফেলেছি।
ব্যাটা দর্জির বাচ্চাকে কঠিন ধমক দিতে হবে, জামা টাইট বানিয়েছে, সুপার মানবের সঙ্গে ফাইজলামি?
হঠাৎ থমকে দাড়ালাম, "বাঁচাও, Help"-নারী কন্ঠের চিৎকার।
কার্জন হলের উপর দিয়ে যাচ্ছি, একটা হার্ট বিট মিস করলাম; মনে হয় ফার্স্ট ইয়ার, আশা করতে দোষ কি?
ও শিট্, চিরুনি নেই ; in fact, পকেটই নেই, শালা দর্জিকে বলেছিলাম কাপড়ের উপরে পরার আন্ডারঅয়্যারে পকেট দিতে, কি আর করা আওয়াজের উৎস লক্ষ্য করে ডাইভ দিলাম।
ঐতো দেখা যাচ্ছে, একটা মেয়েকে চারটা ছেলে ঘিরে ধরেছে, আরেকটা হার্ট বিট মিস করলাম, মেয়েটা কঠিন সুন্দরী প্লাস মনে হচ্ছে ফার্স্ট ইয়ার।
ব্যাঁথায়' আঁউ' করে উঠলাম, তাকিয়ে দেখি মোক্ষম জায়গায় একটা রুপালি তীর গেঁথে আছে। খেক খেক হাসির শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি ডানাওয়ালা এক নেংটা পিচ্চি।" চুপ কর কিউপিডের ছাও, চটকানা দিয়া মাড়ি ফালায়া দিমু।"
আবার "Help" শুনে তাড়াতাড়ি গিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছুলাম।
ছেলেগুলো আমাকে দেখে মুখে বিরক্তির ভাব ফুটিয়ে বলল, মা. . . . .(সেন্সরড). . ., তুই কেডা?
আমি বিব্রত ভঙ্গিতে বললাম, ইয়ে.. আমি সুপার মানব.. ইয়ে.. ।
মেয়েটি ঝাঝালো গলায় বলল, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন কি? এদের সাইজ করুন।
সংবিৎ ফিরে পেয়ে হুংকার ছেড়ে বললাম, বদমাইশের দল, চারজন মিলে একজনের উপর হামলা করস, লজ্জা নাই? একজন হইলে তাও কথা আছিল.. ।
মেয়েটা কঠিন চোখে তাকাতে আর কথা না বাড়িয়ে অ্যাকশনে নামলাম, কঠিন এক ফু দিলাম, সবগুলা উড়ে গিয়ে শহীদুল্লাহ হলের সামনের পুকুরে গিয়ে পড়ল। হাত ঝাড়তে ঝাড়তে গিয়ে ভাব নিয়ে মেয়েটার সামনে দাঁড়ালাম।
"ওহ্ আপনাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেব... আপনার ঋন যে কিভাবে শোধ করব... ।"
মনে মনে বললাম, আপাতত তোমার মনের খাতায় বুকিং প্লাস একটা kiss হলেই চলবে। মুখে বললাম, না না.. এ তো আমার কর্তব্য.. .. ।
মেয়েটা চোখে চোখে তাকিয়ে রইল, ব্যাকগ্রাউন্ডে রিং টোন বাজতে লাগল... এক মুঠো ভাআআআত হাতেএএএএ, খেতে তরকাআরিইই লাগেএএ ... ।
মেয়েটা এগিয়ে আসছে... আর মাএ এক হাত.. তিন ইঞ্চি.. দুই... হঠাৎ দেখি শীতে আমার ঠোঁট ফেটে চৌচির হয়ে আছে।
বললাম, এক মিনিট, এক্ষুনি আসছি..।
ঝড়ের বেগে দৌড়ে জহিরের দোকানে গিয়ে বললাম, কুইক, একটা তিব্বত পেট্রোলিয়াম জেলী দেন।
দোকানী মাথা চুলকে বলল, জেলী নাই, খালি পেট্রোলে চলব?
দ্রুত আরেক দোকানে গেলাম, ভাগ্য ভালো এখানে জেলী আছে। দেখি, দোকানদার হচ্ছে উন্মাদের সেই মোতাব্বিরের কাগু, বললাম-কাগু, জলদি জেলী দেন।
"টিয়া আছে?"
"বাকীতে দেন, আমি হচ্ছি সুপার মানব।"
" তর সুপারের খেতা পুড়ি...।"
যা হোক কোনমতে ঠোঁটে জেলী লাগিয়ে মেয়েটির সামনে গেলাম, এবার আর কোন বাধাঁ নেই... আর মাএ এক হাত.. তিন ইঞ্চি.. দুই... ... ।
কিরে আর কত ঘুমাবি? ভার্সিটির বাস ফেল করবি তো, তোর দাদা কী জমিদার ছিল যে প্রতিদিন রিকশায় যাবি?...
মা'র এ ধরনের কথার পর আর শুয়ে থাকা যায়না।
ইচ্ছা ছিলো গভীর একটা চুমো খাবো, কিন্তু কি আর করা,সংক্ষেপে সেরে উঠে পড়লাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১২:৪৭