somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মুজিব রহমান
সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

তসলিমার শত্রু কি তাঁর সাহস না সত্য বলা?

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমরা তসলিমাকে গালি দিতে পারি কিন্তু তাঁর সমান হতে পারি না। তসলিমার সমান উচ্চতায় বাংলাদেশের কোন সাহিত্যিকই যেতে পারেননি। আমরা আরেকজন বাংলাদেশিকি গালি দেই তিনি হলেন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ডক্টর ইউনুছ। কিন্তু তিনি বিশ্বের যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ পুরুস্কার পেয়েছে যত জায়গায় যেতে পেরেছেন আমরা আর কেউ পারিনি। তারা আমাদের চেয়ে বড় ও ভিন্ন চিন্তা করতে পেরেছিলেন বলেই তা অত উপরে যেতে পেরেছেন।

তসলিমার প্রধান অপরাধ হয়তো তাঁর আত্মজীবনকে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করা। আমাদের মহামানবরা তাদের জীবনকে গোপন রেখে এক কাল্পনিক জীবনকে তুলে দেয় পাঠকদের সামনে। তসলিমার সত্যটা গ্রহণ করার সামর্থ্য আমাদের নেই। অনেকে বলেন- বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর কেউ কাঁদেনি! এটা দিয়ে বাঙালি নিজেকেই উন্মুক্ত করে। তারা এমনই যে, যে ব্যক্তি তাদের স্বাধীনতা এনে দিল তাঁর মৃত্যুতেও তাঁরা কাঁদেনি তা গর্বভরে প্রচার করতে পারে। আমি নিজেও যে কথাগুলো প্রতিনিয়ত ভাবি তা প্রকাশ করতে পারি না ভয়ের কারণেই। আমার মনে হয়, কথাগুলো বললে, আমার বিরুদ্ধে কিছু নষ্ট মানুষ মামলা করে হয়রাণি করবে। রাষ্ট্র আমার বিরুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়বে। হাজারটা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাকে মেরে ফেলবে কারণ দেশ ছাড়তে পারার মতো গুরুত্বপূর্ণ কেউ আমি নই। তাই আমিও মনের কথাগুলো প্রকাশ করি না। তসলিমার সাহস দেখে বিস্মিত হতে হয়। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর পক্ষে বলা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে বলা আরো ঝুঁকির। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বলা ভয়ঙ্কর আর ধর্মের বিষয়ে কথা বলা আরো ভয়ঙ্কর। তসলিমা সেই কাজগুলোই করেছেন। না হলে, তাঁর উপন্যাস, প্রবন্ধ নিয়ে এতো ঝামেলা হতো না।

আনন্দ সাহিত্য পুরস্কার আর কে দুবার পেয়েছে? ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট কর্তৃক শাখারভ পুরস্কার? ফ্রান্স, সুইডেন, নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তিনি পুরস্কার পেয়েছেন। তাকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে ভারতে যা আবার ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে। এতোসব অর্জন করার পরেও তিনি দেশে থাকতে পারেন না! আমাদের সমাজ সত্য বলাকে সহ্য করে না। তারা সবসময় মিথ্যা বলতে পছন্দ করে। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা অহরহ মিথ্যা বলাকে রাজনৈতিক বক্তব্য দাবি করেন। আমাদের সমাজ সত্যকে গোপন করতে পছন্দ করে। একটি শিশু বলাৎকারের শিকার হলে সবাই বিষয়টি চেপে যেতে বাধ্য করে। দুর্নীতির কথা প্রকাশ করলে উল্টো অভিযোগ দাতাকেই বিপদে পড়তে হয়। সত্য বলা আর বিভিন্ন অনাচার প্রকাশ্যে আনা এদেশে অপরাধই। হয়তো তসলিমাকে দেশ ছাড়তে দেখেই আমাদের লেখক-বুদ্ধিজীবিগণ সত্য বলা আর গোপন প্রকাশের বিষয়টি ছেড়েই দিয়েছেন। যখন অনুগত থাকতে পারলেই সুবিধা মিলে, প্রশংসা ও পুরস্কার মিলে তখন কে আর সত্য বলে তসলিমার পরিণতি বরণ করতে চায়। তাইতো শ্রদ্ধা জানাতে হয় সেই তসলিমাকেই। এমন দিন অবশ্যই আসবে যখন অসংখ্য মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবে। তাঁকে শ্রদ্ধার সাথেই দেশে ফিরিয়ে আনবে কোন সরকার। তাঁর সমাধী ক্ষেত্র হবে দর্শনীয় স্থান। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে ভীর করবে মানুষ তাঁর সমাধী ক্ষেত্রে। তাতে তাঁকে ঠিক শ্রদ্ধা জানানো হয় না। নিজের দেশে থাকতে পারলে আজ তিনি আরো জোরালোভাবেই সমাজের প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরতে পারতেন। তাঁর উপন্যাস, প্রবন্ধ হতো আরো শাণিত। জীবিত থাকতেইতো তিনি সম্মানটা পেতে চাইবেন। সেটাই যৌক্তিক। 
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৩
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×