somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নিশীর পথিক
দেশ স্বাধীন হয়েছে,কিন্তু দেশের মানুষ স্বাধীন হইনি! শুধুমাত্র এক শকুন হতে অন্য শকুনের হাতে পড়েছে জীবন্ত লাশের অধিকার! স্বপ্ন দেখি এই শকুনদের হাত থেকে একদিন আমরাও স্বাধীন হব সেদিন হবে আমাদের বিজয়ের পূর্ণতা................

ছোট গল্পঃ শিমুলের ছাত্র রাজনীতি/ পর্ব-২

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিমুল এখন রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।বড় বড় নেতাদের সাথে যোগাযোগ চলে।শিমুলকে ছাড়া এখন তার দল অচল বলা যায়।মিছিল মিটিং সকল ক্ষেত্রে সে সক্রিয়।সবাই একনামে চিনে,শিমুল।দলীয়ভাবে তাকে হল সেক্রেটারী পদ দেয়া হয়েছে।হোস্টেলেও বড় এক রুমে মাত্র ২ জন থাকে।যা ইচ্ছা তাই করতে পারে।মাঝে মাঝে কিছু টাকাও পাওয়া যায়।
প্রতিপক্ষের সাথে মারামারিতেও উস্তাদ।প্রায়ই সংঘর্ষের নেতৃত্ব দেয় শিমুল।এইতো সেদিনও বিরোধী ছাত্র সংঘের এক নেতাকে হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দিয়েছে।নির্বাচনের জন্যেও অনেক সময় দিতে হয়েছে,ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।
এবার বিরোধী দলের জয় লাভের পর কাল থেকেই ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ চলছে।সন্ধ্যার পর পুলিশ নিয়ন্ত্রনে নিয়েছিল।কিন্তু সকাল থেকে আবার শুরু হয়েছে।
সারারাত প্লান করেছিল কে কোথায় কোন অবস্থানে থেকে সংঘর্ষ চালাতে হবে।শিমুলও সেই প্লান অনুযায়ী অবস্থান নিয়েছে।
মাঝে মাঝে ককটেল আর গুলির বিকট শব্দ ভেসে আসছে।শিমুলও সুযোগ বোঝে আক্রমন করছে।
হঠাৎ পশ্চিম দিক হতে রনির শব্দ ভেসে আসল,নাহিদ ভাইয়ের অবস্থা আশংকাজনক।বুকে গুলি লেগেছে।প্রচুর রক্তক্ষরন হচ্ছে।রক্তের ব্যবস্থা করতে হবে।
যেভাবেই হোক নাহিদ ভাইয়ের কাছে যেতে হবে।নয়ত বাচানো যাবেনা।গেটের দিকে তাকিয়ে দেখে বিরোধীদল শক্ত অবস্থানে আছে।মনে হয় কাউকে খোজছে।শিমুল জানে এবার তার পালা।তাকেই হয়ত খোজছে।সারা শরীর ঘেমে গেছে।হার্টবিট বেড়ে গেছে।আতংকে খুব ভয়ও লাগছে।যে করেই হোক বাহিরে যেতেই হবে।গেট দিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।পিছনের দেয়াল টপকিয়েই যেতে হবে।রিভলবারটা আবার চেক করে নিয়ে পিছনে হটতে থাকে…
আচমকা একটি বিকট শব্দ শুনতে পায়।সাথে সাথে মাথায় হাত দিয়ে লুটিয়ে পড়ে সে।রিভলবারটা ছিটকে পরে দেয়ালের কাছে।
কে বা কারা হাসপাতালে এনেছে জানেনা সে।ঙান ফেরার পর বুঝতে পারে মাথার ডান পাশে গুলি লেগেছে।ডাক্তার ব্যান্ডেজ করেছে।কিন্তু এখনো রক্ত ঝড়ছে।বিছানা রক্তে লাল হয়ে আছে।
আজ মায়ের কথাটা খুব বেশি মনে পড়ছে।মা বলেছিল,''আমাগো রাজনীতির দরকার নাই বাপ।নেতারা আমাগো ভাত দিত না।ভালা কইরা লেহাপড়া কর।তুই তো জানস তোর বাপ কত কষ্ট কইরা টেহা দিয়া তরে পড়ায়।হেই টেহাগুলান কামে লাগা বাপ''
মায়ের কথা না শুনে সত্যি ভুল হয়েছে।কি দরকার ছিল এই রাজনীতির।
মায়ের মুখটা ঝাপসা ভেসে উঠছে।খুব মলিন লাগছে মাকে আজ।
মাথাটা ঝিমঝিম করছে।ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।শিমুল ভেবে পায়না এখন সে কি করবে।আশে পাশেও কাউকে দেখছেনা।তৃষ্নাও পেয়েছে খুব।দু চোখ শুধু পানি খুজছে।কিন্তু কিছুই দেখা যাচ্ছে না,শুধু অন্ধকার মনে হচ্ছে।চারিদিকে ঘোর অন্ধকার।পৃথিবীর আলো হয়ত নিভে গেছে।
ট্রেতে হাত বাড়ায় শিমুল।শক্তি সামর্থহীন হাতটা ট্রের উপরে ঘুরতে থাকে এক ফোটা পানির খোজে।মাঝে মাঝে কি যেন বলছে খুব অস্পষ্ট সুরে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না…
আকষ্মিক একটা শব্দ হল।গ্লাসটা ভেঙ্গে শত টুকরো হয়েছে।পানি গড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে।
নিথর হাতটা পড়ে আছে টুকরো হয়ে যাওয়া কাচের উপড়।যে চোখে কিছুক্ষন আগেও পৃথিবীটা অন্ধকার দেখেছিল,সে চোখ দুটো এখন হয়ে গেছে উজ্জ্বল পৃথিবীর বর্জ্য।
নেতাবনে যাওয়া দেহটা পড়ে আছে রক্তে লাল হয়ে যাওয়া বিছানার উপড়,নিঃশ্বব্দভাবে....
বাহিরে মিছিলের শব্দ শোনা যাচ্ছে।হয়ত হাজার শিমুল যোগ দিয়েছে সেই মিছিলের মাঝে।হয়ত একটু পরেই শোনা যাবে,একটি স্বপ্নকে পূরন করতে,আরেকটি স্বপ্ন ভঙ্গের শব্দ...
একটি জীবনকে পূর্নতা দান করতে,আরেকটি জীবন ত্যাগের দীর্ঘশ্বাস....
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×