somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

The wonder science of holy quran (পবিত্র কুরআনের বিস্মৃত বিজ্ঞান) {পর্ব 8}

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আল্লাহ সুবানাহু ওয়া তা’আলা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “আমি আমার বন্দার প্রতি যাহা অবতীর্ন করেছি, তাহাতে তোমাদের বিন্দুমাত্র কোন সন্দেহ থাকলে, তোমরা ইহার অনুরুপ কোন সূরা আনয়ন কর। এবং তোমরা যদি সত্যবাদি হও তাহলে আল্লাহ ব্যাতিত তোমাদের সকল সাহায্যকারীকে নিয়ে আস। যদি আনয়ন না কর তবে সেই আগুনকে ভয় কর কাফিরদের জন্য যাহা প্রস্তুত করিয়া রাখা হয়েছে। (সূরা বাকারা:২৩, ২৪)।

কোরআন নাজিলের সময় বৈজ্ঞানিক পরিস্থিতি: সপ্তম শতাব্দিতে কোরআন নাযিল হয়। মানুষ তখন প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে কুসংস্কার ও প্রাচীন উপকথায় বিশ্বাসী ছিল। তখন মানুষ মহাবিশ্ব, পদার্থ, জীববিজ্ঞান, মানুষের সৃষ্টি, বায়ুমন্ডলের গঠন এবং জীবন ধারনের প্রয়োজনীয় উপাদান ইত্যাদি সম্বন্ধে সঠিক কিছুই জানতো না।

এরকম এক সময়, যখন মানুষের জ্ঞান বিজ্ঞানের বহর ছিল ঠিক উপরের অবস্থা সেই সময়েই নাযিল হয়েছিল আল-কোরআন। যাতে শুধু বিজ্ঞানের সাথে রিলেটেড আয়াতের সংখ্যাই আছে হাজারের বেশি। অথচ সেই কোরআনেরই ১ টি আয়াতও পর্যন্ত মিথ্যা প্রমাণিত হয় নি। বরং বিজ্ঞানেরই কিছু ভুল ধারণা পরবর্তিতে সংশোধন করলে দেখা গেছে, তা কোরআনের সাথে মিলে গেছে। এরকমই কয়েকটি উদাহরণ দিয়েই বিষয়ভিত্তিক আলোচনা শুরু করা যাক::

(১৩):- গাছের নি:শ্বাস-ফটোসিনথেসিস­­: আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে ইরশাদ করেন “শপথ সকালের যখন তারা দিনের আলোয় নি:শ্বাস নেয়”। (সূরা তাকভীর:১৮)। ফটোসিনথেসিস আবিষ্কার করার পূর্বে, এই আয়াতটি বেশ রহস্য তৈরী করে রেখেছিল। মানুষ ভাবতো এটা এমন কি হতে পারে যা দিনের আলোয় নি:শ্বাস নেয়! লোকজন খুব অবাক হয়ে ভাবতো এমন কিছুর কথা, কিন্তু তারা খুজে পায়নি এটা। যতদিন না ফটোসিনথেসিস পদ্ধতির কথা মানুষ জানলো। এই পদ্ধতি মানুষকে জানালো এমন এক প্রক্রিয়ার কথা যেটা ব্যবহার করে গাছ কার্বণ-ডাই-অক্সাইড কে শোষণ করার মাধ্যমে নিজের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করে। একইসাথে অক্সিজেনকে পরিবেশ এ মুক্ত করে। এই প্রক্রিয়াটি কেবল দিনের বেলাতেই ঘটে, যেহেতু আলো এখানে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ গাছ কেবল দিনের বেলাতেই নি:শ্বাস ক্রিয়া চালায়। আর এ কথাটিই বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। এখানে আল্লাহ তায়ালা সরাসরি গাছের উল্যেখ করে আয়াতটি নাজিল করেন নি। বোধহয় এ কারনে যে, ভবিষ্যতেও কোরআন যে কালোত্তির্ন, এই বিষয়টি যাতে পরিষ্কার হয়।

(১৪):- সমুদ্রের পানির রহস্য: আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “তিনি পাশাপশি দুই সমুদ্র প্রবাহিত করেছেন, উভয়ের মাঝে রয়েছে এক অন্তরাল, যা তারা অতিক্রম করে না।”(সূরা আর-রহমান:১৯-২০) সমুদ্রের এই বৈশিষ্ট্য অতি সম্প্রতীককালে আবিষ্কৃত হয়েছে। সমুদ্রের সারফেস টেনসন এবং ঘনত্বের পার্থক্যের জন্য এক সমুদ্রের পানি অপরটির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হলেও মিশে যায় না। যেমন গালফ অফ মেক্সিকোতে এর হাজার হাজার মাইলব্যাপি লোনা আর মিষ্টি পানির সাগর পাশাপাশি প্রবাহিত হলেও একটির পানি আরেকটির সাথে মিশে যায় না। কোরআন নাযিলের সময় মানুষের মাঝে পদার্থবিজ্ঞানের কোন জ্ঞান ছিল না আর মুহাম্মদ (সঃ) ছিলেন মরুভুমির মানুষ।

(১৫):- পেট্রোলিয়ামের সৃষ্টি: আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেন “তিনি তৃনাদি বের করে এনেছেন, অত:পর তিনিই তাদের পরিনত করেন কাল বন্যার পানির মত” (সুরা আলা:৪,৫)। গাছ-গাছরা, ফার্ন, শ্যাওলা এসব অরগ্যানিক পদার্থ ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে একটা দীর্ঘ পদ্ধতির মাধ্যামে শেসে পেট্রোলিয়াম (খনিজ তেল) এর রূপ নেয়। খনিতে পদার্থটি অনেকটা বন্যার পানির মত গার থাকে, একই সাথে এটির রং থাকে কালোবর্ণের। যদিও মানুষ পেট্রোলিয়ামের ব্যাবহার শিখেছে অনেক আগে, কিন্তু তারা জানতো না কি থেকে এই পদার্থটি পৃথিবীতে তৈরী হয়েছিল। কোরআন উক্ত আয়াতে একটি তরলের কথা বুঝিয়েছে, যা পেট্রোলিয়ামের বৈশিষ্টের সাথে মিলে যায়। এভাবে-
এটি তৈরী হয় তৃনাদি থেকে। অর্থাৎ অরগ্যানিক ম্যাটারিয়াল থেকে।
এটির রং কাল হবে, আর এটি বন্যার পানির মত তরল হবে।

(১৬):- লোহার রহস্য: আল্লাহ সুভহানাহুওাতা’লা পবিত্র কুরআন শরিফে বলেনআমি লৌহ নাযিল করেছি, যার মাঝে অনেক শক্তি রয়েছে এবং যা মানবজাতির অনেক ব্যবহারে আসবে।” (সূরা হাদীদ:২৫) বিজ্ঞান আমাদের জানাচ্ছে, আমাদের সৌরজগতের কোন গঠন প্রনালী নেই যা লোহার উৎপত্তি ঘটাতে পারে। লোহা কেবলমাত্র সূর্যের চেয়ে বড় কোন নক্ষত্রেই তৈরী হতে পারে যেখানে তাপমাত্রা কোটি ডিগ্রির কাছাকাছি। এ রকম কোন গলিত নক্ষত্রের বিস্ফোরনের মাধ্যমেই লোহার উৎপত্তি সম্ভব। আর এই ধরনের বিস্ফোরনের মাধ্যমে সৃষ্ট লোহার টুকরাগুলো পরবর্তিতে পৃথিবীতে পরার ফলেই লোহা অস্তিত্বলাভ করেছে।অর্থাৎ লোহা যে আকাশ থেকে এসেছে এটা বিজ্ঞান মেনে নিয়েছে।আরেকটি বিষয় লক্ষনীয়, সুরা হাদিদ (হাদীদ অর্থ লোহা) কোরআনের ৫৭ নং সূরা। আজব ব্যাপারটা হলো ‘আলহাদিদ’ এর সংখ্যাগত অর্থও ৫৭, অর্থাৎ আরবীতে এই শব্দের মান হল ৫৭। শুধু ‘হাদিদ’ এর সংখ্যাগত অর্থ হল ২৬, যা লোহার এটমিক নাম্বার (২৬) এর সাথে মিলে যাচ্ছে। আর সূরাটির ১ থেকে ২৫ নং আয়াত (২৫ নং আয়াতে লোহার গুন সম্বন্ধে বলা হয়েছে) পর্যন্ত হাদিদ শব্দটি এসেছে ২৬ বার। (হা=৮, দাল=৪, ইয়া=১০, দাল=৪)।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৩
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×