somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নিশীর পথিক
দেশ স্বাধীন হয়েছে,কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীন হইনি! শুধুমাত্র এক শকুন হতে অন্য শকুনের হাতে পড়েছে জীবন্ত লাশের অধিকার! স্বপ্ন দেখি এই শকুনদের হাত থেকে একদিন আমরাও স্বাধীন হব সেদিন হবে আমাদের বিজয়ের পূর্ণতা................

ছোট গল্পঃ শিমুলের ছাত্র রাজনীতি/ পর্ব-১

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দু চোখে আজ মায়ের মুখটা খুব বেশি ভেসে উঠছে।মাকে কাছে পেলে খুব ভাল লাগত।মরে গেলেও শান্তি পেতাম।কেন জানি আজ মৃত্যুর কথা মনে পড়ছে।এর আগেও মারামারি করে অনেকবার হাসপাতালে আসতে হয়েছে শিমুলকে।কয়েকদিন পরেই সুস্থ হয়ে গিয়েছে।কিন্তু আজ অন্য রকম লাগছে।মনে হচ্ছে কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছি,কোন অজানায়…
শিমুল খুব মেধাবী ছাত্র ছিল।সেই সুবাদেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার চান্স পায়।গ্রাম থেকে এসে ক্লাস করাও অনেক কষ্টকর।কোন ব্যাচেলর মেসে সিট নিলেও অনেক টাকা খরচা লাগবে।বাবা অনেক কষ্ট করে তার লেখাপড়ার খরচ চালায়।ইচ্ছে থাকলেও মেসে থেকে লেখাপড়া করা সম্ভব নয়।
গরীবের এই এক সমস্যা।সাধ থাকে কিন্তু সাধ্য থাকেনা।জীবনের চাওয়াগুলো অপূর্নই থেকে যায়।মাঝে মাঝে মনে হয় বিধাতা ঐ ধনীদের জন্যে স্বপ্ন সৃষ্টি করেছে,গরীবদের স্বপ্ন দেখতে নেই।গরীবের স্বপ্ন দেখার কোন অধিকার নেই।
শিমুল শুনেছে নাহিদ ভাইয়ের কাছে গেলে হোস্টেলে একটা সিট ব্যবস্থা করে দিবে।নাহিদ ভাই অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তি।ছাত্র রাজনীতিতে খুবই সক্রিয়।তাও আবার বর্তমান ক্ষমতাশীল দলের।কি যেন একটা বড় পদে আছেন।তাই সবাই তাকে নাহিদ ভাই বলেই ডাকে।ভালবেসে ডাকে নাকি ভয়ে ডাকে তা জানেনা।
নাহিদ ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়ে ভাল একটা সিট পেয়ে যায় শিমুল।এত সহজে সিট পেয়ে যাবে তা সে কল্পনাও করেনি।আজ নাহিদ ভাইকে খুব ভাল লেগেছে তার।চেহারায় যেন একটা মায়াবী লক্ষন দেখা যায়।ভাল মানুষ নাহলে কি সিট দিত?শর্ত শুধু একটাই তার কথামত চলতে হবে।শিমুল ভাবে তাতে মন্দ কি?নাহয় একটু ফরমায়েশ শোনব এইতো?
কিছুদিন পরেই হঠাৎ শিমুলের ডাক আসে।নাহিদ ভাই খবর দিয়েছে,কোন বড় এক নেতা যেন আসবে।তাই মিছিলে যেতে হবে।না গেলে আবার সিট হারাতে হবে।
শিমুলকে যেতেই হবে।যে করেই হোক সিটটা বাচাতেই হবে।নয়ত লেখাপড়া করা যাবেনা।মা বাবার স্বপ্নও পূরন হবেনা।
মিছিলে গিয়ে শিমুল সবার পিছনে থাকে।তার মুখে কোন শ্লোগান শোনা যায় না।যে কেউ ভাববে সে মিছিলের কেউ নয়,শুধুমাত্র পথচারী।
মিছিল শেষে ক্যাম্পাসেই মিটিং চলছে।শিমুল দাড়িয়ে শুনছে।মাঝে মাঝে একটু বিরক্তও লাগছে।ছাত্রদের কল্যানের স্বার্থে নেতারা বড় বড় ভাষন দিচ্ছে।কিন্তু শিমুল কোন কল্যান দেখেছে বলে মনে হয়না।মনে করতে খুব চেষ্টা করছে।
হঠাৎ মাইকে শিমুলের ডাক আসে।তার নাম শোনে সে চমকে উঠে।তাকে মঞে যেতে হবে।বুক ধড়ফড় কছে।একটু ভয় ভয় লাগছে।জীবনে কোনদিন রাজনৈতিক মঞে উঠেনি সে।আজ কি হবে,কি বলবে ভাবতেই অজানা শিহরন জাগে।কাপতে কাপতে মঞে উঠে শিমুল।
নাহিদ ভাই শিমুলের হাত ধরে উচিয়ে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দেয়।আমাদের দলে যোগ দিয়েছে।সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে।শ্রোতার জোড়ে করতালি মারছে
সবসময় নাহিদ ভাইয়ের ডাকে সাড়া দিতে হয়।মাঝে বিরোধী দলের ছাত্র সংঘের সাথে কয়েকবার সংঘর্ষও হয়েছে।কিন্তু শিমুল কাউকে আঘাত করেনি।শুধু দলের পিছনে থেকেছে।তবু হত্যা মামলার আসামী হয়ে যায়।ক্ষমতাসীন দল বলে জামিন পেয়ে যায়।
এসব খুব খারাপ লাগত শিমুলের।সে নাহিদ ভাইকে বলেছেও যে,আমি এইসব রাজনীতি করতে চাই না।সং ঘর্ষেও জড়াতে চাইনা।
কিন্তু নাহিদ ভাইয়ের একটাই কথা,তাহলে সিট ছেড়ে দে,আর তোর নামে যে হত্যা মামলা হয়েছে তা সামাল দিতে পারবি তো?
কিন্তু তাকে যে লেখাপড়া করতেই হবে।কেস কিভাবে মিমাংসা করবে?মামলার কারনে জীবনটাও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।তার পিছু ফিরার আর সময় নেই।সামনে এগিয়ে যেতে হবে।এভাবেই ধীরে ধীরে নাহিদ ভাইয়ের হাত ধরে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×