ওইদিন এক ভাইকে দেখলাম ব্লগ লিখেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে নিয়ে।আবার উনি শেষে বলেছেন কেউ যদি বলে যে,''ভুল কি বলেছেন''তবে লাথি দিয়ে ব্লক করা হবে।বুঝতে পারলাম ওখানে ব্লগার ভাই একাই সত্যে অবগাহন করে আছে আর উনার কাছে এটাই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা!বাকি সবাই ভুল!
তবে যারা রাজনীতি করে তারা লাথি খাইতেও জানে আবার দিতেও জানে।কিন্তু আমি রাজনীতি করিনা।তাই কারো লাথি খাইতেও ইচ্ছা নেই,কাউকে লাথি দিতেও ইচ্ছে নেই।তাই ওখানে মন্তব্য করিনি।
তবে কেন জানি মাঝে মাঝে অপ্রিয় সত্য বলতে ইচ্ছে হয়।তাই আজকের এই ব্লগটা লেখতে হল।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী যুদ্ধ করে যেমন বীর প্রতীক খেতাব পেয়েছেন,তেমনি বর্তমান কর্মকান্ডে উনি প্রশ্নবিদ্ধ।জামায়াতের দিগন্ত টেলিভিশনে টক শোতে উনি অংশগ্রহন করেছেন।জামায়াতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।শহীদ বুদ্দীজীবিদের নিয়েও মন্তব্য করেছেন।আর অনেক আগেই শাহবাগ থেকে উনাকে রাজাকার উপাধি দেয়া হল!
অনেকে মনে করেন উনি ক্ষমতার লোভে এগুলো করতেছেন।কেউ কেউ মনে করেন টাকার লোভে।হতে পারে তার কোন একটি,বা দুটোই অথবা কোনটাই না।
কিন্তু কথা হল কাদের সিদ্দিকী যদি জামায়াতের পক্ষে কথা বলার কারনে রাজাকার হতে হয়,তবে একই কারনে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতটুকু স্বাধীনতার পক্ষে?
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধ হয়েছিল ক্ষমতার লোভে।
আবার প্রধানমন্ত্রীর মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়েছে নুরু রাজাকারের পরিবারে।তাহলে কাদের সিদ্দিকীর মত একই দোষে কি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দোষী নন?
আবার ওই ভাই হুমায়ুন আযাদের একটা বাক্য দিয়েছেন যে,''মুক্তিযোদ্ধা চিরদিন মুক্তিযুদ্ধা নাও থাকতে পারে,কিন্তু রাজাকার চিরদিনই রাজাকার''
ঠিক একই ক্ষেত্রে,নুরু রাজাকার কি চিরদিন রাজাকার নয়?নাকি বিশেষ কোন দলের ছোয়ায় মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যায়?
কথিত স্বাধীনতার পক্ষের দল ক্ষমতায় থাকতে,একজন রাজাকারের ছেলে কিভাবে মন্ত্রী হয়?
এমন অনেক মন্ত্রী এমপি আছেন যারা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানের হয়ে কাজ করেছিল,তাদের অনুমতি নিয়েই রাজাকার,আল বদর,আল শামস বাহিনী গঠন করা হয়েছিল।তাদের নির্দেশেই মুক্তিযোদ্ধাদের উপর গুলি চালিয়েছিল,অথচ আজ তাদের মন্ত্রী বানানো হয়েছে।এক্ষেত্রে আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে কতটুকু গন্য?
এভাবে প্রতিটা ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল রাজাকারের আশ্রয়দাতা।প্রত্যেকেই এক্ষেত্রে সমভাবে দোষী।তাহলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী একাই কেন দোষি হবেন?কেন শুধু উনাকে নব্য রাজাকার বলা হয়?
তবে একটা জিনিস খুব বুঝতে পেরেছি যে,যারাই আওয়ামীলীগের সমালোচনা করবে,তারাই রাজাকার।আর যারা তাদের সবকিছু মেনে নিবে তারাই মুক্তিযুদ্ধা!
হয়ত এই লেখার কারনে আমাকেও রাজাকার বলতে পারে,যদিও আমি জন্মের পর থেকেই রাজাকারকে ঘৃনা করি।
তবে সবশেষে একটি অপ্রিয় সত্য কথা বলে যাই,শুধু জামায়াতে ইসলাম মানেই যেমন ইসলাম নয়,বিএনপি মানেই গনতন্ত্র নয়,তেমনি আওয়ামীলীগ মানেই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি নয়।
খাটি বাংলায় বলতে গেলে,সবাই ক্ষমতার লোভে ভেক ধরে আছে।
আমরা সাধারন জনগন পড়ে আছি মাইন্কার চিপায়।এখান থেকে উদ্ধার হতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে।দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে।
আমার এখানে যে কেউ ভদ্র ও যুক্তিমুলক মন্তব্য করতে পারেন।আমার ভুল হয়ে থাকলে সংশোধন করে নিব।